
বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ফুটসালের নতুন কোচ ইরানের সাঈদ খোদারাহমিকে (ডান থেকে দ্বিতীয়) পরিচয় করিয়ে দেন ফেডারেশন সভাপতি তাবিথ আউয়াল (মাঝে)
অনেক টানাপোড়েনের পর অবশেষে এশিয়া কাপের আয়োজন নিয়ে শঙ্কা কেটে গেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে প্রতিযোগিতাটির সপ্তদশ আসর। আয়োজনের সত্ব ভারতের। আট দলের আসরে ‘এ’ গ্রুপে ভারত, পাকিস্তান, ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। বাংলাদেশ পড়েছে ‘বি’ গ্রুপে। যেখানে প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও হংকং। এশিয়া কাপের গত আসর ওয়ানডেতে হলেও এবার হবে টি২০ সংস্করণে।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১১ সেপ্টেম্বর হংকংয়ের বিপক্ষে লড়বে বাংলাদেশ। একদিন বিশ্রামের পর ১৩ সেপ্টেম্বর মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার। আফগানিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচটি ১৬ সেপ্টেম্বর। গ্রুপের সেরা দুইয়ে থাকলে পাবে সুপার ফোরে খেলার সুযোগ। সাদা চোখে দেখলে সহজ গ্রুপেই পড়েছে বাংলাদেশ। সহযোগী সদস্য হংকং হয়তো দুর্বল তবে আমিরাতের কন্ডিশনে আফগানিস্তান শক্ত প্রতিপক্ষ। শ্রীলঙ্কাকেও অনায়াসে হারানোর মতো দল হয়ে ওঠেনি বাংলাদেশ। সুতরাং লিটন দাসদের জন্য চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে।
এশিয়া কাপে ভারত পাকিস্তানের একই গ্রুপে পড়াটা যেন রেওয়াজই বনে গেছে। তবে পরিস্থিতির কারণে সেটা এবার হচ্ছে না বলেই মনে হচ্ছিল। কিন্তু আলাদা আলাদা গ্রুপে নয়, বরাবরের মতো ভারত পাকিস্তান একই গ্রুপে খেলতে চলেছে এবারের এশিয়া কাপে। যার ফলে এবার ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হতে পারে অন্তত দুবার, এমনকি তিন বারও গড়াতে পারে মাঠে। এবারের আসর ভারতে হওয়ার কথা ছিল। তবে ভারত-পাকিস্তানের শীতল সম্পর্কের কারণে সেটা নিরপেক্ষ ভেন্যুতে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ভেন্যু হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) এক বৈঠকে বিসিসিআইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট রাজীব শুক্লা ভার্চুয়ালি যোগ দেন এবং সেখানে এশিয়া কাপ আরব আমিরাতে আয়োজনের বিষয়ে সম্মত হয় সবাই। এর ফলে গ্রুপ পর্বে একবার, সুপার সিক্সে আবার এবং যদি দুই দলই ফাইনালে ওঠে তা হলে তৃতীয়বার মুখোমুখি হতে পারে তারা। এর আগেও একবার এ রকম পরিস্থিতি হয়েছিল। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে পাকিস্তানে হওয়ার কথা থাকলেও বিসিসিআই ভারতকে সেখানে পাঠাতে অস্বীকৃতি জানায়।
পরে হাইব্রিড মডেলে টুর্নামেন্ট হয়, যেখানে ভারতের সব ম্যাচ হয়েছিল দুবাইয়ে। সেমিফাইনাল ও ফাইনালও তারা খেলেছিল দুবাইতেই। তেমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ঠেকাতেই এবারের এশিয়া কাপ নিয়ে যাওয়া হয়েছে আমিরাতে। ১৪ সেপ্টেম্বর হাইভোল্টেজ লড়াইয়ে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান। বরাবরের মতো এবারও এশিয়া কাপে বাড়তি ‘সুবিধা’ পাচ্ছে ভারত।
পাকিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে তিন দিনের বিরতি পাচ্ছে তারা। ১০ সেপ্টেম্বর প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে আমিরাতের। ওমানের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচটি খেলবে ১৯ সেপ্টেম্বর। এর আগে পাচ্ছে ৪ দিনের বিরতি। সুপার ফোর পর্ব শুরু ২০ সেপ্টেম্বর থেকে। ২৮ সেপ্টেম্বর মাঠে গড়াবে ফাইনাল। দুবাই ও আবুধাবিতে হওয়ার কথা রয়েছে টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো। গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় হয়েছে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)।
সভায় ১৩ দেশের ২৫ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ কর্তারা না এলেও তাঁরা যুক্ত হয়েছিলেন ভার্চুয়ালি। শ্রীলঙ্কাও ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিল সভায়। সভায় অংশ নিতে ভারত-শ্রীলঙ্কাকে সভায় রাজি করানোর পেছনে বিসিবির বিশেষ অবদান রয়েছে বলে শোনা যায়। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ভূরাজনৈতিক ও কূটনৈতিক টানাপোড়েনের কারণে এশিয়া কাপের সূচি আটকে ছিল এত দিন।
আসন্ন এশিয়া কাপ সরাসরি দেখাবে সনি স্পোর্টস নেটওয়ার্ক। এশিয়া কাপ নিয়ে টিভি চ্যানেল সনি লিভ এর বিজ্ঞাপনে সাকিব আল হাসানের ভিডিও ক্লিপ দেখিয়ে বলা হয়, সবচেয়ে বড় স্টার। এবারের আসর হবে টি২০ সংস্করণে। তবে সাকিব আন্তর্জাতিক টি২০ থেকে অবসরে গেছেন গত বছর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের পথচলাটা স্থবির গত ৮ মাস ধরে। তবে বাংলাদেশের জার্সিতে যিনি অসংখ্য রেকর্ড গড়েছেন, সেরাদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন, তাঁকে কি এত সহজে ভুলে থাকা যায়! ২০২৫ এশিয়া কাপে সাকিব যেন না থেকেও আছেন।
প্যানেল হু