
স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড লামিনে ইয়ামাল ও ইংলিশ মিডফিল্ডার জুড বেলিংহাম
চূড়ান্ত পরিণতির পথে ‘উয়েফা ইউরো ২০২৪’। বার্লিনের ঐতিহাসিক অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ইউরোপিয়ান মহাদেশের ফুটবলে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে মুখোমুখি স্পেন ও ইংল্যান্ড। কে হাসবে শেষ হাসি, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, উন্মাদনার ফাইনালে পার্থক্য গড়ে দেবেন কে? সমান ৩টি করে গোল করে আসরে যৌথভাবে শীর্ষে ইংলিশ ক্যাপ্টেন হ্যারি কেন ও স্প্যানিস লেফট-উইঙ্গার দানি ওলমো। গোল সংখ্যা দিয়ে হয়তো রেকর্ড সংরক্ষণ করা যায়, কিন্তু একজন ফুটবলারের মাহাত্ম্য তুলে ধরা যায় না।
এবারের ইরোতেই যেমন বিশ্ব ফুটবলের অপার বিস্ময় হয়ে হাজির হয়েছেন লামিনে ইয়ামাল ও জুড বেলিংহাম। ‘টাফ’ প্রতিপক্ষ ফ্রান্সের বিপক্ষে শুরুতেই পিছিয়ে পড়েছিল স্পেন। ২১ মিনিটে দর্শনীয় গোলে দলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন ১৭ বছরের ‘বালক’ ইয়ামাল। অন্যদিকে থ্রি-লায়ন্সদের হয়ে এ পর্যন্ত ২ গোল করা ২১ বছর বয়সী বেলিংহামও সমানে দ্যুতি ছড়িয়ে চলেছেন।
সম্প্রতি একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায় ছোট্ট ইয়ামালকে গোসলের সময় আদর করে দিচ্ছেন লিওনেল মেসি, নিয়েছেন কোলে তুলে। ৬ মাস বয়সী ইয়ামালের সেই ছবি ২০০৭ সালের। চ্যারিটি ক্যালেন্ডারেরর জন্য ইউনিসেফের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ছবি তোলার কাজটি ছিল কাতালান পত্রিকা দিয়ারিও স্পোর্ট। ডান প্রান্তে বার্সিলোনার হয়ে বাঁ-পায়ের উইঙ্গার হিসেবে চোখ জুড়ানো পারফরম্যান্সে মেসির সঙ্গে তার তুলনা চলতে থাকে শুরুতেই।
২০২৩ সালে ১৫ বছর বয়সে বার্সায় অভিষেকের পর গত মৌসুমে ৫০টি ম্যাচ খেলেছেন। সেখানে আলো ছড়িয়ে ডাক পেয়েছেন স্পেন জাতীয় দলে। চলতি ইউরোর সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে নাম লিখিয়েছেন। শুধু কি তাই? সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে গোলদাতাও হয়ে গেছেন মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে! টুর্নামেন্টজুড়ে দুর্দান্ত খেললেও গোলটাই পাওয়া হচ্ছিল না। সেমিফাইনালের মঞ্চটাকে নিজের করে নিতেই যেন সবাইকে অপেক্ষায় রেখেছিলেন।
অবশেষে ২১ মিনিটে দেখা মেলে বহুল প্রতীক্ষিত ইয়ামাল-জাঁদু। স্পেনের আক্রমণের ধারায় ইয়ামাল বলটি পান বক্সের কিছুটা বাইরে। ২৫ মিটার দূর থেকেই চার ডিফেন্ডারকে হতভম্ব করে অবিশ্বাস্য এক শটে বাঁ-পাশের ওপরের কোনা দিয়ে বল জালে জড়ান ইয়ামাল। অনেক অনেক দিন মনে রাখার মতো এক গোল! এই গোলে ইউরোতে নতুন এক ইতিহাস লেখেন প্রতিভাবান এ উইঙ্গার। ইয়ামালই এখন ইউরোতে ১৬ বছর বয়সে গোল করা একমাত্র ফুটবলার। পাশাপাশি এই গোলে ইউরো ও বিশ্বকাপ মিলিয়ে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা হলেন ইয়ামাল (১৬ বছর ৩৬২ দিন)।
এর আগে ১৯৫৮ বিশ্বকাপে ১৭ বছর ২৩৯ দিনে গোল করেছিলেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবল সম্রাট পেলে। ইয়ামাল না চাইলেও ভক্তরা এখনই তাকে মেসির সঙ্গে তুলনা করছেন। জাতীয় জার্সিতে ১৩ ম্যাচে করেছেন ৩ গোল, বার্সার হয়ে ৩৮ ম্যাচে ৫। অন্যদিকে লা-লিগা প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ২৮ ম্যাচে ১৯ গোল করেছেন মিডফিল্ডার বেলিংহাম। ইংল্যান্ডের হয়ে ৩৫ ম্যাচে ৫। গত বছরই ব্যালন ডি’অরে সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কারের ‘কোপা ট্রফি’ এবং ২০২৩ ‘গোল্ডেন বয়’ পুরস্কারজয়ী বেলিংহাম এখন ইংলিশ ফুটবলের ‘সোনার ছেলে’।