
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ ১০০ দিনেরও বেশি সময় বেআইনিভাবে আটক থাকার পর মুক্তি পেয়েছেন ফিলিস্তিনপন্থী আন্দোলনের সাবেক সংগঠক মাহমুদ খলিল। মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২ কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা দায়ের করেছেন।
সম্প্রতি লুইজিয়ানার জেনা শহরের একটি অভিবাসন আটক কেন্দ্র থেকে মুক্তি পান যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সাবেক ছাত্রনেতা। মুক্তির পরই তিনি আদালতে অভিযোগ জানান যে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাকে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়েছে এবং এতে তার সম্মানহানি ঘটেছে।
গত ৮ মার্চ নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে নিজের বিশ্ববিদ্যালয় ভবনের লবিতে থাকা অবস্থায় মাহমুদ খলিলকে আটক করেন অভিবাসন কর্মকর্তারা। তিনি জানান, সেদিন রাতে তিনি তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর সঙ্গে রাতের খাবার শেষে বাসায় ফিরছিলেন। কোনো ধরনের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই তাকে তুলে নেওয়া হয়। পরে ফেডারেল কর্মকর্তারা অবাক হন যখন জানতে পারেন যে, মাহমুদ যুক্তরাষ্ট্রের একজন বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা।
তাকে গোপনে লুইজিয়ানার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় এবং বিষয়টি তার পরিবার ও আইনজীবীদের কাছে গোপন রাখা হয়। এই সময়ে তিনি চিকিৎসা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন। আলসারের ওষুধ না পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন, ঘুমাতে বাধ্য করা হয় তীব্র ফ্লোরোসেন্ট আলোয়, এবং প্রায় অখাদ্য খাবার খেতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেন খলিল। এই অমানবিক পরিস্থিতিতে তিনি প্রায় ১৫ পাউন্ড ওজন হারান।
মুক্তির পর মাহমুদ খলিল ফেডারেল টর্ট ক্লেইমস আইনের (Federal Tort Claims Act বা FTCA) আওতায় ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা দায়ের করেন। মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ, ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) এবং পররাষ্ট্র দপ্তরকে বিবাদী করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আমাকে হয়রানি করেছে এবং আমার সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছে।’
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাহমুদ খলিল বলেন, ‘আমি চাই মানুষ বুঝুক, ট্রাম্প প্রশাসনের ক্ষমতার অপব্যবহার কেমন ছিল। তারা আন্দোলনকারীদের ভয় দেখিয়ে থামাতে চেয়েছে। কিন্তু আমরা থামবো না।’
তিনি আরও জানান, ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্রাপ্ত অর্থ তিনি বাকস্বাধীনতার জন্য লড়াইরত শিক্ষার্থী ও অধিকারকর্মীদের সহায়তায় ব্যবহার করতে চান। খলিল জানান, তিনি চান ট্রাম্প প্রশাসন তার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায় এবং অভিবাসন বিতরণ সংক্রান্ত নীতিমালায় সংস্কার আনে।
দামেস্কে ফিলিস্তিনি পরিবারে জন্মগ্রহণকারী মাহমুদ খলিল গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠকে পরিণত হয়েছিলেন। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক এই আন্দোলনে তার নেতৃত্ব তাকে আমেরিকার ফিলিস্তিনপন্থী স্বরূপ হিসেবে পরিচিত করে তোলে।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=0Lq_Rte16AI
রাকিব