ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

শিরোপার লড়াইয়ে ম্যানচেস্টার ডার্বি

এফএ কাপের ফাইনালে ইউনাইটেড

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৫০, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

এফএ কাপের ফাইনালে ইউনাইটেড

কভেন্ট্রি সিটির বিপক্ষে জয় উদ্যাপন করছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ফুটবলাররা

এফএ কাপের সেমিফাইনালে বড় অঘটন থেকে রক্ষা পেল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ওয়েম্বলিতে শেষ চারের লড়াইয়ে রেড ডেভিলদের সঙ্গে ৩ গোল হজম করেও শেষ পর্যন্ত ৩-৩ ব্যবধানের সমতায় ফিরে কভেন্ট্রি সিটি।  এর ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও একই ফলাফল হলে শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি শ্যূটআউটে ৪-২ গোলে জিতে এফএ কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করে এরিক টেন হ্যাগের দল। শিরোপার লড়াইয়ে এখন তাদের প্রতিপক্ষ নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটি। একদিন আগেই যারা চেলসিকে বিদায় করে ফাইনালের টিকিট কাটে। দ্বিতীয় টায়ারের দল কভেন্ট্রি। 

তাদের বিপক্ষে তাই স্বাভাবিকভাবেই ফেভারিটের ট্যাগ গায়ে মাখা ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। শুরুটাও করেন ঠিক সেভাবেই। ঐতিহ্যবাহী ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে এদিন ৫৮ মিনিটের মধ্যেই যে  ৩-০ গোলে লিড নিয়ে নেয় এরিক টেন হ্যাগের শিষ্যরা! টুর্নামেন্টের ১২ বারের চ্যাম্পিয়ন ইউনাইটেড ২৩ মিনিটে ডানদিক দিয়ে ম্যাকটোমিনের দারুণ ফিনিশিংয়ে এগিয়ে যায়। এরপর অবশ্য মার্কাস রাশফোর্ডের একটি শট দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন কভেন্ট্রির গোলরক্ষক ব্র্যাডলি কলিন্স।

কিন্তু প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে ফার্নান্দেসের ক্রস থেকে ম্যাগুয়েরের হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ইউনাইটেড। ফলে ২ গোল হজম করেই বিরতিতে যায় কভেন্টি। শুধু তাই নয়? দ্বিতীয়ার্ধের ৫৮ মিনিটে ফার্নান্দেসের ডিফ্লেকটেড শট কলিন্সকে পরাস্ত করলে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় রেড ডেভিলরা। ফলে কভেন্ট্রির ফিরে আসার স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে যায়। কিন্তু ম্যাচের নাটকীয়তা যেন তখনো বাকি। বড় ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়েনি দ্বিতীয় টায়ারের দলটি।

ম্যাচের ৭১ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় ফ্যাবিও টাভেরাসের ক্রস থেকে কভেন্ট্রিকে প্রথম গোল এনে দেন দলের শীর্ষ গোলদাতা সিমস। ফলে কিছুটা স্বস্তি ফিরে কভেন্ট্রি শিবিরে। প্রথম গোল পাওয়ার পর দারুণভাবে উজ্জীবিত হয় তারা। ৮ মিনিট পরই তার প্রমাণ মিলে। এবার কভেন্ট্রিকে আরও এক গোল উপহার দেন ও’হারে। তখন সমতায় ফেরার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে তারা। এই সময়ে একের পর এক আক্রমণে ইউনাইটেড রক্ষণভাগকে ব্যস্ত করে তুলে কভেন্ট্রি। 
তখন ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে শোনা যায় শুধুই কভেন্ট্রির সমর্থকদের চিৎকার। ম্যাচের বয়স যখন ৯৫ মিনিট তখন অ্যারন ফন-বিসাকার হ্যান্ডবলে প্রাপ্ত পেনাল্টি থেকে রাইট গোল করে দলকে সমতায় ফেরান। 
ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। এই সময়ে ফার্নান্দেসের শট ক্রসবারে লেগ  ফিরে আসে। এরপর সিমসের শটও ক্রসবারে লাগলে হতাশ হতে হয় কভেন্ট্রিকে। একেবারে শেষ মুহূর্তে ভিক্টর টর্প ইউনাইটেড গোলরক্ষক আন্দ্রে ওনানাকে পরাস্ত করলেও ভিএআর প্রযুক্তিতে দেখা যায় গোলের আগে রাইট অফসাইড পজিশনে ছিল।

এই সময়ে গোল না হলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। আর সেখানেই কাসেমিরোর প্রথম শট রুখে দেন কভেন্ট্রির গোলরক্ষক কলিন্স। কিন্তু কভেন্ট্রির হয়ে ও’হারে ও অধিনায়ক বেন শিয়াফ পরে গোল করতে ব্যর্থ হয়। সেই সুযোগে হোলান্ডের গোলে ইউনাইটেডের জয় নিশ্চিত হয়। 
এমন রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ জয়ের পর খুশি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কোচ। ম্যাচ শেষে টেন হ্যাগ বলেন, ‘এটা একটি দুর্দান্ত ম্যাচ ছিল, আমার কাছে যা বিস্ময়করও বটে। লম্বা সময় ধরে আমরা ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছিলাম। এরপর ম্যাচের শেষ দিকে সব প্রতিরোধই ভেঙে যায়। পেনাল্টি শ্যূটআউটে আমরা নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছি। 
আমাদের আরও  অনেক উন্নতি করতে হবে।এটা নিয়ে আমরা প্রচুর কথা বলেছি। প্রথমে তোমাকে নিজেকে উইনিং পজিশনে নিয়ে যেতে হবে, এরপর সেটা বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে হবে।’ এদিকে কভেন্ট্রির কোচ মার্ক রবিন্স ১৯৯০ সালে এফএ কাপজয়ী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের অন্যতম নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় ছিলেন। এফএ কাপের সেই শিরোপাই ক্লাবটির সাবেক কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনকে দুই দশকের সাফল্যের ভিত গড়ে দিয়েছিল। ফাইনালে তারই সাবেক ক্লাবের কাছে হারলেও কোচ হিসেবে প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন মার্ক রবিন্স।

×