ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২

নারীদের হৃদরোগের সাথে ইস্ট্রোজেনের সম্পর্ক উদঘাটন করলেন বিজ্ঞানীরা

প্রকাশিত: ০৭:৫২, ২৯ জুলাই ২০২৫

নারীদের হৃদরোগের সাথে ইস্ট্রোজেনের সম্পর্ক উদঘাটন করলেন বিজ্ঞানীরা

ছবি: সংগৃহীত

নারীদের হৃদরোগ প্রতিরোধে নারী হরমোন ইস্ট্রোজেন কীভাবে কাজ করে, তা নিয়ে যুগান্তকারী একটি তথ্য উদঘাটন করেছেন অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, ইস্ট্রোজেন নারীদের শরীরে একটি প্রাকৃতিক প্রোটিন ‘অ্যানেক্সিন-এ১’ (ANXA1) উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়, যা উচ্চ রক্তচাপজনিত হৃদ্‌ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়।

মোনাশ ইনস্টিটিউট অব ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেস (MIPS) পরিচালিত এবং Communications Biology নামক জার্নালে প্রকাশিত এ গবেষণায় জানানো হয়, নারীদের শরীরে এই প্রোটিনের উপস্থিতি হৃদ্‌যন্ত্রকে আরও কার্যকরভাবে উচ্চ রক্তচাপের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে। কিন্তু যখন এই ANXA1 প্রোটিন অনুপস্থিত থাকে, তখন উচ্চ রক্তচাপে নারীদের হৃদ্‌পিণ্ড ও প্রধান রক্তনালিগুলোর ক্ষতি আরও তীব্র হয়।

গবেষক দলের প্রধান এবং মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো ডা. জয়দীপ সিং বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় প্রথমবারের মতো দেখা গেছে যে, ইস্ট্রোজেন এবং ANXA1 প্রোটিনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। ইস্ট্রোজেন এই প্রোটিনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে হৃদ্‌পিণ্ড সুরক্ষিত থাকে। যদি এই প্রোটিন না থাকে, তাহলে হৃদ্‌পিণ্ড মাইটোকন্ড্রিয়ার দুর্বল কাজের কারণে ক্ষতির মুখে পড়ে।’

গবেষকেরা মনে করছেন, এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে এমন ওষুধ উদ্ভাবনের পথ খুলে দিতে পারে, যা ANXA1 অনুকরণ করে কাজ করবে এবং নারী-ভিত্তিক হৃদ্‌রোগ চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

এছাড়া, গবেষক ডা. চেংশু হেলেনা কিন বলেন, ‘হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ পুরুষ ও নারীর ওপর ভিন্নভাবে প্রভাব ফেলে। তবে এ বিষয়টি চিকিৎসা গবেষণায় দীর্ঘদিন উপেক্ষিত ছিল। নারীদের হৃদ্‌যন্ত্রে যেসব আলাদা জৈবিক প্রক্রিয়া কাজ করে, তা এখনো পর্যাপ্তভাবে বোঝা হয়নি।’

বেকার হার্ট অ্যান্ড ডায়াবেটিস ইনস্টিটিউটের প্রোটিওমিক্স বিভাগের প্রধান এবং গবেষক দলের অন্যতম সদস্য অধ্যাপক ডেভিড গ্রিনিং বলেন, ‘এই গবেষণা প্রোটিওমিক্স বা প্রোটিনবিষয়ক বৃহৎ গবেষণার গুরুত্বকে সামনে নিয়ে এসেছে। এতে করে আমরা হৃদরোগের পেছনের জটিল কারণগুলো আরও ভালোভাবে বুঝতে পারছি এবং নারী-পুরুষভেদে সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা উদ্ভাবনের দিকে এগিয়ে যেতে পারছি।’

গবেষকরা জানিয়েছেন, এখন তাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো মানবদেহে ইস্ট্রোজেন কীভাবে ANXA1 নিয়ন্ত্রণ করে তা বোঝা, এবং নতুন ওষুধ দিয়ে এই প্রোটিনের মাত্রা বাড়িয়ে হৃদরোগ প্রতিরোধ সম্ভব কিনা তা নিরীক্ষা করা।

 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

রাকিব

×