
ছবি: জনকণ্ঠ
কুমিল্লায় বুড়িচংয়ে প্রবাসীর স্ত্রী ফেরদৌসি বেগম নয়ন হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধীদের জের ধরে দুই লাখ টাকা চুক্তিতে ভাড়াটিয়া খুনিরা হত্যা করে ফেরদৌসী বেগম নয়নকে। গ্রেফতারের পর এমনই স্বীকারোক্তি দিয়েছে আসামিরা।
বুধবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বুড়িচং থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আজিজুল হক।
তিনি জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ২ লাখ টাকা চুক্তিতে খুন করা হয় রাজাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গ্রামের দক্ষিণপাড়ার সৌদি প্রবাসী শামসুল আলমের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগমকে। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে নিহতের ঝা সহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার আসামীরা আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, ওই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী নুরজাহান বেগম (৫০), মো.সোলাইমান ওরফে তনু মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন (৩০),মমতাজ উদ্দিন মন্তাজের ছেলে রুবেল আহমেদ মিন্টু (৩১) এবং মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন জিল্লু (২৭)।পুলিশ জানান, আসামি আনোয়ার হোসেনের মাদকসহ ৮টি মামলা, রুবেল আহমেদ মিন্টুর বিদ্যুৎ ট্রান্সফরমা চুরি, মাদক সহ ১৪ টি মামলা, মাঈনুদ্দিন জিল্লুর ১ টি মামলা রয়েছে ।
হত্যাকাণ্ডের ন্যাপথ্য কারণ সম্পর্কে ওসি আরও জানান, রাজাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার ফেরদৌসী বেগম নয়ন ও ঝা নুরজাহান বেগম মধ্যে বাড়ির পাশের একটি জমি নিয়ে পূর্ববিরোধ চলছিল। বিষয়টি নিয়ে কোন প্রকার সুরহা না হওয়ায় ফেরদৌসী বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা করে ঝা নুরজাহান বেগম।
পরিকল্পনা অনুযায়ী পার্শ্ববর্তী এলাকার মাদকসেবী আনোয়ার হোসেনের সাথে দুই লাখ টাকায় হত্যার চুক্তি করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী আনোয়ার হোসেন সাথে মমতাজ উদ্দিনের ছেলে রুবেল আহমেদ মিন্টু ও খোরশেদ আলমের ছেলে মোহাম্মদ মাইনুদ্দিন জিল্লু এই দুজনকে যুক্ত করেন। চুক্তি অনুযায়ী গত ২৭ জুন শুক্রবার সকালে ফেরদৌসী বেগমকে বাড়ির পাশের একটি নির্জন বাগানে হত্যা করে মরদেহ সেফটি ট্যাংকে ফেলে দেয়। ফেরদৌসী বেগম নিখোঁজের পর থেকেই পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজিসহ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
পরে মঙ্গলবার সকাল ৮টায় স্থানীয়রা বাড়ি থেকে ২শ গজ দূরে একটি নির্জন বাগানের সেপটিক ট্যাংকে বস্তাবন্দি লাশের সন্ধান পেয়ে বুড়িচং থানা পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে বুড়িচং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সেফটি ট্যাংক থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করে।
এই ঘটনার পর নিহতের ছেলে ইকরামুল হাসান বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর বুড়িচং থানা পুলিশ প্রথমে নিহতের ঝা নুরজাহান বেগম আটক করে। পুলিশের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে একপর্যায়ে হত্যার ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে ওই তিন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় আসামিদের কাছ থেকে নিহতের কানের দুল, গলার চেইন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের বুধবার দুপুরে কুমিল্লা আদালতে পাঠালে আসামিরা হত্যার ঘটনা স্বীকার করে জবানবন্দী প্রদান করেন। পরবর্তীতে আসামিদের কুমিল্লা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
ছামিয়া