ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

তবুও ফাইনাল খেলার আশায় জিমি

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২৯ জানুয়ারি ২০১৬

তবুও ফাইনাল খেলার আশায় জিমি

রুমেল খান ॥ বুধবার অনুশীলন করতে গিয়ে বা পায়ে হকি স্টিকের আঘাত লাগে রাসেল মাহমুদ জিমির। এখন বরফ-চিকিৎসা চলছে। ব্যথা গুরুতর নয়। তবে কোচ মাহবুব হারুনের পরামর্শে কোন ঝুঁকি নেননি দেশীয় হকির অন্যতম সেরা এই ফরোয়ার্ড। বৃহস্পতিবার মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে গিয়ে হাজির হলেও অনুশীলন করেননি জিমি। খেলোয়াড়-ছাউনিতে বসে চুপচাপ সতীর্থদের অনুশীলন দেখলেন। এর ফাঁকেই কথা হয় তার সঙ্গে। ‘হাল্কা ব্যথা পেলেও সেটা মারাত্মক কিছু নয়। ফিজিক্যাল কন্ডিশন ভাল। আশা করি শুক্রবার সকালেই আবার অনুশীলনে ফিরতে পারব। আজ প্র্যাকটিস করতে না পারলেও জিম করেছি।’ আসন্ন এসএ গেমস হকিতে অংশ নিতে বাংলাদেশ জাতীয় হকি দল ভারতের উদ্দেশে রওনা হবে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি। ওখানে যাওয়ার পর বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচই স্বাগতিক ভারতের বিরুদ্ধে, ৭ ফেব্রুয়ারি। যাওয়ার পর দুই দিন সময় থাকবে, এর মধ্যে কি কোন প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ? এ প্রসঙ্গে জিমি বলেন, ‘যতদূর জানি, ওখানে যাওয়ার পর দুই বেলা করে প্র্যাকটিস করব। সেক্ষেত্রে ওখানকার স্থানীয় কোন দলকে পাওয়া গেলে বা তারা খেলতে রাজি হলে কোন প্রস্তুতি ম্যাচ হয়ত খেলতেও পারি।’ প্রায় দুই মাসের মতো হয়ে গেল, অথচ বিস্ময়কর ব্যাপার হলো এই সময়ে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন জাতীয় দলের জন্য কোন প্রস্তুতি ম্যাচ খেলানোর ব্যবস্থা করেনি! তাহলে এসএ গেমসে খেলার আগে এই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার ঘাটতি কি নেতিবাচক বিষয় হয়ে গেল না? ‘তা তো অবশ্যই। ভারতে যাওয়ার আগে কিছু প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলতে পারলে নিশ্চয়ই আমাদের কোথায় সমস্যা বা কোথায় ভুল, সেটা চিহ্নিত করে সেটা শুধরে নিতে পারতাম। সেটা হয়নি। প্র্যাকটিস করার সময় আমরা যে কৌশল অবলম্বন করি, এখন সেটা যদি এসএ গেমসে খেলতে গিয়ে কাজে না লাগে, তাহলে অবশ্যই সমস্যা হবে।’ জিমি আরও যোগ করেন, তারা এর আগে শুনেছিলেন, তাদের কলকাতায় যেতে হবে জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে। সেখানে গিয়ে তারা একাধিক প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলবেন। সেটা আর বাস্তবায়িত হয়নি। আগে থেকে যদি ফেডারেশন এ বিষয়ে সুষ্ঠুভাবে কোন পরিকল্পনা করত, তাহলে নিশ্চয়ই সেটা বাস্তবায়িত হতো। ২০১০ এসএ গেমসের হকি দলেও ছিলেন জিমি, ‘সেবার আমরা এসএ গেমস খেলার আগে জার্মানি, হল্যান্ড, রাশিয়া গিয়ে ম্যাচ খেলেছি। প্রস্তুতি ম্যাচ একাধিক খেলায় আমরা ছিলাম ভাল ফর্মে। ফলও হয়েছিল আশানুরূপ। আমরা শক্তিশালী ভারতের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করেছিলাম। আর দলীয়ভাবে পেয়েছিলাম ব্রোঞ্জপদক।’ এবারের আসরে কি আগের সাফল্য ধরে রাখা সম্ভব? ‘অবশ্যই সম্ভব। আমাদের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার ঘাটতি, ফিজিও সঙ্কট, ভিডিও এ্যানালিস্টের অভাব ... তার পরও বলব, মাঠে নেমে যদি আমরা যে যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারি এবং পরিকল্পনা মোতাবেক খেলতে পারি, তাহলে হয়ত আমরা ফাইনালও খেলতে পারি। ফাইনালে খেলতে পারলেও ব্রোঞ্জ তো আমরা জিততেই পারি।’ জিমির আত্মবিশ্বাসী উচ্চারণ। ভারত-পাকিস্তান ছাড়া শ্রীলঙ্কাকেই নিজেদের সমমনা দল হিসেবে মনে করেন জিমি, ‘শ্রীলঙ্কাকে অবশ্যই হারানো উচিত আমাদের।’ এবারের এসএ গেমসের হকিতে মোট চারটি দল খেলবে : বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা। খেলা হবে লীগ পদ্ধতিতে। পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দুই দল ফাইনালে খেলবে। আর অপর দুই দল মুখোমুুখি হবে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে। ২০১০ আসরে বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন জার্মানির পিটার গেরহার্ড। এবার স্বদেশী কোচ মাহবুব হারুন। কোচ হিসেবে হারুন কেমন? ‘অবশ্যই হারুন ভাই অনেক ভাল কোচ। আমাদের অনেক কিছু শেখাচ্ছেন। তিনি আমাদের সব খেলোয়াড়কেই অনেক বছর ধরে চেনেন-জানেন। আমাদের কার, কোথায় কি সমস্যা, কি শক্তিমত্তা, কার কাছ থেকে খেলা কিভাবে আদায় করতে হবে ... তিনি সব অবগত। সেভাবেই তিনি অনুশীলন করাচ্ছেন, পরিকল্পনা করছেন। তাঁর গেম প্ল্যানিং অনেক ভাল। এখন সেটাকে আমাদের সফলভাবে রূপ দিতে হবে।’ বাংলাদেশ দল অনেকদিন ধরে অনুশীলন শুরু করলেও ভারত-পাকিস্তানের অনুশীলন শুরু হয়েছে এক সপ্তাহও হয়নি। এ প্রসঙ্গে জিমিরি ব্যাখ্যা, ‘এতে করে তাদের কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কেননা, তারা লীগ খেলেছে। ফলে তারা খেলার মধ্যেই ছিল। এখানেই আমরা তাদের চেয়ে পিছিয়ে। আমরা তো লীগ খেলিনি।’ আসন্ন সাউথ এশিয়ান গেমসের (এসএ গেমস) দ্বাদশ আসরে অংশ নেয়া উপলক্ষে গত ২ জানুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের নাম ঘোষণা করেন দলের কোচ মাহবুব হারুন। দলে আছেন ১৮ খেলোয়াড় এবং ৪ স্ট্যান্ডবাই খেলোয়াড়। বাংলাদেশ হকি দলের দীর্ঘদিনের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার, সাবেক অধিনায়ক ও ‘পেনাল্টি কর্নার’ স্পেশালিস্ট মামুনুর রহমান চয়নের ঠাঁই হয়নি জাতীয় দলে। এ ছাড়া নতুন অধিনায়ক হিসেবে নির্বাচন করা হয় মিডফিল্ডার সারোয়ার হোসেনকে। দলে নতুন মুখ ফজলে হোসেন রাব্বি।
×