ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২

গাজীপুরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত হৃদয়ের লাশ উদ্ধারে তুরাগ নদীতে অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর

প্রকাশিত: ২০:৫৭, ২৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২০:৫৯, ২৪ জুলাই ২০২৫

গাজীপুরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে  নিহত হৃদয়ের লাশ উদ্ধারে তুরাগ নদীতে অভিযান

ছবি: জনকণ্ঠ

গাজীপুরের কোনাবাড়িতে গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় পুলিশের গুলিতে নিহত কলেজ ছাত্র হৃদয়ের লাশ উদ্ধারের জন্য অভিযান চালিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তুরাগ নদীতে এ উদ্ধার অভিযান চালালেও লাশের সন্ধান পাওয়া যায় নি। এ সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরাসহ নিহতের স্বজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

 

নিহত কলেজ ছাত্র হৃদয় (২০) টাঙ্গাইলের গোপালপুরের আলমগর গ্রামের লাল মিয়ার ছেলে। তিনি হেমনগর ডিগ্রি কলেজে একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।

 

 

 

নিহতের স্বজনরা জানান, লেখাপড়ার পাশাপাশি গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় বসবাস করে অটোরিকশা চালাতেন কলেজ ছাত্র হৃদয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় কোনাবাড়িতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি।

 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হৃদয় হত্যার ঘটনায় তার ফুপাতো ভাই ইব্রাহিম বাদী হয়ে কোনাবাড়ি থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে হুকুমের আসামিসহ প্রায় ৩’শ লোককে আসামি করা হয়। এ হত্যাকান্ডের একটি ভিডিও চিত্র ভাইরাল হলে গাজীপুর শিল্প পুলিশের কন্সটেবল আকরাম হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

 

 

 

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ইন্সপেক্টর সাইফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় পুলিশ কন্সটেবলসহ ১১জনকে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে যে গাড়িতে করে নিহতের লাশ তুরাগ নদীতে ফেলা হয়েছিল ওই গাড়ির চালককে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্য ও দেখানো মতে তুরাগ নদীর কড্ডা এলাকায় বৃহষ্পতিবার অভিযান চালানো হয়।    

 

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ মামুন বলেন, হৃদয়ের লাশ খুঁজতে গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের চার সদস্যের ডুবুরি দলের দল সকাল ১০ টার দিকে কড্ডা এলাকায় তুরাগ নদীতে অভিযান শুরু করে। বিকেল ৩ টা পর্যন্ত নদীর ভাটির দিকে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা ব্যাপী অভিযান চালিয়েও লাশের সন্ধান পাওয়া যায় নি। এ সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মাসুদ পারভেজ, মহানগর পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

 

অভিযানের সময় নিহতের বড় বোন জেসমিন আক্তার উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আমার ভাইকে পুলিশ গুলি করে মেরেছে এর ভিডিও সব জায়গায় আছে। অথচ আজও আমার ভাই শহীদের মর্যাদা পায় নাই। তিনি আরো বলেন, আমার ভাইয়ের লাশের সন্ধান পেতে আরো দু-এক বছর লাগলেও আমি আশাবাদী। কারণ আমার ভাইয়ের হাঁড়ও যদি পাই, তা দেশে নিয়ে মাটি দিতে পারলে আমার বাবা-মা’র আত্মা শান্তি পাবে। তারা সবসময়ই কান্নাকাটি করেন। ভাইয়ের লাশ আমাদের পারিবারিক গোরস্তানে নিয়ে মাটি দিতে পারলে তাদের কষ্ট কিছুটা হলেও দূর হতো।
 

ছামিয়া

×