ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

প্রধানমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি

দালালের সঙ্গে অবৈধ পথে বিদেশগামীকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে

প্রকাশিত: ০৫:১৩, ২৫ মে ২০১৫

দালালের সঙ্গে অবৈধ পথে বিদেশগামীকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ অবৈধভাবে বিদেশ যাওয়া ঠেকাতে শুধু দালাল নয়, তাদের খপ্পরে পড়ে বিদেশে গেলেও তাদের শাস্তির আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে কেউ যেন অবৈধভাবে বিদেশ না যায় সে বিষয়ে বিশেষ নজরদারি করতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কেও নির্দেশ দেন। রবিবার সচিবালয়ে শ্রম মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে প্রধানমন্ত্রী এ নির্দেশ দেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা দেন। দালাল ও অবৈধভাবে বিদেশগামীদের উদ্দেশে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা দালাল তাদের যেমন শাস্তি পেতে হবে, তেমনি যারা অবৈধভাবে এই সব দালাদের মাধ্যমে যাবে তাদেরও একটা শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ তারা দেশের সুনামও ক্ষুণœ করছে। নিজের জীবনকেও বিপদে ফেলছে। এদের বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে এটা থামানো যাবে না। দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তারপরও মানুষ কেন এভাবে ছুটছে? এই যে সাগরে ভেসে চলে যাওয়ার চেষ্টা তাদের কোন ধারণাই নাই। কোথায় যাবে তারা, কি করবে? বন জঙ্গলে এখন লাশ পাওয়া যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবৈধভাবে বিদেশ যাওয়ার প্রবণতাকে মানসিক অসুস্থতার সঙ্গে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা বোধ হয় কিছু মানুষের মানসিক অসুস্থতা হয়ে গেছে। বাইরে যেতে হবে, বাইরে গেলেই তারা টাকা পাবে। যারা দালাল শ্রেণীর হাতে টাকা দিচ্ছে, তাদের আমি বলি ওই টাকা দিয়েই যদি তারা নিজেরাই দেশে কিছু করে, তবে অনেক ভাল থাকতে পারবে। এত সুযোগ সুবিধা করে দেয়ার পরও মানুষ দালালদের হাতে টাকা দিয়ে একটা অনিশ্চিত জায়গা যেতে চাচ্ছে। কেন যে তারা এভাবে যাচ্ছে। সবাই যে খুব একটা অভাবের তাড়নায় যাচ্ছে তা না। মনে হচ্ছে তারা আয় রোজগারের জন্য সোনার হরিণের পেছনে ছুটছে। সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কর্মসংস্থান ব্যাংক করে দিলাম। এ ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে যুবকদের ঋণ দেয়া হচ্ছে। বিদেশ যেতে যেন বাড়িঘর বিক্রি করতে না হয় সেজন্য বৈদেশিক কল্যাণ ব্যাংক করে দিলাম, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ও বিদেশগামীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, রেজিস্ট্রেশন করে দেয়া হচ্ছে যেই বিদেশে যাবে তার চাকরির নিশ্চয়তা, থাকার নিশ্চয়তা, ঠিকমত বেতন যাতে পায়, তার দিকে লক্ষ্য, তার সব সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারী পর্যায়ে বিদেশে শ্রমিক নেয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিদেশে আমরা জিটুজি বেসিসে অর্থাৎ সরকারের সঙ্গে সরকার চুক্তি করে পাঠাব। যাতে করে খুব অল্প খরচে যেতে পারবে। সেখানে চাকরির নিরাপত্তা, মজুরির নিরাপত্তা সবকিছু যেন নিশ্চিত থাকে সে ব্যবস্থা আমরা করেছি। নতুন দেশ খোঁজ করে আরও অধিক সংখ্যক শ্রমিক বৈধ পথে বিদেশ পাঠানোর কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। দালাল ও অবৈধভাবে বিদেশ যাওয়া বন্ধ করতে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে শ্রম মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নেয়ার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে প্রচার চালানো উচিত। এভাবে দালালদের টাকা দিয়ে বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজন নেই। যারা দালালদের টাকা দেবে তারা তো বিরাট ধোঁকার মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। দেশে যুবকদের প্রশিক্ষণ দেয়াসহ সরকারের কর্মসংস্থান তৈরির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশে আমরা কর্মসংস্থানের বহু সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি। সে সুযোগগুলো যথাযথভাবে যুবকদের নিতে হবে।
×