
ইউএনও বাবু অরুণ কৃষ্ণ পালের অফিসে সৌরভী আকন্দ প্রীতি
গত মার্চে নেপালে অনুষ্ঠিত সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে টাইব্রেকারে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জেতে বাংলাদেশ। গোলরক্ষক ইয়ারজান বেগম টুর্নামেন্টের শ্রেষ্ঠ গোলরক্ষকের পুরস্কার জিতে নেন। আর বাংলাদেশ ফরোয়ার্ড সৌরভী আকন্দ প্রীতি হন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। বাংলাদেশের এই দলকে গণভবনে ডেকে ঈদুল ফিতরের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবর্ধনা দেওয়ার কথা রয়েছে।
এর আগেও জাতীয় নারী দল ও জাতীয় নারী বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলকে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে মোটা অঙ্কের আর্থিক পুরস্কার দিয়েছেন ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী (সেটা কমপক্ষে জনপ্রতি ৫ লাখ টাকা করে)। তবে প্রধানমন্ত্রী সংবর্ধনা দেওয়ার আগেই বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় নারী ফুটবল দলের অনেক ফুটবলারই নিজ নিজ জেলা ইতোমধ্যেই সংবর্ধিত হয়েছেন। কিন্তু কিছু কিছু স্থানে সংবর্ধনা দেওয়ার নামে হয়েছে প্রহসন!
উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সৌরভ আকন্দ প্রীতির কথা। প্রতিভাময়ী এই ফরোয়ার্ড নেপালের মাটিতে দারুণ খেলেছেন। ৫ গোল করে আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন। ফুটবলামোদীদের মতে, সাবিনা খাতুনের অবসরের পর অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মোসাম্মৎ সাগরিকা ও অনূধ্ব-১৬ দলের সৌরভী আকন্দ প্রীতি-ই স্ট্রাইকিং পজিশনে জুটি বাঁধবেন। মোট কথাÑ এই বয়সেই সৌরভী নিজেকে সিনিয়র বা জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ স্ট্রাইকার হিসেবে যথার্থভাবে জানান দিতে পেরেছেন। দলের সম্পদ তিনি। অথচ তার সঙ্গেই কি না করা হলো তামাশা, সংবর্ধনা দেওয়ার নামে করা হয়েছে প্রহসন!
আর এমন তামাশা করেছেন ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তার নাম বাবু অরুণ কৃষ্ণ পাল। সম্প্রতি তিনি ময়মনসিংহের গর্ব-রতœ সৌরভী আকন্দ প্রীতিকে উপজেলা প্রশাসন কক্ষে ডেকে সংবর্ধনা দেন।
সংবর্ধনায় প্রীতিকে দেওয়া হয়েছে ফুলের তোড়া এবং মাত্র হাজার দুয়েক টাকা! এমন ঘটনায় অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মজা করে বলছেন, ‘দরিদ্র ইউএনও’র মহতী উদ্যোগ!’
অনেকেই মনে করতে পারেন এই ইউএনও মহাশয় হয়তো নিজের পকেট থেকে এই টাকা দিয়েছেন। আদতে তা নয়। এই টাকা সকরকারি টাকা। আর কে না জানে, বর্তমানে সরকারি কোনো সাহায্য/অনুদান/ প্রণোদনা সর্বনিন্ম ১০ হাজার টাকার কমে দেওয়া হয় না। তাহলে বাবুমশাই কোন যুক্তিতে, কিসের ভিত্তিতে নামকাওয়াস্তে সৌরভীকে মাত্র দুই হাজার টাকা দিলেন। এটা তো নিঃসন্দেহে দৃষ্টিকটু ব্যাপার। ফুটবলপ্রেমীরা বলছেন, দুই হাজার টাকার পুরস্কার দিয়ে ইউএনও সাহেব দুই লাখ টাকার মিডিয়া কাভারেজ নেওয়ার পাঁয়তারা করেছেন! তা ছাড়া এত অল্প অর্থ দিয়ে সৌরভীকে এক প্রকার অপমানই করা হয়েছে।