
ছবিঃ সংগৃহীত
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫-এ যুক্ত হওয়া নতুন একটি ধারা—ধারা ৯(খ)—কে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পুরুষ কোনো নারীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং পরবর্তীতে সে প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করেন, তবে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত সশ্রম কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড কিংবা উভয়দণ্ড প্রদান করা যাবে।
রিটটি দায়ের করেন ফোর ম্যান ফাউন্ডেশন এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ রাশিদুল হাসান। তারা এই ধারা অবৈধ ও সংবিধান পরিপন্থী দাবি করে তা বাতিলের আবেদন জানান।
আজ রোববার বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি সৈয়দ মো. তাজুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করে জানতে চেয়েছেন, কেন এই ধারা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না এবং কেন এটিকে বাতিল করা হবে না।
রিটকারী আইনজীবী আদালতে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, এই ধারা বৈষম্যমূলক, কারণ এতে শুধুমাত্র পুরুষদের শাস্তির বিধান রয়েছে। অথচ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ উভয় পক্ষই করতে পারে—নারী কিংবা পুরুষ। কিন্তু আইনটিতে নারীর কোনো দায় বা শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়নি, যা সংবিধানের সমতা ও ন্যায়বিচারের নীতির পরিপন্থী।
তারা আরও যুক্তি দেন, এই ধারা একটি পক্ষকে আইনের অপব্যবহার করে অন্য পক্ষকে হয়রানি করার সুযোগ করে দিতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বিবাহিত কোনো নারী যদি প্রতারণার মাধ্যমে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং পরবর্তীতে বিয়ের প্রতিশ্রুতির অজুহাত দেন, সেটিও তো প্রতারণা, কিন্তু এই আইনে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
রিটকারীরা স্পষ্ট করেন, তারা এই ধারার সম্পূর্ণ বাতিল চাচ্ছেন, শুধুমাত্র পুরুষদের শাস্তির বিধান রেখে একটি একতরফা আইন রাখা সংবিধান পরিপন্থী।
এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য তারিখ পরে নির্ধারিত হবে।
মারিয়া