
প্রতীকী ছবি।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ইন্টারনেটে ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগী এক মহিলার নিকট থেকে পুলিশ পরিচয়ে প্রায় আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। আরও ৫ লক্ষাধিক টাকা না দেয়ায় নেটে ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকী দেয়ায় প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। থানায় অভিযোগ দেয়ায় প্রতারক চক্র বাদী তার পরিবারের বিভিন্ন সদস্যকে প্রাণ নাশের হুমকী দিচ্ছে। মামলার বাদী ভুক্তভোগী শিউলি বেওয়া উপজেলার শৌলী শাবলা গ্রামের মৃত বদিউজ্জামানের স্ত্রী।
আরও পড়ুন :মরক্কোয় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যু ২১০০ ছাড়াল
ভুক্তভোগীর অভিযোগে জানা যায়, জরুরী প্রয়োজনে তার একটি গরু বিক্রির টাকা দিচ্ছিল না শৈলী শাবলা গ্রামের জনৈক শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যাপারী। এসংক্রান্ত বিষয়ে সে গত ২০/০৭/২০২৩ইং তারিখে রায়গঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করে। এরপরে শিউলি টাকা উত্তোলনের জন্য পাশের কয়রা গ্রামের মৃত ইঞ্জিল শেখের ছেলে মোঃ চান মিয়ার(৫১) সহযোগীতা কামনা করেন। চান মিয়া একসময় শিউলির সাথে লেখাপড়া করত। এই বিশ্বাসে শিউলি চান মিয়ার শরণাপন্ন হন। শিউলি জানতো না চান মিয়া একটি প্রতারক চক্রের সদস্য। তখন চান মিয়া একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে বলেন, এর সাথে যোগাযোগ করেন। এর নাম রায়হান। তিনি একজন পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) । তার সাথে কথা বললে টাকা তুলে দিতে পারবেন। তখন ভিকটিম সরল বিশ্বাসে সেই এসআই এর সাথে মোবাইলে কথা বলেন।
তখন রায়হান পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে প্রথম দিনে ০১৮১৪৯১৮২৮৭ নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা নেন। এরপরে ওসির কথা বলে বিকাশের মাধ্যমে একই নম্বরে ১৮ হাজার টাকা নেন কথিত এসআই রায়হান । ভিকটিম টাকা দেয়ার পরে একদিন এসআই রায়হানের সাথে দেখা করতে চান। দেখা করতে গিয়ে দেখেন রায়হান আসলে পুলিশের কেউ না। সে তার পুর্ব পরিচিত পার্শ্ববতী কয়রা গ্রামের মোঃ হবিবর রহমানের ছেলে মোঃ শহীদ শেখ(৩৮)। ভুয়া এসআই সেজে শিউলির সাথে প্রতারণা করেছে। পরে শহীদ কৌশলে ভিকটিমের সাথে রিক্সায় উঠে কিছু ছবি তুলে এবং ছবি গুলো পরবরর্তীতে নেটে অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকী দেয় এবং ভয় দেখিয়ে গত ২৩/০৮/২০২৩ দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে আবারও ৫ লক্ষ টাকা দাবী করে প্রতারক শহীদ। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় ভিকটিমকে হত্যার হুমকী দেয়। পরে শিউলি বেওয়া উপায়ান্তর না দেখে রায়গঞ্জ থানায় তিনজনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগ দেওয়ায় বাদীকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি ও হুমকী দিয়ে আসছে উক্ত প্রতারক চক্র। তবে শহীদের উল্লেখিত মোবাইল নম্বরে যোগযোগ করে বন্ধ পাওয়া যায়। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায় এই চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ পুলিশ পরিচয়ে প্রতরণা করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানায় এলাকাবাসী।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব ইন্সপেক্টর খোরশেদ আলী জানান, ভিকটিম শিউলি বেওয়ার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে সঠিক মনে হয়েছে। তার সাথে চরমভাবে প্রতারণা করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রায়গঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসিফ মোহাম্মদ সিদ্দিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্তের জন্য এসআই খোরশেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি তদন্ত করছেন। ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
টিএস