
ছবি: দৈনিক জনকন্ঠ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ফুলশয্যার রাতেই স্বামীর মৃত্যু, বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন নববধূ লাভনী আক্তার (২০) ও তার পরিবার। ফুলশয্যা রাতেই বরের মৃত্যুর ঘটনাটি কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না নববধূ তার পরিবার ও এলাকাবাসী। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস শেষ পর্যন্ত বাকরুদ্ধ হয়ে ফুলশয্যা রাতেই বরে মরদেহের পাশে বসে অশ্রুশিক্ত সিক্ত নয়নে তাকিয়ে নববধূ তার জীবনের স্মরণীয় রাতটি কাটিয়ে দেন।
শুক্রবার (২ মে) সন্ধ্যায় নববধূ লাভনী আক্তার মেহেদি মাখা হাত, পড়নে লাল শাড়ি পরেই মৃত স্বামীকে শেষ বিদায় জানায়। ঘটনাটি পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের কবিরমামুদ গ্রামের শাহ জামালের মেয়ে লাভলী আক্তার (২০) এর সাথে একই উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের আছিয়ার বাজার এলাকার মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে খালেকুজ্জামান ডিউক এর সাথে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ে অনুষ্ঠানে দুই পরিবারের আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে আপ্যায়ন সহ নানা আনন্দ ও উৎসব চলছিল। বরের বাড়িতে আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব এবং পাড়া প্রতিবেশীদের খাওয়া-দাওয়া শেষে আত্মীয় স্বজনরাও অনেকেই বিদায় নিয়েছেন।
ঐদিন রাত ১২ টার দিকে নববধূ মেহেদি মাখা হাত, পড়নে লাল শাড়ি পড়িয়ে বাসর (ফুলশয্যা) রাতে বিছানায় বসে বরের জন্য অপেক্ষা করছিল। রব খালেকুজ্জামান ডিউক বাড়িতে আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে কথা শেষে রাত ১২ টার দিকে বাসর ঘরে প্রবেশ করে নববধূর কাছে এক গ্লাস পানি চায় এবং এরপর আকস্মিক মেঝেতে পড়ে যায়। পরে নববধূর আত্মচিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে বর ডিউককে ডাকা ডাকি করেও কোনো সাড়া মেলেনি তার। হতবাক হয়ে যায় বাড়ির লোকজন। দ্রুত পার্শ্ববর্তী গ্রাম্য ডাক্তার নিয়ে আসলে সে হ্রদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে জানান।
নববধুর চাচা সাবেক ইউপি সদস্য শাহ আলম জানান, জামাই খালেকুজ্জামান আমার ভাতিজির সাথে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। কে জানতো বিয়ের রাতেই আমার জামাইয়ের মৃত্যু হবে। অল্প বয়সে আমার ভাতিজি বিধবা হল। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক ও বেদনাদায়ক। সবই নিয়তির খেলা।
শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম মিয়া সোহেল জানান, প্রধান শিক্ষক খালেকুজ্জামান ডিউক এর মৃত্যুর কথা স্বীকার করে বলেন নিয়তির ওপরে তো কারো হাত নেই। তবে এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা খুবই কম দেখা যায়, বাসর রাতেই স্ত্রী বিধবা। খুবই কষ্টদায়ক ঘটনা। শুক্রবার সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
রাজু মোস্তাফিজ/মিরাজ খান