ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাবেক জাতীয় ফুটবলার জহিরুল আর নেই

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:০৭, ৭ জানুয়ারি ২০২৪

সাবেক জাতীয় ফুটবলার জহিরুল আর নেই

জহিরুল হক

মৃত্যু হচ্ছে এক দীর্ঘ নিদ্রার নাম। বলা যেতে পারে মৃত্যু হচ্ছে দ্বিতীয় ঘুম। মৃত্যু মানেই না-ফেরার দেশে চলে যাওয়া। জহিরুল হক যেমন পাড়ি জমালেন এই দেশে। আগেরদিন শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ছিল তার ৮৯তম জন্মদিন। কিন্তু সেটা ‘শুভ’ ছিল না। কারণ দিনটি পার করেছিলেন অজ্ঞান অবস্থায়, হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে। হৃদযন্ত্রের সমস্যা ছিল। এ ছাড়া শারীরিক নানা জটিলতাও ছিল। সেদিনই হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। পরিবারের সবার ক্ষীণ আশা ছিল হয়তোবা তাঁর জ্ঞন ফিরবে, হয়ে উঠবেন সুস্থ। কিন্তু সবার আশা চূর্ণ করে জন্মদিনের পরদিনই শনিবার সকালে ৫০ ও ৬০ দশকের কিংবদন্তি ফুটবলার জহিরুল পরপারে পাড়ি জমান। 
মৃত্যুকালে জহিরুল স্ত্রী ও চার ছেলে-মেয়ে রেখে গেছেন। মিরপুরের বাসার পাশে আনসার ক্যাম্পের পাশে জামে মসজিদে প্রথম এবং মণিপুরিপাড়ায় দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়। জহিরুলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবসহ অনেক ক্রীড়া সংগঠন। তাঁর প্রয়াণে মোহামেডান তাঁর প্রতি সম্মান জানিয়ে পতাকা অর্ধনমিত রাখবে। জহিরের মৃত্যুতে দেশের ফুটবলাঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। 
জহিরুলের জন্ম ১৯৩৫ সালের ৫ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। পঞ্চাশের দশকে পাকিস্তানের তুখোড় ফুটবলার ছিলেন। পূর্ব পাকিস্তান থেকে হাতেগোনা যে ক’জন ফুটবলার পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলেছিলেন, তাদেরই একজন ছিলেন এই রাইট ব্যাক। তিনি মোহামেডানের জার্সিতে খেলেছেন ১৯৬০-১৯৭৬ পর্যন্ত। ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির কিংবদন্তি ফুটবলারদের একজনও তিনি। মোহামেডানের অধিনায়ক ছিলেন পাঁচ বার।

কবির-আশরাফ-মারী ত্রয়ী যখন মাঠ মাতাচ্ছেন, সাদা-কালোর সেই দলের ডিফেন্স সামলেছেন জহির। মোহামেডানের হয়ে সাতবার লিগ জিতেছেন। মজার ব্যাপার, মোহামেডানের খেলার আগেই তিনি পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলার ডাক পান! পাকিস্তান জাতীয় দলের জার্সিতে ১৯৬১ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি ম্যাচ খেলেন মিয়ানমারের (তৎকালীন বার্মা) সঙ্গে। ১৯৬২ সালে খেলেন মালয়েশিয়ার মারদেকা কাপে। ওই বছর জাকার্তা এশিয়ান গেমসেও খেলেন।

১৯৬৪ সালে খেলেন চীনের পিকিংয়ে (এখন বেইজিং) দেশটির স্বাধীনতা দিবস টুর্নামেন্টে। ওই টুর্নামেন্টে তিনি ছিলেন পাকিস্তান দলে পূর্ব পাকিস্তানের একমাত্র খেলোয়াড়। ১৯৬৫ সালে রাশিয়ার বাকু ওয়েল মিল দলের বিপক্ষে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও করাচিতে খেলেন পাকিস্তান জাতীয় দলের জার্সিতে। পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস ফুটবলের ১৩টি ফাইনাল খেলেছেন। চারবার আগা খান গোল্ডকাপের ফাইনালও খেলেছেন। ১৯৬০ সালে পূর্ব পাকিস্তানের হয়ে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন করাচিতে স্বাগতিকদের হারিয়ে।

×