ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

তথ্যপ্রযুক্তির হাত ধরে

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

তথ্যপ্রযুক্তির হাত ধরে

যত বাধা-বিঘœই আসুক সব উপড়ে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত হচ্ছে ক্রমশ। প্রাগ্রসর সময়কে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে সমৃদ্ধ হওয়ার এই পরম ব্যবস্থাকে ধারণ করার উপযুক্ত তারুণ্যও তৈরি হচ্ছে। আর এই প্রশিক্ষিতরাই আগামীর নেতৃত্বে সমাসীন হয়ে একটি উন্নত দেশ গড়ে তুলতে পারবে। আগামী বিশ্ব তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির হাতেই বিকশিত হবে। আর এই বিকাশমান ক্ষেত্র যতটা এগিয়ে যাবে, ততটাই সমৃদ্ধ হবে অর্থনীতির জগত। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয়ে প্রযুক্তির বিকাশে মানুষের শ্রম ও কর্মকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর মধ্যেই বিরাজমান এর মাহাত্ম্য। শিক্ষাদীক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য, কৃষি, প্রশাসন, শিল্পÑ সব ক্ষেত্রেই তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি তথা আইসিটির কার্যকর ব্যবহারেই নিহিত রয়েছে সমৃদ্ধ বিশ্বের কাতারে নিজেদের অবস্থানকে দৃঢ় করে তোলা। বাংলাদেশের ১৬ কোটি জনসংখ্যার ৪০ ভাগই তরুণ। আর এই তারুণ্যকে আইসিটির জগতে নিয়োজিত করা গেলে সর্বার্থে দেশ তার অগ্রগতির সব পথ ধরেই এগিয়ে যাবে নির্বিবাদে। দেশবাসী ঘরে বসেই পাবে সরকারী-বেসরকারী সুযোগ-সুবিধা। যা ইতোমধ্যেই চালু রয়েছে সামান্য পরিসরে হলেও। অবশ্য ক্রমশ তা সম্প্রসারিত হচ্ছে সমাজ, রাষ্ট্র ও সরকারের সব ক্ষেত্রেই। বিশাল এক কর্মক্ষেত্র তৈরির মাধ্যমে যেমন বেকারত্বের ঘটবে অবসান, তেমনি বোঝা হয়ে থাকা জনসংখ্যা হয়ে উঠবে কর্মক্ষম। যারা অর্থনীতির ক্ষেত্রেও ঘটাবে নয়া বিপ্লব। তাই সরকার আইসিটি খাতকে আরও বিকশিত, সম্প্রসারিত করতে নিয়েছে নানা উদ্যোগ। অবকাঠামোগত সব সুবিধাই নিশ্চিত করতে পরিকল্পনানুয়ায়ী কাজও চলছে। লক্ষ্য, দেশের বর্ধিত জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তর করে রাষ্ট্রীয় সম্পদে পরিণত করা। জ্ঞানের বিকাশেও এ সেক্টরটি সুশিক্ষিত জনশক্তি গড়ে তোলার সহায়ক হবে। সরকার তার নীতিমালা অনুযায়ী প্রত্যন্ত এলাকাতেও ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেয়ার কাজ অব্যাহত রেখেছে। সরকারী দফতর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্রমান্বয়ে ‘ওয়াইফাই জোন’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে। আগামী দুই বছরের মধ্যে দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রায় ২০ হাজার অফিসে নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। সরকারী আরও প্রতিষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের ব্যবস্থা করে যোগাযোগ নেটওয়ার্ককে গতিশীল করে তোলা হবে। শিক্ষা খাতে বিশেষায়িত ল্যাব করার কাজ চালু রয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তার সুফল জনগণ এখনই ভোগ করছে। গ্রামে বসেই বিশ্বের যে কোন প্রান্তের সঙ্গে যেমন যোগাযোগ সহজতর হয়ে উঠছে, তেমনি মানুষের হয়রানি, দুর্ভোগ, আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। প্রান্তিক জনগণ সমাজে আর অবহেলিত নয়। দেশ ও জাতির বোঝা নয়, বরং জনসম্পদে নিজেকে পরিণত করার সুযোগ পাচ্ছে। জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরের এই পথ এক নয়া বিপ্লবের দ্বারোন্মোচন করবেই। তবে এর অর্থ এই দাঁড়ায় না যে, জনসংখ্যার হার বাড়াতে হবে, বরং জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগগুলোকে স্থবির করা যাবে না। ১৬ কোটি জনসংখ্যার ভার দেশ আজ বহন করছে। এই সংখ্যা আরও বাড়লে অর্থনীতির সমৃদ্ধি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তথ্যপ্রযুক্তি জনসচেতনতার কাজটি সুচারুরূপে সম্পন্ন করে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে যেমন ভূমিকা রাখবে, তেমনি বিদ্যমান জনগণকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করে দেশকে উন্নত দেশে পরিণত করবে- এমনটাই জনগণের চাওয়া।
×