
মিরপুরে বৃহস্পতিবার রাতে তৃতীয় টি২০ ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উইকেট শিকারের উল্লাস বাংলাদেশের তাসকিন আহমেদ ও নাসুম আহমেদের
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি২০ সিরিজ জয়ের স্মৃতি টাটকা থাকতেই আরেকটি বড় অর্জনের সম্ভাবনা বাংলাদেশের সামনে। এই সংস্করণে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের পর দেশটিকে বাংলাওয়াশ করার হাতছানি লিটন দাসদের সামনে। আর এই ম্যাচের আগে এক মহৎ উদ্যোগের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
মাইলস্টোনে বিমান দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবার এবং ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে টাইগার ক্রিকেট বোর্ড। এদিকে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭৮ রান সংগ্রহ করেছে সফরকারীরা। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিং করছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘বাংলাদেশে ক্রিকেট কেবল একটি খেলা নয়, এটি আমাদের জাতীয় আত্মার একটি অংশ। শোক ও স্মরণের মুহূর্তে, আমাদের একটি সম্প্রদায় হিসেবে একসঙ্গে দাঁড়ানো উচিত। সম্প্রতি ঘটে যাওয় এসব মর্মান্তিক ঘটনার শিকারদের আরোগ্য প্রক্রিয়ায় সামান্য হলেও অবদান রাখতে পেরে বিসিবি গর্বিত ও কৃতজ্ঞ। ভুক্তভোগী পরিবার ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের গভীর সমবেদনা রইল।’
সিরিজের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে ধবলধোলাই করতে পারলে আরও একটি ইতিহাস গড়বে লিটন দাসের দর। এর আগে, তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজে এখন পর্যন্ত কেবল দুটি পূর্ণ সদস্য দেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে দেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম এই স্বাদ পায় তারা, তখন অধিনায়ক ছিলেন সাকিব আল হাসান। গত বছর লিটনের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ।
এ দিন উদ্বোধনী জুটিতে পরিবর্তন আনার পর যেন বদলে গেল পাকিস্তান। সিরিজে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে সফরকারীদের উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছেন সাহিবজাদা ফারহান। আরেক প্রান্তে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন সাইম আইয়ুব। দলীয় ৮২ রানে সাইম আইয়ুব ১৫ বলে ব্যক্তিগত ২১ রানে আউট হন। এরপর ইনিংসের ১১.১ ওভারে মেহেদী হাসানের শিকার ফারহান। দুই বছর পর আন্তর্জাতিক টি২০ খেলা নাসুমকে স্লগ সুইপ করতে আকাশে উঠিয়ে মেহেদী হাসানের ক্যাচ হয়েছেন ফারহান। সাজঘরে ফেরার আগে ৪১ বল খরচায় ৫টি ছক্কা ও ৬টি চারে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেন তিনি।
২২ গজে এসে একবার বিতর্কিত রিভিউ ও একবার ফিল্ডার ক্যাচ ফেলায় বেঁচে যাওয়া মোহাম্মদ হারিস টিকলেন না বেশিক্ষণ। তাসকিনের বলে ডিপ থার্ডম্যানে নাসুমের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন হারিস। ১৪ বলে মাত্র ৫ রানই করতে পেরেছেন তিনি। এরপর ক্রিজে এসে ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করেন হাসান নেওয়াজ। পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ফিরলেন শরিফুল ইসলামের বলে মেহেদী হাসানের দারুণ এক ক্যাচের শিকার হয়ে।
মিড অফে বাঁ দিকে দৌড়ে ক্যাচটি নিয়েছেন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৩ ছক্কায় ১৭ বলে ৩৩ রান করেছেন হাসান। পরের উইকেটটি পেলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। হুসেইন তালাতকে উইকেটকিপার লিটন দাসের ক্যাচ বানিয়ে বাংলাদেশকে পঞ্চম উইকেট এনে দিয়েছেন তিনি। ৪ বলে ১ রান করেছেন তালাত।
শেষ দিকে মোহাম্মদ নওয়াজ ১৬ বলে ২৭ রান করেন। সালমান আগা ৯ বলে অপরাজিত ১২ ও আফ্রিদির ১ রানে ভর করে বড় পুঁজি পায় সফরকারীরা। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন আহমেদ সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করেন। এ ছাড়া নাসুম ২টি শরিফুল ইসলাম সাইফউদ্দিন একটি করে উইকেট নেন। মিরপুরে এই সংস্করণে চতুর্থবারের মতো দেড়শ’ ছাড়াল পাকিস্তান।
সর্বশেষ ২০১৬ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৫১ রান করেছিল তারা। এ ছাড়া ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৯১ ও বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৯০ করেছিল দলটি। মিরপুরে ১৫০ ছাড়িয়ে প্রথম তিন ম্যাচেই জিতেছিল পাকিস্তান। এবার ব্যতিক্রম কিছু দেখার অপেক্ষা।
প্যানেল হু