ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সপ্তম ম্যাচে রংপুরের চতুর্থ জয়

ব্যাটিং বিপর্যয়ে হারল মাশরাফির সিলেট

মো. মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ০১:২৮, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩

ব্যাটিং বিপর্যয়ে হারল মাশরাফির সিলেট

রংপুর রাইডার্সের কাছে নিজেদের মাঠে বাজেভাবে হারের শিকার হলো সিলেট স্ট্রাইকার্স

নিজেদের মাঠে সবচেয়ে বাজে অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। নবম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ৭ ম্যাচ খেলে ৬ জয় পাওয়া মাশরাফি বিন মর্তুজার দল এককভাবে শীর্ষে থেকে সিলেট পর্বে নামে শুক্রবার। কিন্তু ভয়ানক ব্যাটিং বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে তারা। সিলেট পর্বের উদ্বোধনী ম্যাচে তাই ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছে তারা রংপুর রাইডার্সের কাছে। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে সিলেট নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে মাত্র ৯২ রান করতে সক্ষম হয়। মাত্র ১৮ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে চরম বিপর্যস্ত দলের হয়ে ৮ নম্বরে নেমে তানজিম হাসান সাকিব ৩৬ বলে ৪১ ও অধিনায়ক মাশরাফি ২১ বলে ২১ রানের লড়াকু ইনিংস খেললে বড় লজ্জা থেকে বাঁচে সিলেট। জবাব দিতে নেমে রনি তালুকদারের অপরাজিত ৪১ রানের সুবাদে ১৫.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৯৩ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় রংপুর। এটি অষ্টম ম্যাচে সিলেটের দ্বিতীয় হার আর সপ্তম ম্যাচে রংপুরের চতুর্থ জয়।
টস জিতে আগে স্বাগতিক সিলেটকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় রংপুর। প্রথম ১০টি বল দেখেশুনে খেলে নির্বিঘেœ কাটালেও এরপর বিপদ নেমে আসে সিলেটের ব্যাটিং লাইনআপে। ধস নামান আজমতুল্লাহ ওমরজাই ও শেখ মেহেদি। দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে ওমরজাইয়ের পেসে টম মুরস (২) কট বিহাইন্ড হন। পরের ওভারে শেখ মেহেদি হাসানের অফস্পিনে বিদায় নেন আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত (৯ বলে ৯)। ওমরজাই-শেখ মেহেদির দ্বিমুখী আক্রমণে এরপর কোনো রান না করেই সাজঘরে ফেরেন তৌহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম ও জাকির হাসান। থিসারা পেরেরা (৩) ও ইমাদ ওয়াসিমও (১) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৮.৪ ওভারে মাত্র ১৮ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে চরম বিপদে পড়ে সিলেট। এরপর অষ্টম উইকেটে দলের হাল ধরেন তানজিম ও মাশরাফি। তারা ৪২ বলে ৪৮ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু ১৬তম ওভারে মাশরাফি ২১ বলে ২ ছক্কায় ২১ রানে সাজঘরে ফিরলে জুটি ভেঙে যায় এবং সম্মানজনক পুঁজি গড়ার আশাও শেষ হয়ে যায় সিলেটের। ১৯তম ওভারে দলের শেষ ভরসা তানজিমও ৩৬ বলে ৫ চার, ২ ছয়ে ৪১ রান করে হাসান মাহমুদের পেসে বোল্ড হয়ে যান। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে মাত্র ৯২ রান করতে সক্ষম হয় সিলেট। ৪ ওভার বোলিং করে হাসান ১২ রানে ও ওমরজাই ১৭ রানে ৩টি করে এবং শেখ মেহেদি ১২ রানে ২টি উইকেট নেন।
জবাব দিতে নেমে রংপুরের হয়ে সাবধানী শুরু এনে দেন নাইম শেখ ও রনি তালুকদার। তারা ২৭ রানের জুটি গড়েন। ষষ্ঠ ওভারের তৃতীয় বলে পেসার রেজাউর রহমান রাজা ব্রেক থ্রু এনে দেন। নাইম ২১ বলে ২ চারে ১৮ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর রনি ও শেখ মেহেদি দেখেশুনে খেলতে থাকেন। কিন্তু নবম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন মাশরাফি। ওই ওভারের পঞ্চম বলে শেখ মেহেদি (১২ বলে ৮) ও ষষ্ঠ বলে অভিজ্ঞ পাকিস্তানি শোয়েব মালিক (০) তার শিকার হন। ৯ ওভারে ৪৪ রানে ৩ উইকেট হারালেও স্বচ্ছন্দেই লক্ষ্যের দিকে রংপুরকে এগিয়ে নিতে থাকেন রনি ও ওমরজাই। তবে ১৩তম ওভারে মোহাম্মদ আমির ভেঙে দেন ২২ রানের জুটি। ফিরে যান ৯ বলে ৪ রান করা ওমরজাই। জেতার জন্য ৪৫ বলে তখন মাত্র ২৭ রান দরকার রংপুরের। সেই কাজটা নির্বিঘেœই সেরেছেন রনি ও মোহাম্মদ নওয়াজ। দুজন মিলে অবিচ্ছিন্ন থেকে বাকি ২৭ রান করেছেন মাত্র ৩.১ ওভারেই। রনি ৩৮ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৪১ ও নওয়াজ ১৩ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ১৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ২৬ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেটে ৯৩ রান তুলে জয় পায় রংপুর। মাশরাফি ৩ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর ॥ সিলেট স্ট্রাইকার্স ইনিংস- ৯২/৯; ২০ ওভার  (তানজিম ৪১, মাশরাফি ২১; হাসান ৩/১২, ওমরজাই ৩/১৭, শেখ মেহেদি ২/১২)।
রংপুর রাইডার্স ইনিংস- ৯৩/৪; ১৫.৪ ওভার (রনি ৪১*, নাইম ১৮, নওয়াজ ১৮*’; মাশরাফি ২/১৮)।
ফল ॥ রংপুর রাইডার্স ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা ॥ আজমতুল্লাহ ওমরজাই (রংপুর রাইডার্স)।

 

×