ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ কাল

ঢাকায় সিঙ্গাপুরকে হারাতে আত্মবিশ্বাসী সাবিনারা

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৪২, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

ঢাকায় সিঙ্গাপুরকে হারাতে আত্মবিশ্বাসী সাবিনারা

মারিয়া মান্ডার সঙ্গে বিজয় চিহ্ন দেখাচ্ছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন

দুই মাসেরও বেশি সময় পর আবারও আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। প্রতিপক্ষ সিঙ্গাপুর। তাদের সঙ্গে দুটি ফিফা প্রীতি ম্যাচের প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে কাল শুক্রবার। কমলাপুর স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বিকেল চারটায়।  
বাংলাদেশ দলে নতুন মুখ গোলরক্ষক স্বপ্না আক্তার জিলি এবং ফরোয়ার্ড আকলিমা খাতুন। ইনজুরির কারণে বাদ পড়েছেন ফরোয়ার্ড কৃষ্ণা রানী সরকার। 
ম্যাচ উপলক্ষে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় বাফুফে ভবনে। এতে উপস্থিত ছিলেন বাফুফে সদস্য এবং বাফুফের নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারপারসন মাহফুজা আক্তার কিরণ, ঢাকা ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ম্যানেজার ফরেন এক্সচেঞ্জ ব্রাঞ্চ ওয়ালিউল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ সাইফুল বারী টিটু প্রমুখ। 
কোচ টিটু বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, এশিয়ান গেমস থেকে ফেরার পর লেবাননের বিরুদ্ধে ম্যাচকে সামনে রেখে আমাদের প্রস্তুতি বেশ ভালো ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ম্যাচটা না হওয়াতে খেলতে পারিনি। খেলতে পারলে ভালো হতো। অনেক কিছু পাওয়ার ছিল। এটা একটা ইন্টারন্যাশনাল প্রসেস যে নিয়মিত বিরতিতে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা যায়, সেটা হোক প্র্যাকটিস বা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ যাই হোক না কেন। আমরা এমনতিই খুব বেশি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলতে পারি না। এ ছাড়া খেলার সময়ও থাকে কম। তাই এ ধরনের ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচের দিকেই তাকিয়ে থাকি।’ টিটু আরও বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি এবং এশিয়ান গেমস থেকে আসার পর আমাদের যে ভালো অবস্থানটা ছিল, সেটা কন্টিনিউ এবং মেইনটেইন করার চেষ্টা করেছি।

আপাতত টার্গেট এক হচ্ছে এক তারিখের ম্যাচ। এবং ম্যাচ বাই ম্যাচ এগুনোটাই হচ্ছে শ্রেয়।’ প্রতিপক্ষ নিয়ে টিটুর ভাবনা, ‘সিঙ্গাপুর টিমটা আমাদের জন্য একটু অপরিচিত। ওদের কোচকে চিনি ভালোভাবে (করিম বেঞ্চেরিফা), মরক্কান। ভারতে বিভিন্ন ক্লাবে আট বছর কোচিং করিয়েছে। এশিয়ার গেমসে সিঙ্গাপুর আমাদের সঙ্গে একটা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলতে চেয়েছিল। কিন্তু সময় ছিল না, পরদিন চলে আসব, তাই ওদের সঙ্গে খেলতে পারিনি। কাকতালীয়ভাবে সেই সিঙ্গাপুরের সঙ্গেই এবার খেলতে যাচ্ছি! প্রথম ম্যাচটা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। এটার দিকেই সবাই তাকিয়ে আছি।’      
অধিনায়ক সাবিনা বলেন, ‘সম্ভবত ২০১৬ সালে (২০১৭ সালে) আমরা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে একটা ম্যাচ খেলেছিলাম। ওই ম্যাচে সম্ভবত আমরা ২-১ গোলে হেরেছিলাম (৩-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ)। তার কয়েক বছর পর আমরা আবারও তাদের সঙ্গে খেলতে যাচ্ছি। আগের চেয়েও আমাদের টিম অনেক ব্যালান্সড। টেকনিক্যাল-ট্যাকটিক্যাল এবং ফিজিক্যাল দিক দিয়েও মনে করি অনেক উন্নতি হয়েছে। আশাকরি দর্শক খেলা দেখতে মাঠে আসবে। এবং চ্যালেঞ্জিং দুটি ম্যাচ উপভোগ করবে। আমরা গোল করার পর তারাই সবচেয়ে বেশি খুশি হয়। তাই তাদের যাতে এন্টারটেইন করতে পারি এবং দেশের মেয়েদের ফুটবলের যে মান, তার ধারাবাহিকতা যেন বজায় রাখতে পারি, সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে।

দেশের মাটিতে খেলা, তাই অবশ্যই টার্গেট থাকবে দুটি ম্যাচেই উইন করার।’ সহ-অধিনায়ক মারিয়ার ভাষ্য, ‘আমরা আবারও ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছি। এবং সেটা আমাদের দেশের মাটিতেই। তো আমরা সিঙ্গাপুরের সঙ্গে আমাদের সর্বস্ব দিয়েই খেলব। আমরা যতদিন প্র্যাকটিস করেছি, কতটুকু ভালো করেছি, সেটার ফলাফল আমরা মাঠেই দেখতে পারবো। কোন জায়গায় আমাদের কতটা ইমপ্রুভ করতে হবে, সেটাও বুঝতে পারব এবং পরের ম্যাচে ভালোভাবে অনুশীলন করে তা কাটিয়ে উঠতে পারব। আমরা চেষ্টা করব ভালো খেলার এবং জয়ী হবার।’  
প্রশ্ন-উত্তর পর্বে সাবিনা বলেন, ‘সিঙ্গাপুরের সঙ্গে যে ম্যাচটা খেলেছিলাম, সেই ম্যাচে সম্ভবত মারিয়া-মনিকারা খেলেনি। তাদের সঙ্গে আরও যারা আছে, বয়সভিত্তিক ফুটবল খেলে পরে জাতীয় দলে এসেছে, তারাও সম্ভবত খেলেনি। এরপর প্রায় ছয় বছর হয়ে গেছে। সবচেয়ে পজিটিভ বিষয় হচ্ছে- মেয়েরা যে কন্টিনিউয়াসলি ক্যাম্পে আছে, এটা হচ্ছে বড় একটা প্রভাব। ওরা যখন জুনিয়র থেকে সিনিয়র লেভেলে উঠছিল, তখন ওদের সঙ্গে খেলতে আমরা অনেক প্রবলেম হতো। কারণ মানিয়ে নেয়ার বিষয়টা। আমার খেলার ধরন ওরা বুঝতো না। কিন্তু এখন মনে হয় ওরা একটি টিম। ওদের সঙ্গে খেলে অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।

ওরা সেই জায়গাটা থেকে এখন অনেক ভালো জায়গায় আছে। সাউথ এশিয়ার যে কোনো টিমের সঙ্গে কম্পিটিশন করতে পারে। আমি পার্সোনালি ওদের নিয়ে অনেক আশাবাদী। স্পেশ্যালি বাংলাদেশ টিমে ওরা সবাই একাধিক পজিশনে খেলতে পারে। তবে মারিয়া ও মনিকা যদি খেলাটা ধরতে পারে, তাহলে দলের জন্য তা পজিটিভ একটা দিক রেজাল্ট বেরিয়ে আসার। এই দুজনের প্রতি আমার এক্সট্রা একটা কনিফিডেন্স থাকে সবসময়ই।

×