
গাজায় ত্রাণকেন্দ্রে ক্ষুধার্ত শিশুদের ভিড়
গাজায় বিতর্কিত ত্রাণ সংস্থা জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে জড়ো হওয়া ক্ষুধার্ত ও অসহায় ফিলিস্তিনিদের ওপর মরিচের গুঁড়া ছুড়েছে ইসরাইলি সেনারা। সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। আলজাজিরার ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা সানাদ ২০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেছে। এতে দেখা গেছে, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফা শহরের শাকুশ এলাকায় ইসরাইলি সেনারা মরিচের গুঁড়ার স্প্রে ব্যবহার করে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করছে। খবর বিবিসি ও আলজাজিরা অনলাইনের।
গত ১০ জুলাই মোবাইলে ভিডিওটি ধারণ করা হয়। রবিবার রাতে ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, তিনজন সশস্ত্র ইসরাইলি সেনা ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রে ফিলিস্তিনিদের ওপর মরিচের গুঁড়া ছুড়ছেন। এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর স্তম্ভিত হয়ে পড়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্তের মানুষ। সাধারণ মানুষ ইসরাইলের এই কর্মকাÐের ধিক্কার ও নিন্দা জানিয়ে মন্তব্য পোস্ট করছেন।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, পুরুষ, নারী ও শিশুরা চারদিকে ছুটে পালিয়ে যাচ্ছে। কারও মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকা। কেউ আবার পিঠে ময়দার বস্তা তুলে নিয়ে আতঙ্কে ছুটে যাচ্ছেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, মে মাসের শেষ দিকে জিএইচএফ গাজায় কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৮৯১ জন খাবারের খোঁজে গিয়ে নিহত হয়েছেন। ১৫ জুলাই জাতিসংঘ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৬৭৪ জনেরই মৃত্যু হয়েছে জিএইচএফের ত্রাণকেন্দ্রগুলোর আশপাশে।
গাজায় ইসরাইলের দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা পূর্ণ অবরোধ কিছুটা শিথিল করার পর উপত্যকায় জিএইচএফের ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়। কার্যত জাতিসংঘের নেতৃত্বাধীন বিশাল ত্রাণ সরবরাহ নেটওয়ার্ককে পাশ কাটিয়ে বিতর্কিত এ কার্যক্রম চলছে। এদিকে রবিবার গাজায় ইসরাইলি হামলায় আরও ৮৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭৩ জনই ত্রাণ সংগ্রহের জন্য জড়ো হওয়া সাধারণ মানুষ।
এর আগে গত শনিবার গাজা উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে ইসরাইলি হামলায় ১১৬ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এর মধ্যে অন্তত ৩৮ জন ছিলেন ত্রাণপ্রত্যাশী। গাজার বাসিন্দা মাহমুদ মোকাইমার বলেন, তিনিও অন্য মানুষদের সঙ্গে জিএইচএফের ত্রাণকেন্দ্রের দিকে যাচ্ছিলেন। ইসরাইলি সেনারা প্রথমে সতর্কতামূলক গুলি ছোড়ে। এরপর সরাসরি গুলি চালায়।
মোকাইমার বলেন, ‘দখলদার বাহিনী আমাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। মোকাইমার বলেন, তিনি অন্তত তিনজনের নিথর দেহ মাটিতে পড়ে থাকতে ও আহত বহু মানুষকে দৌড়ে পালাতে দেখেছেন। গাজার দেইর আল-বালাহ শহর থেকে সাংবাদিক হিন্দ খোদারি বলেন, ইসরাইল যদি গাজায় আর কোনো খাবার ঢুকতে না দেয়, তা হলে ফিলিস্তিনিদের সামনে খাবারের জন্য জীবন ঝুঁকিতে ফেলা ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না।
প্যানেল মজি