
ছবি: জনকন্ঠ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে বাদাম পরিপক্ব হওয়ায় ক্ষেত থেকে বাদাম তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। তিস্তার চরাঞ্চলের উঁচু এলাকায় বাদাম চাষিরা ফলনে খুশি হলেও নিচু এলাকার বাদাম চাষিরা লোকসানের সম্ভাবনায় হতাশ হয়ে পড়েছেন।
গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের নিচু এলাকায় বাদামের ক্ষেত তলিয়ে যায়। ফলে বাদাম পচে লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬০ হেক্টর। অর্জিত হয়েছে ৩৬৫ হেক্টর, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৫ হেক্টর বেশি। তবে গত কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে তিস্তার চরাঞ্চলের নিচু এলাকাগুলোতে পানি বৃদ্ধির কারণে বাদামের ক্ষেত তলিয়ে বেশ ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিনে চরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, চরগুলো যেন নতুন করে সেজেছে। মাঠের পর মাঠ বাদামের সবুজ ক্ষেত। আর এ ক্ষেতকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখছেন চরাঞ্চলের কৃষকেরা। বাদাম পরিপক্ব হওয়ায় মাঠজুড়ে কৃষকেরা বাদাম তোলায় ব্যস্ত। এসব ক্ষেতে ডাল ধরে টান দিলেই মাটির নিচ থেকে উঠে আসছে থোকা থোকা বাদাম।
তিস্তার চরাঞ্চলের উঁচু এলাকার চাষিরা ফলনে সন্তুষ্ট হলেও নিচু এলাকার অনেকেই পড়েছেন বড় ধরনের ক্ষতির মুখে। কৃষকেরা জানান, বাদাম চাষে যে ব্যয় হয়েছে, তার অর্ধেকও উঠবে না। অসময়ে তিস্তায় পানি এসে আমাদের ক্ষেত নষ্ট করে দিয়েছে। তারা অনেকেই ঋণ করে বাদাম চাষ করেছিলেন, এখন সেই ঋণ পরিশোধ নিয়ে পড়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়।
গোড়াইপিয়ার চরের বাদাম চাষি খোয়াজ মণ্ডল জানান, প্রায় দেড় একর জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। ক্ষেত নিচু হওয়ায় তিস্তার পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন নিরুপায় হয়ে বাদাম তুলতে হচ্ছে। কিন্তু ফলন একেবারেই খারাপ—বেশিরভাগ বাদামের ভিতরে দানা নেই। বাড়িতে বাদাম নিয়ে যেতে প্রায় ৯০ হাজার টাকা খরচ হবে। এবারে বড় অঙ্কের লোকসান হবে।
এছাড়াও চরাঞ্চলের বকুল মিয়া, চাঁদ মিয়া, জলিল মিয়া ও নুরু মিয়াসহ একাধিক চাষি জানান, তিস্তার চরাঞ্চলে প্রতিবছর বাদামের চাষ হয়। এ চাষে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তারা। তবে কখনো কখনো তিস্তার পানি সেই স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দেয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন জানান, এবারে বাদামের ফলন ভালো হয়েছে। তবে তিস্তার নিচু এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কিছু ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। উঁচু এলাকাগুলোর ফলন আশানুরূপ হয়েছে। বাজারদর ভালো থাকলে বাদাম চাষিরা ভালো লাভবান হতে পারবেন।
শহীদ