
ছবি: সংগৃহীত
উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়। দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৯ জন, আর আহত হয়েছেন প্রায় ২০০ জন। তাদের অধিকাংশই শিশু ও স্কুল শিক্ষার্থী।
দুর্ঘটনার পরপরই যাদের অবস্থা গুরুতর ছিল, তাদের জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। বাকিদের উত্তরা, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল, সিএমএইচ, কুর্মিটোলা, ক্রিসেন্টসহ অন্তত সাতটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেও চিকিৎসক দল প্রস্তুত রয়েছে।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী জুনায়েদ হাসান। তার বাবা হাসপাতালে ছুটে এসেছিলেন শেষ আশা নিয়ে—হয়তো বেঁচে আছে আদরের সন্তান। কিন্তু এর আগেই বিধ্বস্ত বিমানের আগুনে ঝলসে যাওয়া নিথর দেহ খুঁজে পান তিনি। জুনায়েদ আর কখনো “বাবা” বলে ডাকবে না।
একজন জানান,“আমার হাতে যে ছিল, তার ৯৫% দগ্ধ। আর আমার সাথে ভাগনে ছিল, সে ২০% পুড়েছে। দুজনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে রাখা হয়েছে।”
দুর্ঘটনার পর একের পর এক এম্বুলেন্সে এসে পৌঁছায় পোড়া শরীর নিয়ে শিশু শিক্ষার্থীরা। হাসপাতালের চত্বরে কান্নার রোল, বাঁচার আকুতি আর আতঙ্কে ভারি হয়ে ওঠে চারপাশ।
চিকিৎসকরা জানান,
“আহতদের অধিকাংশের বয়স ৯ থেকে ১৩ বছর। এদের মধ্যে অনেকের শরীরের ৬০% থেকে ৯৫% পর্যন্ত পুড়ে গেছে। যা চিকিৎসার দৃষ্টিকোণে এক্সট্রিম বার্ন ইনজুরি।”
জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের এক চিকিৎসক বলেন,
“এই ধরনের ইনজুরির জন্য আমাদের সক্ষমতা সীমিত, তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। সব বিশেষজ্ঞ, স্বেচ্ছাসেবক, চিকিৎসক এবং নার্স একসাথে কাজ করছেন।”
যেই যেখান থেকে খবর পেয়েছেন, আহতদের দেখতে ছুটে গেছেন স্বজন, শিক্ষক, সহপাঠী ও সাধারণ মানুষ। চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবক এবং প্রশাসন প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায়।
একজন স্বেচ্ছাসেবী বলেন,
“এই এতটুকু জীবনে তারা পৃথিবী কতটাই বা দেখেছে? এতগুলো শিশুর এইরকম অবস্থা সহ্য করা যায় না।”*
সূত্র:https://youtu.be/K-3pvMhSFcs?si=ZDDVJIrwXKS-MluN
ছামিয়া