
মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হচ্ছে
জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়নের খেতারচর এলাকায় দীর্ঘ ৯ বছর ধরে বাঁশের সাঁকোই হয়ে উঠেছে দশ গ্রামের মানুষের প্রধান চলাচলের পথ। শিঙিডোবা নদীর সংযোগ খালের ওপর নির্মিত ব্রিজটির এক পাশের সংযোগ সড়ক ২০১৫ সালের ভয়াবহ বন্যায় ধসে পড়ে। কিন্তু এত বছর পেরিয়ে গেলেও সংযোগ সড়কটি আর মেরামত হয়নি। ফলে স্থানীয় মানুষকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে।
ব্রিজটি দিয়ে প্রতিদিন পার হন খানপাড়া, মোল্লাপাড়া, থাঠারুপাড়া, মসজিদপাড়া, উত্তর ধাতুয়াকান্দা, দক্ষিণ ধাতুয়াকান্দা, ঝালুরচর পশ্চিমপাড়া সহ আশপাশের প্রায় দশ গ্রামের হাজারো মানুষ। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ সবাই বাঁশের সাঁকোই ভরসা করে চলাফেরা করছেন।
এ পথেই শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে সাধুরপাড়া নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়, আলহাজ্ব কছর উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসা, সাধুরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ ধাতুয়াকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
এছাড়া সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ, উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রেও যেতে হয় এই ঝুঁকিপূর্ণ পথ দিয়েই।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ব্রিজটির এক পাশ প্রায় সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। বাঁশের তৈরি অস্থায়ী সাঁকো দিয়েই যাতায়াত করছে সবাই। দিনের বেলা কোনোভাবে চলা গেলেও রাতে পারাপার করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। যে কোনো মুহূর্তে সাঁকো ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
ধাতুয়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ ৯ বছরেও এই ব্রিজের সংযোগ সড়কটি মেরামত না করাটা চরম অবহেলা। প্রতিদিন হাজারো মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। শিক্ষার্থী আশা মনি বলে, পড়াশোনার জন্য বাঁশের সাঁকো দিয়ে ব্রিজে উঠতে খুব ভয় করে। কিন্তু উপায় নেই, ভয়কে জয় করেই যেতে হয়।
এ বিষয়ে সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জানান, ব্রিজের সংযোগ সড়ক নির্মাণের বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। আশা করি, চলতি বছরেই কাজটি শুরু হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান সুমন জনকণ্ঠকে বলেন, জনচলাচলের সুবিধার্থে আপাতত ‘টিআর’ প্রকল্পের আওতায় বাঁশের সাঁকো তৈরি করা হয়েছে। তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য বড় আকারের একটি নতুন ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। আশা করি, দ্রুতই বাস্তবায়ন হবে।
জনদুর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন এলাকাবাসী।