ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২

পিরোজপুরে ১৪ বছর পর ব্যবসায়ী মুরাদের লাশ উত্তোলন, করা হবে আবারও ডিএনএ টেস্ট

নিজস্ব সংবাদদাতা, পিরোজপুর

প্রকাশিত: ০০:১২, ২৯ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০০:১২, ২৯ জুলাই ২০২৫

পিরোজপুরে ১৪ বছর পর ব্যবসায়ী মুরাদের লাশ উত্তোলন, করা হবে আবারও ডিএনএ টেস্ট

পিরোজপুরের কাউখালীতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গুম এবং গুপ্ত হত্যার শিকার ব্যবসায়ী নাজমুল হক মুরাদের সঠিক পরিচয় নির্ধারণ করতে কবর থেকে দ্বিতীয়বার লাশ উত্তোলন করে ডিএনএ সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃত্যুর ১৪ বছর পর দ্বিতীয় বার সোমবার (২৮ জুলাই) সকালে উপজেলার পার সাতুরিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে মরদেহের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।  

ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত হতে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি এর কার্যালয় থেকে অনুরোধের প্রেক্ষিতে পিরোজপুরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান গত মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এ আদেশ দেন। 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, গুম কমিশনের সদস্য মানবাধিকার কর্মী নূর খান ও কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্বজল মোল্লা। 

জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ পালনে কাউখালী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুদীপ্ত দেবনাথ, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইসতিয়াক আহমেদ, কাউখালী  থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সোলায়মান, মামলার বাদী মুরাদের ভাই মিরাজুল ইসলামের উপস্থিতিতে মরদেহের নমুনা সংগ্রহ করেন। 

জানাগেছে, আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন খান মাসুদ হত্যা মামলার আসামি কাউখালীর ব্যবসায়ী মুরাদ, রাজাপুর উপজেলার নৈকাঠী গ্রামের মিজান জোমাদ্দার ও ফোরকানকে ২০১১ সালের ১৭ই এপ্রিল ঢাকার উত্তরা থেকে র‌্যাব পরিচয়ে ধরে নিয়ে যায়। এরপরে তাদের কোন সন্ধান পায়নি তাদের পরিবার। ১০দিন পরে ওই চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল ঢাকার তুরাগ তীরে বালির নিচ থেকে বস্তাবন্দি ৩ যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। পরে তিন জনের পরিবার তাদের লাশ সনাক্ত করে প্রত্যেক এর বাড়িতে দাফন করে। 

উল্লেখ্য, কাউখালীতে আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন খান মাসুদ হত্যা মামলায় গুপ্ত হত্যায় নিহত দুইজন আসামি থাকায় মামলার বাদী নিহত দুই আসামির ডিএনএ টেষ্টের আবেদন করলে স্বরাস্ট্র মস্ত্রণালয়ের নির্দেশে ঢাকার সিএমএম আদালতের চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট একেএম এনামুল হক ২০১১ সালের জুন মাসে মুরাদ ও মিজানের ডিএনএ টেস্ট এর নির্দেশ দেয়। ২০১১ সালের ৪ জুলাই কাউখালীর পারসাতুরিয়া গ্রামে নাজমুল হক মুরাদের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে লাশের দাঁত সহ বিভিন্ন উপকরণ সংগ্রহ করে ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠানো হয়। 

পরে ডিএনএ টেস্টে কাউখালীতে দাফন দেয়া লাশ মুরাদের নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছিল তৎকালীন হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি আঃ রাজ্জাক। মামলায় মিজান ও মুরাদকে জীবিত দেখিয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দিয়ে ছিল।


কিন্ত দীর্ঘ ১৪ বছরে মুরাদের ছোট ভাই নাজমুল হক মুরাদের সঠিক সন্ধান এবং তদন্ত করে সুষ্ঠ বিচার দাবি করে গুম সংক্রান্ত কমিশন অব ইনকোয়ারি এর নিকট। পরে গত ২৮ এপ্রিল (২০২৫) গুম সংক্রান্ত কমিশন এর দুই জন সদস্য কাউখালীতে আসেন এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে ঘটনার বিবরন শুনে মুরাদের লাশ ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নির্দেশ দেন। 

 
 

রিফাত

×