
ছবি: সংগৃহীত
নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, সপ্তাহে ৫২ ঘণ্টার বেশি কাজ করলে মানুষের মস্তিষ্কের গঠন পরিবর্তিত হতে পারে। এতে প্রভাব পড়ে মানসিক ও আবেগীয় স্বাস্থ্যের ওপর। গবেষকরা স্বাস্থ্যসেবা খাতে কর্মরত ব্যক্তিদের ব্রেন স্ক্যান বিশ্লেষণ করে এমন ফল পেয়েছেন।
গাছন রিজিওনাল অকুপেশনাল কোর্ট স্টাডি (GROCS) এবং কর্মপরিবেশে কাজের প্রভাব নিয়ে পরিচালিত একটি প্রজেক্টের আওতায় ১১০ জনের ডেটা ও এমআরআই স্ক্যান বিশ্লেষণ করা হয়। এদের মধ্যে অধিকাংশ ছিলেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী। তাঁদের মধ্যে ৩২ জন নিয়মিত সপ্তাহে ৫২ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় কাজ করতেন।
গবেষণায় দেখা যায়, যারা দীর্ঘ সময় কাজ করতেন তাদের মস্তিষ্কের middle frontal gyrus অংশের গঠন ১৯% পর্যন্ত বড় হয়। এই অংশ মস্তিষ্কের সামনের লোব বা frontal lobe-এ অবস্থিত, যা পরিকল্পনা, মনোযোগ, ভাষা প্রক্রিয়াকরণ, এবং কাজের স্মৃতির সঙ্গে জড়িত।
এছাড়াও superior frontal gyrus ও insula-তেও পরিবর্তন দেখা গেছে। এই অংশগুলো মনোযোগ, আবেগ নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক প্রেক্ষাপট বুঝতে এবং দেহের অনুভূতি প্রসেস করতে সহায়তা করে।
গবেষকরা বলেছেন, "এই ফলাফল প্রাথমিক পর্যায়ের হলেও এটি দেখায় যে অতিরিক্ত কাজের ফলে মস্তিষ্কে নিউরোঅ্যাডাপটিভ পরিবর্তন হতে পারে, যা মানসিক ও আবেগীয় স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে।"
তারা আরও বলেন, "এই পরিবর্তনগুলোর প্রকৃত কারণ এখনো নির্দিষ্ট নয়, তবে এটি দীর্ঘমেয়াদি স্ট্রেসের জৈবিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা যেতে পারে। এই তথ্য ভবিষ্যতের আরও বড় গবেষণার পথ খুলে দেবে।"
বিশ্ব শ্রম সংস্থা (ILO)-র তথ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত কাজের কারণে প্রতি বছর বিশ্বে ৮ লাখের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করে। দীর্ঘ সময় কাজ করার কারণে শুধু হৃদরোগ বা মেটাবলিক সমস্যা নয়, মস্তিষ্কেও পরিবর্তন আসে এটি ভাবনার বিষয়।
গবেষণায় বলা হয়, "অফিস নীতিমালায় পরিবর্তন আনা জরুরি, যেন অতিরিক্ত কাজ কমানো যায় এবং কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা করা যায়।"
মুমু ২