
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে বালিপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় সমন্বয়ক ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহরিয়া আব্দুল্লাহ সোহেল লাঞ্ছিত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও ৬ জন আহত হয়েছেন। বুধবার (০২ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বালিপাড়া বাজারের ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, এদিন বালিপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনের জন্য নির্ধারিত তারিখ ছিল। তারই অংশ হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহরিয়া আব্দুল্লাহ সোহেল বালিপাড়া বাজারে পৌঁছালে, ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাবুল ও সদস্য সচিব আব্দুল জলিলের সমর্থকরা তার ওপর হামলা চালায় ও লাঞ্ছিত করে। এ সময় তার সঙ্গে থাকা কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিবকেও মারধর করা হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে বিএনপি নেতা আবুল কালাম শিকদারের সমর্থকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাদের ওপর দেশীয় অস্ত্র, দা, জিআই পাইপ ও লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে আবুল কালাম শিকদারের গ্রুপের ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পরাজিত প্রার্থী মো. জাকির হোসেন (৩৫), সদস্য রিয়াজুল ইসলাম (৫০) এবং ওয়ার্ড বিএনপির সহ-সভাপতি এনায়েত হাওলাদার আহত হন।
পরে জেলা বিএনপির সদস্য অ্যাড. আবুল কালামসহ উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি শান্ত হয়। কমিটি গঠন কার্যক্রম স্থগিত করে উভয়পক্ষকে নিয়ে বিকেলে উপজেলা বিএনপির অফিসে বসার সিদ্ধান্ত হয়। গুরুতর আহত জাকির হোসেন ও রিয়াজুল ইসলামকে ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও নির্বাচনী সমন্বয়ক শাহরিয়া আব্দুল্লাহ সোহেল বলেন, “বালিপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনকে পণ্ড করার জন্য পরিকল্পিতভাবে বালিপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ও প্যানেল চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বাবুল এবং সদস্য সচিব আব্দুল জলিল শেখের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়। তারা ৭টি ওয়ার্ডের ভোটার তালিকা ও দলীয় ব্যানার ছিনিয়ে নেয়। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে ছাত্রদল ও বিএনপির আরও ৬-৭ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।”
বালিপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, “সমন্বয়ক শাহরিয়া আব্দুল্লাহ সোহেল ওয়ার্ড কমিটিতে আওয়ামী লীগ ও জেপির লোকজনকে নির্বাচিত করায় পরাজিত নেতারা ক্ষুব্ধ হয়ে হামলা চালিয়েছে। আমি হামলার সঙ্গে জড়িত নই।”
ইন্দুরকানী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলমগীর কবির মান্নু বলেন, “আজ বালিপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলনের কথা ছিল। তবে ওয়ার্ড কমিটি সম্পন্ন না হওয়ায় এবং দুই পক্ষের উত্তেজনার কারণে পাল্টাপাল্টি মারধর হয়। এ ঘটনায় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মারুফ হোসেন বলেন, “বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলায় কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর পেয়েছি। এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মিমিয়া