
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যুব ওয়ানডে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচেও সেঞ্চুরির দেখা পান বাংলাদেশের উদ্বোধনী ব্যাটার জাওয়াদ আবরার
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে কোনোভাবেই থামাতে পারছে না স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সিরিজের প্রথম যুব ওয়ানডেতে লঙ্কানরা সফরকারী বাংলাদেশকে হারিয়ে যেন আরও তাতিয়ে দিয়েছে। তারপর টানা ৩ ওয়ানডেতে লঙ্কান যুবাদের পাত্তাই দেয়নি বাংলাদেশ। শনিবার কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব গ্রাউন্ডে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডেতে বাংলাদেশের যুবারা জিতেছে ১৪৬ রানের বিশাল ব্যবধানে।
এটি যুব ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবধানের জয়। এর পেছনে ছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের রেকর্ড রানের ইনিংস। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ তোলে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৩৬ রান। দেশের বাইরে এটিই যুব ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ, সবমিলিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় রান। ওপেনার জাওয়াদ আবরারের শতকে এটি সম্ভব হয়েছে।
বাংলাদেশের যুব ওয়ানডের ইতিহাসে চতুর্থ ওপেনার হিসেবে ২ সেঞ্চুরি হাঁকানোর রেকর্ড গড়েছেন। তবে প্রথম বাংলাদেশী ওপেনার হিসেবে যুব ওয়ানডেতে দেশের বাইরে দুটি সেঞ্চুরি হাঁকালেন জাওয়াদ। জবাব দিতে নেমে শ্রীলঙ্কার যুবারা ৩৮.৪ ওভারে ১৯০ রানে গুটিয়ে যায়। টানা ৩ জয়ে সিরিজে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকল বাংলাদেশ। সিরিজে আর দুটি ম্যাচ বাকি।
টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। জাওয়াদের সঙ্গে ওপেনিং জুটিতে ৪৯ রান যোগ করে কালাম সিদ্দিকী এলিন অষ্টম ওভারে সাজঘরে ফেরেন ২৪ বলে ২ চারে ১৯ রান করে। দ্বিতীয় উইকেটে আসের আরও ৩৮ রান। অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম আউট হন ৩১ বলে ২ চার, ১ ছয়ে ২৩ রানে। জাওয়াদ আরেক প্রান্ত আগলে দারুণ খেলছিলেন। তৃতীয় উইকেটে তিনি রিজন হোসেনের সঙ্গে ১৩৫ রানের বিশাল জুটি গড়ে বাংলাদেশকে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন।
জাওয়াদ যুব ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হাঁকান। ১১৫ বলে ১৪ চার, ৩ ছক্কায় ১১০ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। চলতি সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৩০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি এই ভেন্যুতেই। ফলে যুব ওয়ানডেতে বাংলাদেশের প্রথম ওপেনার হিসেবে বিদেশের মাটিতে দুই সেঞ্চুরি হাঁকানোর গৌরব দেখালেন এই তরুণ। তবে ওপেনার হিসেবে বাংলাদেশের হয়ে যুব ওয়ানডেতে ২টি করে সেঞ্চুরি আছে সাইফ হাসান, অমিত মজুমদার ও পিনাক ঘোষের।
জাওয়াদ বিদায় নেওয়ার পর রিজন সেঞ্চুরির পথে থাকলেও ৭৭ বলে ৫ চার, ৩ ছক্কায় ৮২ রানে আউট হয়েছেন ৪৪তম ওভারে। তবে তারা যে ভিত গড়ে দিয়েছেন তাতে শেষ ৬ ওভারে বাংলাদেশের যুবারা আরও ৮৫ রান তুলতে পেরেছে। মোঃ আব্দুল্লাহ ২৭ বলে ১ চার, ২ ছয়ে ৩২, সামিউন বাসির ৮ বলে ১ চার, ৩ ছয়ে ২৩ ও আল ফাহাদ ৫ বলে ২ চার, ১ ছয়ে অপরাজিত ১৯ রান করেন।
মেষ ১০ ওভারে ১১০ রান তুলে বাংলাদেশের যুবারা থামে ৮ উইকেটে ৩৩৬ রানে। ২৯০তম যুব ওয়ানডেতে বাংলাদেশের মাত্র এটি সপ্তম ৩ শতাধিক রানের ইনিংস। এর মধ্যে ৬টিই বাংলাদেশের যুবারা করেছে বিদেশে। তবে এটি বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের যুবাদের সর্বোচ্চ দলীয় রান, সার্বিকভাবে দ্বিতীয়। লঙ্কান যুবাদের বিপক্ষেই ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে ৭ উইকেটে ৩৪০ রান করেছে বাংলাদেশ। এমন বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে লঙ্কান ডানহাতি পেসার ১০ ওভারে ৯৬ রান দিয়েছেন ৩ উইকেট নিতে।
এটি কোনো লঙ্কানের পক্ষে যুব ওয়ানডেতে সবচেয়ে খরুচে বোলিংয়ের রেকর্ড। জবাবে বাংলাদেশের পেসার ফাহাদের তোপে মাত্র ৩৬ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে লঙ্কানরা। তবে অধিনায়ক ভিমথ দিনসারা ৭২ বলে ৮ চার, ১ ছয়ে ৬৬ এবং নিমসারা ২৯ বলে ৫ চার, ১ ছয়ে ৩৯ রান করলেও বড় হার ঠেকাতে পারেনি লঙ্কান যুবারা। ৩৮.৪ ওভারে তারা ১৯০ রানে থামে।
ফাহাদ ৪১ রানে ৩টি এবং আজিজুল হাকিম তামিম ও সানজিদ মজুমদার ২টি করে উইকেট নেন। ১৪৬ রানের জয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বাধিক ব্যবধানের। ২০১৯ সালে চট্টগ্রামে তাদের বিপক্ষে ১৬১ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ।