ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ৬ অক্টোবর ২০১৯

দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক কেন্দ্র

ইন্ডিয়া ইকোনমিক সামিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথার্থই বলেছেন, ৩শ’ কোটি মানুষের বিশাল বাজারে যোগাযোগের কেন্দ্র হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির কেন্দ্র হয়ে ওঠার এ বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। পূর্ব এশিয়া, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, চীন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশের মধ্যবর্তী হওয়ায় বাংলাদেশ আঞ্চলিক ও ভারতের ব্যবসার অন্যতম ক্ষেত্র হতে পারে। সামাজিক মূল্যবোধ এবং জনগণের আস্থাই বাংলাদেশের উন্নয়নের মূল শক্তি বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ। হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। মাথাপিছু আয় এখন দুই হাজার ডলারের কাছাকাছি। মধ্যবিত্তের সংখ্যা তিন কোটির বেশি। অভ্যন্তরীণ বাজার ক্রমেই বড় হচ্ছে। জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ এবং তারা নানা বিষয়ে দ্রুত দক্ষতা অর্জন করছে। দেশে ব্যাপক হারে শিল্প-কলকারখানা গড়ে উঠছে। বিদেশী বিনিয়োগ দ্রুত বাড়ছে। বিদ্যুত উৎপাদনে ও যোগাযোগ খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। পণ্য ও সেবা রফতানিতে দেশ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। চলতি অর্থবছরে ৬০ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চারটি সমুদ্রবন্দর শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশীদেরও সেবা দিয়ে যাচ্ছে। দেশে রাজনৈতিক স্থিতি, ধর্মীয় সম্প্রীতি, অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতি, উদার গণতন্ত্র এবং আধুনিক মন-মানসিকতা বিদ্যমান। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশই হতে পারে এই অঞ্চলের ‘ইকোনমিক হাব’ বা অর্থনৈতিক কেন্দ্র। আগামীতে এশিয়ায় সেরা বিনিয়োগ যে বাংলাদেশেই হবে এমনটা শুধু স্বপ্ন নয়, বাস্তব রূপ লাভ করবে বলেই দেশবাসী আশা করে। বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমানে অন্তত ১৭টি খাতে কর অবকাশ সুবিধা পাচ্ছে বিদেশীরা। তাদের মুনাফা প্রত্যাবাসন বা ফিরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রেও বিধি-বিধান শিথিল করা হয়েছে। মুনাফাসহ শতভাগ মূলধন ফেরত নেয়ার পাশাপাশি নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠায় যন্ত্রপাতির অবচয় সুবিধা, শুল্কমুক্ত যন্ত্রাংশ আমদানি এবং রফতানি উন্নয়ন তহবিল থেকে কম সুদে ঋণ নেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন বিদেশীরা। আশা করা যায়, প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানকে গুরুত্বের সঙ্গে নেবেন ভারত ও সন্নিহিত দেশগুলোর ব্যবসায়ীরা। যার ফলস্বরূপ আগামী অর্থবছরে বিনিয়োগ আরও বাড়বে এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সমৃদ্ধির পথে।
×