![ঢাকার নাইম ও শরিফুল সেরা পারফর্মার ঢাকার নাইম ও শরিফুল সেরা পারফর্মার](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2023May/Sports1-2402111647.jpg)
.
এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্ত দল দুর্দান্ত ঢাকা। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে আসর শুরু করা দলটি সবাইকে চমকে দেয়। আরও চমক তারা দেখিয়েছে একটানা ৮ ম্যাচ হেরে। বিপিএল ইতিহাসে একটানা এত ম্যাচ হারেনি কোনো দল। সবার আগে প্লে-অফে ওঠার লড়াই থেকেও ছিটকে গেছে তারা। সেজন্য অনেকেই দলটির নাম সার্থক নয়, এমনটাই বলছেন। অথচ সেই দলের ওপেনার নাইম শেখ চলতি আসরে সর্বাধিক রান সংগ্রাহক। ৯ ম্যাচে ২৬৬ রান করেছেন এ বাঁহাতি। জাতীয় দলে ফেরার দাবিও জোরালো করেছেন তিনি। আর গত বছর তিন ফরম্যাটে জাতীয় দলের হয়ে অন্যতম পারফর্মার বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম বিপিএলেও সেরা। এখন পর্যন্ত ৯ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে তিনি সবার ওপরে।
কাগজে-কলমে গড়পড়তা দল দুর্দান্ত ঢাকা। কিন্তু তারাই উদ্বোধনী ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লাকে হারিয়ে দেয়। বাঁহাতি ওপেনার নাইম ৪০ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন। কিন্তু তার আগে বল হাতে আগুন ঝরিয়ে বাঁহাতি পেসার শরিফুল ৪ ওভারে মাত্র ২৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে কুমিল্লার সর্বনাশ করে ম্যাচসেরা হন। তাদের ব্যাট-বলের এই পারফর্ম্যান্স ধারাবাহিকভাবেই দেখা গেছে। একটানা ভালো করেছেন তারা। কিন্তু ঢাকা জয়ের মুখ দেখতে পায়নি দলগতভাবে খারাপ করার কারণে। ব্যাটিংয়ে এককভাবে নাইম আর বোলিংয়ে এককভাবে শরিফুল ধারাবাহিক ছিলেন। তা দলকে জেতাতে পারেনি। তাই ঢাকা আর কোনো ম্যাচ জিতেনি। প্রথম ম্যাচে নাইম ৫২ রান করার পর বাকি ৮ ম্যাচে করেছেন- ১১ বলে ৮, ১৫ বলে ৯, ২১ বলে ৪১, ৬ বলে ২, ৩১ বলে ৪৪, ২৯ বলে ৩৬, ৪৫ বলে ৬৪ ও ১১ বলে ১০। সব মিলিয়ে ৯ ম্যাচে ২০৯ বলে ২৬৬ রান করেছেন ১২৭.২৭ স্ট্রাইকরেটে দুই হাফ সেঞ্চুরিতে। যারা জাতীয় দলের হয়ে নিয়মিত খেলেন তাদের ব্যর্থতার ভিড়েও নাইম উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে টি২০ দলের ফেরার দাবি জোরালো করেছেন। অস্ট্রেলিয়ার তারকা অ্যালেক্স রস ৮ ম্যাচে ১৮৩ রান করে ঢাকার দ্বিতীয় সর্বাধিক রান সংগ্রাহক। তিনি ১০ নম্বরে। আর ৬ ম্যাচে ২৫১ রান করে রংপুর রাইডার্সের পাকিস্তানি ব্যাটার বাবর আজম দুইয়ে এবং ৭ ম্যাচে ২৫০ রান করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের তাওহিদ হৃদয় তিনে।
ব্যাটিংয়ের মতো বোলিংয়েও একই দশা ঢাকার। বাঁহাতি পেসার শরিফুল প্রথম ম্যাচে ৪ ওভারে ২৭ রানে ৩ উইকেট নেওয়ার পর বাকি ৮ ম্যাচে- ৩.২ ওভারে ৪০ রানে ২, ৪ ওভারে ৩৫ রানে ১, ২ ওভারে ১৯ রানে শূন্য, ৪ ওভারে ২৪ রানে ৪, ৪ ওভারে ৩৫ রানে শূন্য, ৪ ওভারে ২৭ রানে ৩, ৪ ওভারে ৩২ রানে ২ এবং ৪ ওভারে ৩৬ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন। সব মিলিয়ে ৯ ম্যাচে ৩৩.২ ওভার (২০০ বল) বোলিং করে ১৬.১৭ গড় ও ওভারপ্রতি ৮.২৫ রান খরচায় ১৭ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে শরিফুল। রংপুর রাইডার্সের অফস্পিনার শেখ মেহেদি হাসান ৮ ম্যাচে ১২, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম ও রংপুরের সাকিব আল হাসান ৭ ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়ে পরবর্তী দুটি স্থানে। বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি ও ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদ ৯ ম্যাচে ৭টি করে উইকেট নিয়ে ঢাকার দ্বিতীয় সেরা বোলিং পারফর্মার।
তাদের অবস্থান ১৪। সম্মিলিত পারফর্ম্যান্স ভালো না হওয়াতেই টানা ৮ পরাজয়ের রেকর্ড গড়ে ছিটকে পড়েছে ঢাকা। পরের ৩ ম্যাচ জিতলেও ঢাকার পয়েন্ট হবে ৮। বরিশাল, খুলনা ও সিলেটের মধ্যে খেলা রয়েছে এবং যে কোনো একটি দলের পয়েন্ট ১০ হয়ে যাবে। কারণ বরিশাল ও খুলনা (উভয়ের পয়েন্ট ৮) একটি জিতলেই পয়েন্ট হবে ১০। তাই ঢাকার টিকে থাকার জন্য তাদের শুধু হারতেই হবে। তখন আবার উভয় দলের সঙ্গে খেলা থাকায় সিলেটের (এখন ৬ পয়েন্ট) পয়েন্ট হবে ১০! সেক্ষেত্রে ৪ দলের (রংপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং সিলেট) পয়েন্ট ১০ কিংবা তার বেশি হবে।