সেরেনা উইলিয়ামস
সেরেনা উইলিয়ামস। আমেরিকান তো বটেই, মেয়েদের টেনিস ইতিহাসেরও অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। ২৩টি গ্র্যান্ডস্লামের মালিক জীবন্ত এই কিংবদন্তি তার ক্যারিয়ারের ইতি টানার ঘোষণা দিয়েছেন। আগামী ২৯ আগস্ট শুরু হতে যাওয়া ইউএস ওপেনই হতে যাচ্ছে ৪০ বছর বয়সী মার্কিন কৃষ্ণকলির শেষ অধ্যায়। অন্যদিকে, সময়ের অন্যতম বড় তারকা ইগা সুইয়াটেক। দুইবারের ফ্রেঞ্চ ওপেনজয়ী ২১ বছর বয়সী পোলিশ কুইন চলতি সিনসিনাতি ওপেনে সেরেনার মুখোমুখি হতে পারেন।
আর দেখা হলে কিভাবে কিংবদন্তির চোখে চোখ রাখবেন, সেটি ভেবে পাচ্ছেন না! শুধু বুঝতে পারছেন, শ্রদ্ধায়-ভালবাসায় চোখ নামিয়ে নেবেন, ‘আমি কিছুটা লাজুক প্রকৃতির। সিনসিনাতিতে নিশ্চই সেরেনার সঙ্গে অনেক মানুষ থাকবে। আমি কিভাবে তার দিকে তাকাব ভেবে পাচ্ছি না। চোখ নিচু হয়ে আসবে।’
সুইয়াটেক আরও বলেন, ‘সত্যি আমি বেশ লাজুক। তার (সেরেনা) সামনে কিন্ডার গার্ডেনের বাচ্চার মতো। ছোটবেলা থেকেই যার খেলা মুগ্ধ হয়ে দেখেছি। যিনি টেনিসের অবিসংবাদিত এক ব্যক্তিত্ব। জীবনের শেষ নিশ্বাসের আগে হলেও এমন একজনের সঙ্গে খেলতে পারা সৌভাগ্যের। যে কোন পর্যায়ের টেনিস হলেও সেই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। নেটের অপরপ্রান্ত থেকে বল ও র্যাকেটের পরিবর্তে আমি হয়তো তার মুখের দিকেই তাকিয়ে থাকব! কারণ, আমি তাকে প্রচ- ভালবাসি।’ রোলা গারোর ডাবল চ্যাম্পিয়ন (২০২০, ২০২২) সুইয়াটেক কার্যত উড়ছেন।
এই মৌসুমে টানা ৩৭ ম্যাচে জয়ের ধারায় থাকা পোল্যান্ড তারকা তার ক্যারিয়ারে সিনসিনাতিতে মোট চারটি ম্যাচ খেলেছেন, যেখানে সেরা সাফল্য ২০১৯-এ প্রথম রাউন্ড টপকে যাওয়া। সেই তিনি এখন টেনিসে সময়ের অন্যতম বড় মুখ। তবে কখনোই যে সেরেনাকে ছাড়িয়ে যেতে পারবেন না, সেটি ঠিকই বুঝতে পারছেন। কিংবদন্তির জন্য তাই এত বিনয়। মুগ্ধতা নিয়ে অপেক্ষা। সম্প্রতি ফ্যাশন ম্যাগাজিন ভোগে লেখা এক কলামে অবসরের আগাম ঘোষণা দেয়ার পর কানাডা ওপেন ছিল সেরেনার প্রথম টুর্নামেন্ট। সেখানে দ্বিতীয় পর্বে বেলিন্ডা বেনচিচের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হতাশ করেছেন। টোকিও অলিম্পিকের স্বর্ণপদকজয়ী বেনচিচ ৬-২ এবং ৬-৪ গেমে পরাজিত করেন বিশ্ব টেনিস র্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান সেরেনাকে।
যার ফলে কানাডা ওপেনের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় নিতে হয় উইলিয়ামস পরিবারের ছোট মেয়েকে। কোর্টেই হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায় ৪০ বছরের টেনিস তারকাকে। একটা সময় কোর্টের মধ্যেই বসে পড়েন সেরেনা। ম্যাচ শেষে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। শুধু এককে ২৩টি গ্র্যান্ডস্লামই সেরেনার একমাত্র অর্জন নয়। বড় বোন ভেনাস উইলিয়ামসের সঙ্গে জুটি বেঁধে মেয়েদের ১৪টি গ্র্যান্ডস্লাম ডাবলস শিরোপাও জিতেছেন।
এ ছাড়া অলিম্পিকে সোনার পদক জিতেছেন চারবার- একক (২০১২), ডাবলস (২০০০, ২০০৮, ২০১২)। উল্লেখ্য, প্রায় ২৩ বছর আগে ১৯৯৯ সালের ইউএস ওপেন জয়ের মধ্য দিয়ে টেনিসে নিজের আগমনী বার্তা দেন সেরেনা। পরে এই টুর্নামেন্টে আরও পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। এ ছাড়া সাতবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, তিনবার ফ্রেঞ্চ ওপেন ও সাতবার জিতেছেন উইম্বলডন। এবার ইউএস ওপেন দিয়েই ইতি টানছেন সেরেনা।