ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১

বাংলাদেশের প্রাপ্তি রিশাদ

প্রকাশিত: ২২:৫৮, ২১ জুন ২০২৪

বাংলাদেশের  প্রাপ্তি রিশাদ

.

প্রিয় পাঠক, সুপার এইটে বাংলাদেশ দলের আসল চরিত্র বের হয়ে গেছে! উইকেটের সহায়তায় গ্রুপ পর্বে তিনটি ম্যাচ জিতলেও তাতে ব্যাটারদের তেমন অবদান ছিল না। শুধু কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে বোলারদের কল্যাণে জিতেছে দল। সুপার এইটে স্পোর্টিং উইকেটে খেলা হওয়ায় বাংলাদেশ দলের কঙ্কালসার চেহারা বের হয়ে এসেছে। আমি বারবার বলে আসছি, টি২০ ব্যাটারদের খেলা। এখানে ভালো করতে হলে ব্যাটারদের বুক চিতিয়ে ব্যাটিং করতেই হবে। কিন্তু শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আমরা সেই চিরাচারিত ব্যাটিং ভরাডুবি দেখেছি। টপঅর্ডার ম্যাচে রানে ফিরলেও মিডলঅর্ডার ব্যর্থ হয়েছে। রান বড় করতে পারেনি। আরও ২০/৩০ রান আসলে হয়তো লড়াইটা করা সম্ভব হতো। 

ব্যাটিংয়ে একটি ম্যাচেও দল প্রত্যাশা মেটাতে পারেনি। সবার মতো আমিও বলে আসছি, ব্যাটাররা ভালো না করলে বড় সাফল্য সম্ভব না। অজিদের বিরুদ্ধে সেই একই ব্যর্থতার পুনরাবৃত্তি হয়েছে। ব্যতিক্রম কিছুটা অধিনায়ক শান্ত। সে রানে ফিরেছে। হৃদয় বরাবারের মতো রান করেছে। কিন্তু বাকিদের অবস্থা যাচ্ছেতাই। আজ আবার ভারতের বিরুদ্ধে একই মাঠে খেলতে হবে। আমাদের দলের স্কিল, সামর্থ্যরে ব্যবধানটা আবারও পরিষ্কার হয়েছে। বড় দলের সঙ্গে এই দূরত্বটা অনেক বছর বয়ে বেড়াচ্ছি আমরা। যেটা এক জায়গায় আটকে আছে, অতিক্রম করতে পারছে না বাংলাদেশ। পরের ধাপে যেতে পারছে না দল। তাইতো ১৮০-১৯০ রানের উইকেটে ১৪০ রান হয়। রানের কোষাগারও দ্রুত খালি হয়ে যায় প্রতিপক্ষের আগুনে বোলিংয়ে। অজিদের বিরুদ্ধে ক্লোজ ম্যাচ ছিল না। তাই কোনো ব্যাটার-বোলারকে দায়ী করা অনর্থক মনে হয়। বরং এখানে গভীরভাবে দেখতে হবে অনুধাবন করতে হবে বড় দলের সঙ্গে দৃশ্যমান শক্তিমত্তার পার্থক্য।

প্রিয় পাঠক, আপনার সেরা সেরা সেরা দিন এবং বড় দলের বাজে দিনকে অবলম্বন করে বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে কিছু পাওয়া যায় না। বলার মতো তেমন কিছু অর্জন করতে হলে দল হিসেবে আরও অনেকটা উন্নতির সিঁড়ি মাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ক্রিকেটারের ব্যক্তিগত দক্ষতার উন্নতি। দলের জন্য খেললেও ব্যাটিং উইকেটে কিন্তু একাই স্টার্ক-কামিন্সদের জবাব দেন। ওয়ান টু ওয়ান সেই দ্বৈরথে যখন ধারাবাহিকভাবে দাপুটে ছবির দেখা মিলবে, তখন আশা করি ম্যাচ হেরেও না পাওয়ার আফসোস প্রবল হবে। পাওয়ার নেশাটা তীব্রতর হবে। এরপরও বলব এবারের বিশ্বকাপটা এখন পর্যন্ত আমাদের জন্য সফল। কেননা সুপার এইটে খেলার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনকে পাওয়া। এটাই এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা প্রাপ্তি হিসেবে থাকবে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও বাংলাদেশের পাওয়া দুটি উইকেটই নিয়েছে রিশাদ।

অজিদের বিরুদ্ধে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন দেখে অবাক হয়েছি। রিশাদকে হঠাৎ করে চারে খেলানো হলো। এখানে কিন্তু মাহমুদুল্লাহকে পাঠানো যেত। সে ইনফর্ম ব্যাটার অথচ সে বেশি সময় ব্যাটিং করার সুযোগ পাচ্ছে না। বোলাররা আমি বলব এখন পর্যন্ত ভালো করে চলেছে। শেষ দুটি ম্যাচও আমাদের জন্য কঠিন। তবে সেরাটা খেলতে পারলে ভালো কিছু সম্ভব। আফগানিস্তান আমাদের টার্গেট করবে। কেননা তারাও ্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে যেতে চাইবে। ভারতের বিরুদ্ধে সবসময়ই আমাদের ছেলেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে। এবারও চাইব যেন জিততে পারে।

অনুলিখন : জাহিদুল আলম জয়।

×