ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

একজীবনে ২৫ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে প্যাঁচা

প্রকাশিত: ২০:২৭, ৪ মে ২০২৫

একজীবনে ২৫ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে প্যাঁচা

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অনেক গ্রামীণ সমাজে এখনো প্যাঁচার ডাককে অশুভ সংকেত হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু প্রকৃতি পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বিজ্ঞানীরা ধারণা নাকচ করে দিয়েছেন বহু আগেই। তাঁদের মতে, প্যাঁচা কোনোভাবেই অশুভ নয়বরং পরিবেশ কৃষি অর্থনীতিতে এর রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

প্যাঁচার চোখের গভীর দৃষ্টি আর রহস্যময় উপস্থিতি হয়তো অনেকের মনে ভয়ের সঞ্চার করে, কিন্তু এই পাখিটি আমাদের কৃষি পরিবেশকে যে নিঃশব্দে রক্ষা করে চলেছে, তা জানলে অবাক হতেই হয়।

ইঁদুর দমন করে কোটি টাকার ফসল রক্ষা করে

ধান চাষীদের অন্যতম বড় শত্রু হলো ইঁদুর। প্রতিবছর এই ক্ষুদ্র প্রাণীটির কারণে ধ্বংস হয় কোটি কোটি টাকার ফসল। অথচ একেকটি প্যাঁচা সারাজীবনে খেয়ে ফেলে হাজার হাজার ইঁদুর। ২০১০ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, একটি প্যাঁচা তার জীবদ্দশায় প্রায় ২৫ লাখ টাকার ফসল রক্ষা করে। ২০২৪ সালে এসে পরিমাণ যে আরও বেড়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

জলজ পরিবেশেও রাখছে অবদান

শুধু জমিতে নয়, জলাশয়ের কাছাকাছি বসবাসকারী কিছু প্রজাতির প্যাঁচা অসুস্থ মাছ খেয়ে জলজ সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। এতে জলজ জীববৈচিত্র্য রক্ষা পায় এবং মাছচাষে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কা কমে।

প্রাকৃতিক বালাইনাশক হিসেবে প্যাঁচা

প্যাঁচা শুধু ইঁদুরই নয়, ফসলের জন্য ক্ষতিকর নানা পোকার শিকার করে। এর ফলে ফসলে বিষাক্ত বালাইনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন অনেক কমে আসে। এতে যেমন ফসলের গুণগত মান বজায় থাকে, তেমনি মানুষের স্বাস্থ্যও রক্ষা পায়।

সংকটে প্যাঁচার অস্তিত্ব

তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, শিল্পায়ন, নগরায়ন, বন উজাড় এবং বিষাক্ত ইঁদুর খাওয়ার ফলে প্যাঁচার সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এখন আর আগের মতো সহজে দেখা মেলে না এই প্রকৃতির প্রহরীর।

প্যাঁচাকে বাঁচাতে চাই সচেতনতা সহানুভূতি

প্রকৃতি প্রতিটি প্রাণীর মধ্যে রেখে দিয়েছে কোনো না কোনো উপকার। প্যাঁচাও তার ব্যতিক্রম নয়। আমাদের অজ্ঞতা কুসংস্কারের কারণে আমরা একটি উপকারী প্রাণীকে ভুলভাবে মূল্যায়ন করছি, এমনকি ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছি।

 

সূত্র: https://www.facebook.com/share/v/192DgJ2D4e/

রবিউল

×