ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ

যোগ্য-ত্যাগীদের নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার শপথ

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:০১, ৪ মে ২০২৫

যোগ্য-ত্যাগীদের নিয়েই এগিয়ে যাওয়ার শপথ

বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ

দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিতে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে নতুন একটি সংগঠনের। যার নাম ‘বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশন’। শনিবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অডিটরিয়ামে ৪৪ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে জায়গা হয়েছে দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগের দীর্ঘদিন বঞ্চিত ও ত্যাগী ক্রীড়া সংগঠকদের।

প্রধান অতিথি হিসেবে এই সংগঠনের আত্মপ্রকাশকে সাফল্যম-িত করেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি, ফিফা টেকনিক্যাল কমিটির সাবেক মেম্বার, সাবেক তারকা ফুটবলার ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব) হাফিজউদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম)। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হকের সভাপতিত্ব এবং সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল ফুয়াদ রেদোয়ানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া সংগঠক ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, ক্রীড়া সংগঠক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, ব্রাদার্স ইউনিয়নের আহ্বায়ক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল, ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম কাজী মহিউদ্দিন বুলবুল, হকির সাবেক অধিনায়ক সাজেদ এএ আদেল প্রমুখ।
শনিবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেজর (অব) হাফিজ বলেন, ‘নির্বাচন করার আগে পরামর্শ নিতে আমার বাসায় এসেছিল বিশ্বসেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। আমি তাকে বলেছিলাম, তুমি এখনো অবসরে যাওনি; তাই নির্বাচন করো না।

কারণ আওয়ামী লীগ বেশিদিন টিকবে না। আমার কথা শোনেনি সে। নইলে আজ ক্রিকেটের বাইশগজে বীরদর্পে চলাফেরা করতে পারত সাকিবএ।’ হাফিজ আরও যোগ করেন, ‘আমি আশা করব, এই সংগঠন দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে অনেকদূর নিয়ে যাবে। খেলাধুলার শ্রীবৃদ্ধি ঘটাবে।’ 
দেশের ফুটবল ক্লাবগুলোর নাম পরিবারের নামে করা হয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘বিদেশের প্রত্যেকটি ফুটবল দলের নাম ওই শহরের নামে। যেমন লিভারপুল, বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদের নাম হয়েছে ওই শহরের নামে। অথচ আমাদের দেশে ক্লাবের নাম হয়েছে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেলের নামে। দেশের খেলাধুলা তাহলে কিভাবে এগোবে?’
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ক্রীড়া সংগঠক আবদুস সালাম বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র তামিম ইকবাল। কিন্তু শুধুমাত্র দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণেই জাতীয় দল থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। যদিও বিএনপি কখনোই দলীয়করণ করেনি। আমিও ক্রিকেট বোর্ডের কাউন্সিলর ছিলাম। ওই সময় দলীয়করণ করা হয়নি। যার প্রমাণ গাজী গোলাম দস্তগীরও (বীর প্রতীক) নির্বাচিত হয়ে এসেছিলেন। ফুটবলের কাজী সালাউদ্দিনকে আমরাই নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু সে বিদায় নেওয়ার পর আজ পর্যন্ত ফুটবলে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে পারেনি।’
জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল বলেন, ‘সম্প্রতি জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কমিটি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। বাদ পড়েছেন ত্যাগী ও দক্ষ সংগঠকরা। তাই ক্রীড়া সংগঠক অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের আহ্বান জানাচ্ছি যে, প্রত্যেকটি জেলা ও বিভাগে যে কমিটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সবাই জেলা প্রশাসকের কাছে যাবেন, যাদেরকে দিয়ে কাজ হবে তাদেরকে নিয়ে কমিটি পাঠাবেন। ক্রীড়াঙ্গনের যে সব জায়গায় দুনীতি হয়েছে যারা করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করুন। তাদের বিচার হবে। দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত বাফুফের সাবেক সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনেরও বিচার হবে।’ 
ব্রাদার্স ইউনিয়নের আহ্বায়ক ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ইশরাক হোসেনের কথা, ‘বাংলাদেশের ক্রীড়াকে আপনারা এগিয়ে নিয়ে যাবেন। দেশের যুব সমাজকে মাদকের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করবেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের দলগুলোকে ভালো ফল বয়ে আনতে সহায়তা করবেন- এটাই আপনাদের কাছে আমার চাওয়া। বিএনপিকে বাদ দিয়ে মন্ত্রণালয়ে বসে প্রতিনিধি নির্ধারণ করলে তা বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না।’ 
শেষে ক্রীড়া সংগঠক শরিফুল আলমকে আহ্বায়ক করে এবং সৈয়দ আমিনুল হক দেওয়ান সজলকে সদস্য সচিব করে বাংলাদেশ জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের ৪৪ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির ঘোষণা দেন যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মহিউদ্দিন বুলবুল।

×