ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কেশবপুরে প্রাইমারী স্কুল শিক্ষকদের চরম হয়রানি

প্রকাশিত: ০৭:১০, ৮ জুলাই ২০১৫

কেশবপুরে প্রাইমারী স্কুল শিক্ষকদের চরম হয়রানি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কেশবপুর, ৭ জুলাই ॥ কেশবপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঘুষ আদায় করছেন। আর এই দুর্নীতির দায় চাপাচ্ছেন সমিতির সুবিধাভোগী শিক্ষক নেতাদের ওপর। হয়রানির ভয়ে সাধারণ শিক্ষকরা কিছুই বলতে সাহস পাচ্ছেন না। ফলে শিক্ষকদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। অভিযোগ মতে, বর্তমান প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান গত মার্চ মাসে কেশবপুরে যোগদানের পর বিভিন্ন বিলের ক্ষেত্রে নির্ধারিত হারে কমিশন আরোপ করা হয়েছে। শিক্ষকদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে টাকা নেয়া হয়ে থাকে। না দিলে অফিসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখাসহ নানামুখী হয়রানির করার অভিযোগ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জুন মাসে স্কুল লার্নিং ইমপ্রুভমেন্ট প্লান (সিøপ) প্রকল্পের আওতায় সরকার উপজেলার এক শ’ ৫৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে ৩০ হাজার টাকা করে মোট ৪৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান প্রতি বিদ্যালয়ের কাছ থেকে ডিজিটাল উপকরণ সরবরাহের নামে ৭ হাজার টাকা করে কেটে নিয়েছেন। উপকরণ হিসেবে তিনি বিভিন্ন কবি ও মনীষীদের ছবিসহ ১২টি পোস্টার শিক্ষকদের হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন। দেশের অন্যান্য উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভ্যাট ব্যতীত স্লিপ প্রকল্পের সব টাকাই উত্তোলন করে স্কুল কমিটি ব্যয় করেছেন। তাছাড়া ১২টি পোস্টারের মূল্য মাত্র দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার বেশি হবে না বলেও শিক্ষকরা অভিযোগ করেছেন। গত ২৭ জুন এলাকার সংসদ সদস্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের উপস্থিতিতে উপজেলা পরিষদে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আব্দুল মজিদ শিক্ষা কর্মকর্তার দুর্নীতির বিষয়টি উত্থাপন করেন। আলোচনার পর সভায় উপজেলা শিক্ষা কমিটি ওই টাকা উত্তোলন ও ব্যয় সংক্রান্ত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ইউআরসিসহ বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের জন্য নাম অন্তর্ভুক্ত করতে শিক্ষকদের ৫শ’ টাকা করে দিতে হয়। সম্প্রতি ১শ’ ৫৮টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের সুস্বাস্থ্য ও সুশিক্ষা বিষয়ক টেনিং সম্পন্ন হয়েছে। শিক্ষক সমিতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ২ দিনের ট্রেনিংয়ে খাওয়া বাবদ প্রত্যেক শিক্ষককে প্রায় ৫শ’ টাকা প্রদানের বরাদ্দ থাকলেও ২ দিনে মাত্র ২শ’ টাকা করে খাওয়া খরচ দিয়ে বাকি টাকা কেটে নেয়ার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অফিস সহকারী শাহাদাত হোসেন শিক্ষকদের বিভিন্ন খাত ছাড়াও টাইম স্কেলের জন্য স্কুল প্রতি ২ হাজার ৬শ’ টাকা আদায় করে থাকেন। তার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে। তবে শাহাদাত হোসেন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে উপকরণ সংগ্রহ করা হয়েছে। উপকরণ পছন্দের ক্ষেত্রে আমার সম্মতি ছিল। টাকা আদায়ের বিষয়টি আমি জানি না। টাকার বিষয়টি শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি জানেন।
×