ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২

শেরপুরে গজারী বাগান ঘিরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা

সাফিজল হক তানভীর, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, শেরপুর

প্রকাশিত: ০০:০৮, ২৯ জুলাই ২০২৫

শেরপুরে গজারী বাগান ঘিরে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা

শেরপুরের ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার গারো পাহাড় ঘেঁষা বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে শত শত একরজুড়ে ঘন গজারী বাগান। সবুজে ঘেরা এসব বনের প্রাকৃতিক দৃশ্য, পাখির কলতান ও নির্জন পরিবেশ পর্যটকদের মুগ্ধ করে। তবে সঠিক পরিকল্পনা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের অভাবে এসব স্থান এখনও দেশের পর্যটন মানচিত্রে পূর্ণ গুরুত্ব পায়নি।

স্থানীয়দের মতে, গজারী বাগান শুধু বনাঞ্চল নয়, এটি হতে পারে শেরপুর জেলার অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ। পাহাড় ও বনের সম্মিলিত সৌন্দর্য, স্বল্প খরচে যাতায়াত এবং নিরাপদ পরিবেশের কারণে দিন দিন এই এলাকার প্রতি ভ্রমণপ্রেমীদের আগ্রহ বাড়ছে। সংরক্ষিত বনভূমির একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে গজারী ও শাল গাছের আধিক্য। এই গাছগুলো শুধু প্রাকৃতিক ভারসাম্যই রক্ষা করছে না, পর্যটকদের আকর্ষণের অন্যতম উপাদান হিসেবেও কাজ করছে।

শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া গ্রামের বাসিন্দা কলেজছাত্র ইয়াসিন বলেন, “যখন ঢাকার বন্ধুরা আসে, তাদের নিয়ে আমরা গজারী বনের পাশে হাঁটতে যাই। তারা অবাক হয়ে যায় এত সৌন্দর্য দেখে। অথচ এখানে কোনো তথ্যকেন্দ্র, পর্যটন গাইড বা পথনির্দেশ নেই।”

স্থানীয় সংবাদকর্মী সাইফুল ইসলাম বলেন, “যদি এখানে বনের মাঝে হাঁটার জন্য কাঠের ট্রেইল, বিশ্রামাগার, ছোট ক্যাফে বা পাহাড়ি কুটির গড়ে তোলা যায়, তাহলে পর্যটনের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এতে কর্মসংস্থান যেমন বাড়বে, তেমনি স্থানীয় সংস্কৃতি ও অর্থনীতিও বিকশিত হবে।”

স্থানীয় আরেক বাসিন্দা লিমন বলেন, “যেমন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সুন্দরবন জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ, তেমনি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গারো পাহাড় ও গজারী বন হতে পারে ইকো-ট্যুরিজমের অন্যতম কেন্দ্র। সেক্ষেত্রে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করে পর্যটন অবকাঠামো গড়ে তোলা হলে স্থানীয় জনগণসহ সবাই উপকৃত হবে। অন্যদিকে, নারী পর্যটক ও পরিবারকেন্দ্রিক দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করতে নিরাপত্তা, পথনির্দেশ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক সুবিধার বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে কাজ করতে হবে।”

এলাকার একাধিক সূত্র জানায়, শীত মৌসুমে এই বনাঞ্চলজুড়ে পিকনিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভ্রমণ বেড়ে যায়। কিন্তু এসব আয়োজন নিয়ন্ত্রিত বা পরিকল্পিত না হওয়ায় প্রকৃতি অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই পরিকল্পিত পর্যটন উন্নয়নের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও বন বিভাগের সম্মিলিত পদক্ষেপ প্রয়োজন।

সানজানা

×