ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাকিবদের কাছে ফিরতি ম্যাচেও ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে তামিমের দল

রংপুরের কাছেও ভরাডুবি চিটাগাংয়ের

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ২ ডিসেম্বর ২০১৫

রংপুরের কাছেও ভরাডুবি চিটাগাংয়ের

মিথুন আশরাফ, চট্টগ্রাম থেকে ॥ তামিম, তাসকিন, শফিউলদের ছবি সম্বলিত চিটাগাং ভাইকিংসের একটি ব্যানার প্রায় স্থানেই দেখা যায়। সেখানে বড় করে লেখা ‘আইয়েররর’। মানে আসিতেছি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের (বিপিএল টি২০) তৃতীয় আসরে যে অবস্থা হয়েছে চিটাগাংয়ের, তাতে এখন তারা যেন বলতে শুরু করেছেন ‘যাইয়েররর’। মানে যাইতেছি। মঙ্গলবারও দলটি সাকিব আল হাসানের রংপুর রাইডার্সের কাছে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে। প্রথম লেগের ম্যাচেও রংপুরের কাছে ২ উইকেটে হেরেছিল চিটাগাং। ৬ ম্যাচে মাত্র ১ জয় পেয়েছে চিটাগাং। টানা চার ম্যাচে হেরেছে। ঢাকায় যে অবস্থা ছিল দলটির, চট্টগ্রামে ঘরের মাটিতেও সেই দুরবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। এখন এমনই অবস্থা হয়েছে টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে হাতে থাকা ৪ ম্যাচেই জিততে হবে চিটাগাংকে। রংপুর রাইডার্স সেই তুলনায় ৬ ম্যাচে ৪ জয় তুলে নিয়ে ওপরের অবস্থানেই আছে। ম্যাচে টস জিতে চিটাগাং আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেনি। ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১১১ রানের বেশি করতে পারেনি। তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে সর্বোচ্চ রান আসে। ৩৬ রান করেন তামিম। বল হাতে রংপুরের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ২টি ও আরাফাত সানি ২টি উইকেট শিকার করেন। জবাবে ১৮ বল বাকি থাকতে ১ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান করে রংপুর। সেই সঙ্গে জয়ও মিলে। সৌম্য সরকার ব্যাট হাতে অনেকদিন পর নৈপুণ্য দেখান। তার ব্যাট থেকে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৫৮ রান আসে। দল ও ক্রিকেটারদের ব্যর্থতায় আগেরদিনই অনেক আক্ষেপ করেন চিটাগাং ভাইকিংসের অধিনায়ক তামিম। বলেন, ‘আমি তো আর হাতে ধরে বুঝিয়ে দিতে পারব না! এই লেবেলে সবাইকে বুঝতে হবে যে কি করা উচিত। আমার দলে এই ব্যাপারটিই মূল ঘাটতি। সবার বোঝা উচিত তাদের কি কি করা দরকার। কারণ আমি অধিনায়ক হতে পারি। কিন্তু সবসময় বলতে পারি না কোথায় বল করতে হবে বা কি করতে হবে। আমি ব্যাট করার সময় তো কারও দিকে তাকিয়ে থাকি না শোনার জন্য।’ বিদেশী ক্রিকেটারদের ব্যর্থতাতে যেন ক্ষেপেছিলেন তামিম। তাইতো কামরান ও তিলকারতেœ দিলশানের ব্যর্থতাকে তুলে ধরেছিলেন এভাবে, ‘কামরান যেভাবে আউট হল, আমি শুধু বলতে পারি যে এটা ছিল স্কুল বয় এরর। সবাই পেশাদার ক্রিকেটার। জানে কি করতে হবে। কামরান আকমলের আউট যেমন, সেটার কোন জবাব নেই আমার কাছে। দিলশান যে মানের ব্যাটসম্যান ও ব্যাটিং করে গেলে আমরা ভাল অবস্থায় থাকতাম। এই দায়িত্বের জায়গাটা বুঝতে হবে। ওদের ওপর আমাদের নির্ভরতা অনেক বেশি। এই ব্যাপারটা ওদের বুঝতে হবে। ফ্র্যাঞ্চাইজি তো ক্রিকেটার কেনে, পারফর্মেন্স কিনতে পারে না।’রংপুরের বিপক্ষেও একই ঘটনাই ঘটেছে। দিলশান টানা ব্যর্থ হয়েই চলেছেন। মঙ্গলবারও মাত্র ১৮ রান করতে পারলেন। চিটাগাংয়ের হয়ে ৬ ম্যাচ খেলে ফেললেন, অথচ একটি অর্ধশতকও নেই দিলশানের! কামরান দুটি ম্যাচ খেললেন। প্রথমটিতে সোমবার রানের খাতা খোলার আগেই অলসভাবে রান নিতে গিয়ে রান আউট হলেন। রংপুরের বিপক্ষে করলেন মাত্র ১২ রান। যে উমর আকমলকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার দিয়ে উড়িয়ে আনা হল। তিনিও ১ রানের বেশি করতে পারলেন না। এমন অবস্থায় তামিমের কষ্ট লাগাটা স্বাভাবিক। শুধু বিদেশীরা নয়, দেশী ক্রিকেটাররাও ব্যর্থ হয়েই চলেছেন। এনামুল হক বিজয় ৬ ম্যাচে কোন অর্ধশতক করতে পারেননি। রংপুরের বিপক্ষেও ব্যর্থ হয়েছেন। ১৪ রান করেছেন। জিয়াউর রহমান কিংবা নাঈম ইসলাম সবার অবস্থা একই। এরমধ্যে চিটাগাংয়ের একমাত্র ব্যাটসম্যান তামিম। যিনি টানা দুই ম্যাচে অর্ধশতক করেছেন। ইয়াসির আলীর ব্যাট থেকেও একটি অর্ধশতক আসে। এমন অবস্থায় চিটাগাংও টানা হেরেই চলেছে। মঙ্গলবার রংপুরের বিপক্ষে শুরুটা দুর্দান্ত হলেও যেই ৩৯ রানে একটি উইকেট পড়ে যায় এরপর নিয়মিত উইকেট পড়তে থাকে। ইনিংসের শেষ বলে গিয়ে ১১১ রানে ৮ উইকেটের পতন ঘটে। এত অল্প রান করে কি আর খুব বেশি ভাল না খেললে জেতা সম্ভব? জিততেও পারেনি চিটাগাং। রংপুরের একটি উইকেট ফেলতেইতো চিটাগাংকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১০২ রান পর্যন্ত। এ সময়ে ৪৭ রান করা জহুরুলকে আউট করে দেন শফিউল। আর কোন উইকেটই পড়েনি। সৌম্য ও সাকিব আল হাসান (১*) মিলে ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। হেসে খেলেই জয় তুলে নেয় রংপুর।
×