
ঢাকার কেরানীগঞ্জের কলাতিয়া ইউনিয়নের নিশানবাড়ি এলাকায় টানা বর্ষণের কারণে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রায় দুই বছর ধরে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘমেয়াদী জলাবদ্ধতা। এর ফলে স্থানীয়দের জীবনযাপন এখন মানবেতর।
২১ জুলাই (সোমবার) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরো গ্রামে হাঁটুসমান পানিতে তলিয়ে রয়েছে বহু বাড়ি। অনেক ঘরের ভিতর পানি ঢুকে পড়েছে, রান্নার চুলা পর্যন্ত ডুবে গেছে, এমনকি টিউবওয়েলও নিমজ্জিত।
স্থানীয়রা জানান, টানা বৃষ্টিতে তাদের ফসল, বীজতলা, বসতভিটা সব পানিতে ভেসে গেছে। প্রায় পঞ্চাশটি বাড়িতে পানি ঢুকেছে। মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই পুরো গ্রাম ডুবে যাচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নারায়চন্দ্র মণ্ডল জানান, “আমাদের ৫ বিঘা কৃষি জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য একটিখাল ছিল, সেটিও সংস্কারের অভাবে ভরাট হয়ে গেছে। ফলে এখন একটু বৃষ্টিতেই পানি ঘরে ঢুকে পড়ে। আবাদি জমি তলিয়ে যাচ্ছে, কৃষকের ঘাম ঝরানো ফসল নষ্ট হচ্ছে।”
একই অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা মানিক। তিনি বলেন, “খালের প্রধান মুখটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানি জমে ঘরে ঢুকে পড়ে। আমরা সবাই কৃষির উপর নির্ভরশীল। ফলে ফসলের ক্ষতি আমাদের জীবিকায় বড় ধাক্কা দিচ্ছে।”
অন্য বাসিন্দা হরিনাথ জানান, “বর্ষা এলেই আমাদের দুর্ভোগ শুরু হয়। গত তিন বছর ধরে আমরা পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। মাঝে মাঝে মেম্বার-চেয়ারম্যানরা এসে কিছু চাল-ডাল দিয়ে যান, এরপর আর কেউ খোঁজ নেন না। আমাদের পাশে যে খাল রয়েছে, সেটা খনন করা হলে আমরা এই দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতাম।”
এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিনাত ফৌজিয়া বলেন, “বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না, আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। দ্রুত কলাতিয়ার নিশানবাড়ি পানি বন্দি এলাকাটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
শেখ ফরিদ