মিহাইন লোপেজ
অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়লেন মিহাইন লোপেজ। ক্রীড়ার মহাযজ্ঞ অলিম্পিকের ইতিহাসে প্রথম অ্যাথলেট হিসেবে একই ইভেন্টে টানা পঞ্চমবারের মতো স্বর্ণপদক জয়ের বিস্ময়কর কীর্তি গড়লেন ৪১ বছর বয়সী এই রেসলার। আর তাতেই অলিম্পিকের দুই কিংবদন্তি কার্ল লুইস এবং মাইকেল ফেলপসকেও ছাড়িয়ে গেলেন কিউবার এই অ্যাথলেট। কেননা অলিম্পিকের ইতিহাসে এমন কীর্তি যে লুইস-ফেলপসেরও ছিল না।
মঙ্গলবার রেসলিংয়ের ১৩০ কেজি গ্রেকো-রোমান ইভেন্টের ফাইনালে চিলির প্রতিনিধিত্ব করা কিউবান বংশোদ্ভূত ইয়াসমানি আকোস্তাকে ৬-০ ব্যবধানে হারিয়ে সোনার পদক জেতেন মিহাইন লোপেজ। অলিম্পিকের ইতিহাসে লোপেজের এমন পারফর্ম্যান্সও ঈর্ষণীয়। ২২ জয়ের বিপরীতে তার পরাজয় মাত্র একটি। সেটাও আবার সেই ২০০৪ সালের অ্যাথেন্স অলিম্পিকের কোয়ার্টার ফাইনালে।
এমন কীর্তির পর তার কোচ রাউল ত্রুয়িল্লো বলেন, ‘গৌরব নিয়ে তার খুব একটা মাথাব্যথা নেই। নিজের আনন্দ আর খেলার প্রতি ভালোবাসা থেকেই সে এটা করেছে। সৃষ্টিকর্তা যদি তাকে ইতিহাসের সেরা হওয়ার সুযোগ দেন, তবে কেন সে তার সদ্ব্যবহার করবে না?’ অথচ ২০২১ সালে টোকিও অলিম্পিকের পরই অবসর নিয়েছিলেন লোপেজ। কিন্তু রেকর্ডটি গড়ার লক্ষ্যেই আবারও রিংয়ে ফিরে আসেন তিনি।
তিন বছর রেসলিংয়ের বাইরে থাকার পরও এবং চারবার মেরুদ-ের সমস্যায় ভুগেও প্যারিস অলিম্পিকের এই ইভেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে ইরানের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আমিন মিরজাজাদেকে হারিয়ে চমকে দেন লোপেজ। জয়ের পরই খেলাটি থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অবসর নেওয়া রেসলারদের প্রথা অনুযায়ী নিজের জুতা জোড়া রেসলিং ম্যাটের মাঝে রাখেন।
এর আগে লোপেজকে উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান জানিয়েছেন গ্যালারির দর্শকরা। অবসর নেওয়ার ইঙ্গিতটা গত সোমবার ফাইনালে উঠেই দিয়েছিলেন লোপেজ। তিনি বলেনছিলেন, ‘আমাদের তরুণদের সুযোগ করে দিতে হবে। সারা জীবন আমি রেসলিংকেই ভালোবেসেছি।’
এত দিন একটি ইভেন্টে টানা চারটি ব্যক্তিগত সোনা জয়ে লুইস (অ্যাথলেটিকস/লং জাম্প), মাইকেল ফেলপস (সাঁতার/২০০ মিটার মিডলে), কেটি লিডেকি (সাঁতার/৮০০ মিটার ফ্রিস্টাইল), আল ওয়েরতের (অ্যাথলেটিকস/ডিসকাস), পল এলভেস্ট্রম (সেইলিং) এবং কাউরি ইচোর (রেসলিং) পাশাপাশি ছিলেন লোপেজ।