ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

ইসরায়েলকে নরকের দুয়ার দেখানো মহাবীরের কাছেই নাকানিচুবানি খেয়েছে দখলদাররা

প্রকাশিত: ১৪:৩৯, ৪ মে ২০২৫; আপডেট: ১৪:৪১, ৪ মে ২০২৫

ইসরায়েলকে নরকের দুয়ার দেখানো মহাবীরের কাছেই নাকানিচুবানি খেয়েছে দখলদাররা

ছবিঃ সংগৃহীত

হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ও ‘অপারেশন আল আকসা ফ্লাড’-এর কমান্ডার শহীদ ইয়াহিয়া সিনোয়ার সম্পর্কে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে উঠে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি। ইসরায়েলের জনপ্রিয় পত্রিকা ইসরায়েল হাইয়োম-এর একজন বিশিষ্ট কলামিস্ট ইয়াভ লিমোর লিখেছেন, “ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার পর এত বড় বিপর্যয় আর আসেনি, এবং এই বিপর্যয়ের জন্য মূলত দায়ী ইয়াহিয়া সিনোয়ার।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, সিনোয়ার ইসরায়েলকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দিয়েছেন। প্রথমত, শত্রুর কথার ওপর নয়, বরং তাদের বাস্তব সক্ষমতা দেখে মূল্যায়ন করতে হয়। দ্বিতীয়ত, গাজার যোদ্ধারা স্যান্ডেল পরলেও তারা অত্যন্ত প্রশিক্ষিত, বিপজ্জনক এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তারা খুবই কৌশলী।

ইসরায়েলের সাবেক মেজর জেনারেল বলেছেন, হামাস এখন গেরিলা যুদ্ধের কৌশল প্রয়োগ করছে, আর ইসরায়েল এখনো পুরনো পদ্ধতিতে যুদ্ধ করছে, যা বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে।

এই মন্তব্যগুলো এসেছে এমন এক সময়, যখন হামাস গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে এবং ঘোষণা দিয়েছে যে তারা যেকোনো আক্রমণের জবাব দিতে প্রস্তুত।

২০২৪ সালের ১৮ই অক্টোবর হামাস ঘোষণা দেয়, তাদের রাজনৈতিক ব্যুরো প্রধান ও অপারেশন আল আকসা ফ্লাডের কমান্ডার ইয়াহিয়া সিনোয়ার শহীদ হয়েছেন। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি কোনো সুড়ঙ্গে লুকিয়ে ছিলেন না। বরং গাজার রাফা এলাকার তাল আল সুলতান শরণার্থী শিবিরে এক সাধারণ ঘরে অন্যান্য যোদ্ধাদের সঙ্গে থেকে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

তার হাতে ছিল রাইফেল, গ্রেনেড ও গুলিভর্তি জ্যাকেট। তিনি গুলি ছুড়েছেন, গ্রেনেড ছুড়েছেন এবং শত্রুর অগ্রগতি রুখে দিয়েছেন। পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠলে ইসরায়েলি বাহিনী প্রথমে ট্যাংক থেকে গুলি ছোড়ে, পরে ড্রোন পাঠানো হয়। দেখা যায়, ধূলায় ঢাকা রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি তখনো জীবিত ছিলেন। তার মাথায় ছিল কিফায়া, যা মূলত নিজের পরিচয় আড়াল করতে পরেছিলেন। সে সময় তার হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না, কেবল একটি লাঠি ছিল যা তিনি ড্রোনের দিকে ছুড়ে মারার চেষ্টা করেন। এরপর ইসরায়েল আবারও ঐ ঘরে বিমান হামলা চালায় এবং সেই হামলাতেই শহীদ হন ইয়াহিয়া সিনোয়ার।

তার মৃত্যু ছিল একজন সত্যিকারের যোদ্ধার মতো। শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত তিনি লড়াই চালিয়ে গেছেন।

ইয়াহিয়া সিনোয়ারের শহীদ হওয়া হামাসের জন্য একটি বড় ধাক্কা হলেও, তার সংগ্রাম ও মৃত্যু প্রতিরোধের প্রতীক হয়ে উঠেছে। ইসরায়েলি বিশ্লেষকরাও এখন স্বীকার করছেন—সিনোয়ার তাদের ভুল ভেঙে দিয়েছেন। শত্রুকে অবমূল্যায়ন করা কতটা বিপজ্জনক হতে পারে, তা এখন পরিষ্কার। তার মতো নেতৃত্ব একদিকে যেমন কৌশলী, তেমনি সাহস ও আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত।

তথ্যসূত্রঃ https://youtu.be/Wlmo3KdpXvE?si=Ea8tsd0OnyW4K9Ov

মারিয়া

আরো পড়ুন  

×