ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হারলেই বিদায়, জিতলে কোয়ার্টার ফাইনাল

আজ মাঠে নামছে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড

জাহিদুল আলম জয়

প্রকাশিত: ০০:৪৫, ৪ ডিসেম্বর ২০২২

আজ মাঠে নামছে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড

অনুশীলনে ফ্রান্সের বিশ্বখ্যাত ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে

শুরু হয়ে গেছে কাতার বিশ্বকাপের নকআউট রাউন্ডের জমজমাট লড়াই। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এবার গ্রুপ পর্বে সবচেয়ে উপভোগ্য লড়াই হয়েছে। নকআউটেও সেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে শক্তিশালী ও ফেভারিট দলগুলো মাঝারি শক্তির দলগুলোকে সমীহ করছে। শেষ ষোলোর মিশন শুরুর আগে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ও ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলা ইংল্যান্ডও প্রতিপক্ষকে গুরুত্ব দিয়ে ময়দানী লড়াইয়ে মাঠে নামছে।
আজ রাত প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল অর্থাৎ শেষ ষোলোতে ভিন্ন ভিন্ন ম্যাচে মাঠে নামছে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড। বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় প্রথম ম্যাচে ‘ডি’ গ্রুপে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ফরাসিদের প্রতিপক্ষ ‘সি’ গ্রুপের রানার্সআপ পোল্যান্ড। কাতারের রাজধানী দোহার আল থুমামা স্টেডিয়ামে হবে ম্যাচটি। শেষ ষোলোর আরেক ম্যাচে ইংলিশদের প্রতিপক্ষ চমক জাগানিয়া আফ্রিকান দেশ সেনেগাল। রাত ১টায় ‘বি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ হওয়া দল দুটির মধ্যে ম্যাচটি হবে আল খোরের আল বায়াত স্টেডিয়ামে। ইংল্যান্ড ও ফ্রান্স দুদলই নিজ নিজ ম্যাচ জিতে কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন বুনছে। তবে সেনেগাল ও পোল্যান্ডেরও অভিন্ন লক্ষ্য। বিশেষ করে সেনেগাল রীতিমতো হুঙ্কার দিয়ে রেখেছে ইংলিশদের প্রতি।
আগেই নকআউট পর্ব নিশ্চিত হওয়ায় ফ্রান্স গ্রুপের শেষ ম্যাচে তিউনিসিয়ার বিরুদ্ধে তারকা খেলোয়াড়দের সাইড বেঞ্চে রেখেছিলেন। এ তালিকায় ছিলেন কিলিয়ান এমবাপে, অ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান, ওসমানে ডেম্বেলে, অলিভিয়ের জিরুডরা। এ সুযোগে ফরাসিদের ১-০ গোলে হারিয়ে চমকে দেয় আফ্রিকান দেশ তিউনিসিয়া। ওই ম্যাচের শেষভাগে গ্রিজম্যান গোলটি পরিশোধ করলেও ভিএআর অফসাইডের কারণে বাতিল করে দেয়।

ওই হারের পরও অস্ট্রেলিয়াকে গোল ব্যবধানে পেছনে ফেলে গ্রুপের শীর্ষস্থান পেয়েছে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়নরা। অন্যদিকে ‘সি’ গ্রুপে তেমন আহামারি পারফরমেন্স প্রদর্শন না করেও অনেকটা ভাগ্যজোরে নকআউটে এসেছে পোল্যান্ড। শেষ গ্রুপ ম্যাচে আর্জেন্টিনার কাছে বাজেভাবে হারের পরও মেক্সিকোর চেয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকে রবার্ট লেভানডোস্কির দল। এর ফলে ১৯৮৬ মেক্সিকো বিশ^কাপের পর এই প্রথমবারের মতো পোল্যান্ড নকআউট পর্বে উঠে এসেছে।
নকআউটে আসলেও পোলিশদের পারফরমেন্স মন ভরাতে পারেনি ভক্ত-সমর্থকদের। এ পর্যন্ত তিন ম্যাচে তারা টার্গেটে মাত্র পাঁচটি শট নিয়েছে। এর মধ্যে দুটি সৌদি আরবের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের দিনে। যদিও আর্জেন্টিনার ম্যাক অ্যালিস্টারের গোলের আগে তারা কোন গোল হজম করেনি। ৪০ বছর আগে ১৯৮২ সালে একটি প্রীতি ম্যাচে পোল্যান্ডের কাছে হেরেছিল ফ্রান্স। ওই ম্যাচে ৪-০ গোলে জয় পেয়েছিল পোলিশরা। ওই শেষ; এরপর আর একবারও ফরাসিদের বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করতে পারেনি তারা।

টানা সাত ম্যাচে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে অপরাজিত লেস ব্লুজরা। সবশেষ ২০১১ সালে প্রীতি ম্যাচে ফ্রান্স জিতেছে ১-০ গোলে। এবারের বিশ্বকাপের পারফরমেন্স বিবেচনায়ও ফেভারিট হয়ে মাঠে নামছে কোচ দিদিয়ের দেশমের দল। কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করার মিশনে ফরাসি কোচ ফিট স্কোয়াডই পাচ্ছেন। গোলরক্ষক আলফোনসে আরেয়োলা পিঠের ইনজুরি কাটিয়ে তিউনিসিয়ার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলেন। গোঁড়ালির ইনজুরিতে থাকা থিও হার্নান্দেজও পুরোপুরি ফিট হয়েছেন বলে জানা গেছে। আগের ম্যাচে সেরা একাদশে না খেলা এমবাপে, গ্রিজম্যান, ডেম্বেলে, জিরুডরা ফের ফিরছেন। এছাড়া মাঝমাঠে জর্ডান ভেরেটুট ও ইউসুফ ফোফানার জায়গায় অরেলিয়েন টিচুয়ামেনি ও আদ্রিয়ের রাবোয়িটের ফেরার সম্ভাবনা জোরালো।
ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দশে থাকা দলগুলোর মধ্যে একমাত্র হল্যান্ড ও ইংল্যান্ড বাদে সব দলই এবারের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে হারের স্বাদ পেয়েছে। না হারার এই আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে নকআউট রাউন্ড শুরু করছে কোচ গ্যারেথ সাউথগেটের দল। ওয়েলসকে শেষ গ্রুপ ম্যাচে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষদল হিসেবে শেষ ষোলোর টিকিট কেটেছে থ্রি লায়ন্সরা। সেনেগালও নিজেদের যোগ্যতা দিয়েই টুর্নামেন্টের নকআউট পর্ব নিশ্চিত করেছে। এই প্রথমবারের মতো বিশ^কাপে সেনেগালের মুখোমুখি হচ্ছে ইংলিশরা।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্রয়ের পর হ্যারি কেন, রাশফোর্ডদের নিয়ে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল। অথচ ইরানকে ৬-২ গোলে হারিয়ে দুর্দান্তভাবে মিশন শুরু করেছিল ফুটবলের জনকরা। দ্বিতীয় ম্যাচে এ ধারা না থাকলেও তৃতীয় ম্যাচে ওয়েলসকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দেয় হ্যারি কেনের দল। গত বছর ইউরোতে ঘরের মাঠে ফাইনালে ইতালির কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছে ইংলিশদের। বড় আসরের শিরোপা খরা কাটাতে মরিয়া পুনরুজ্জীবিত দলটি একই ভুল আর করতে চায় না। ১৯৬৬ সালে একমাত্র বিশ্বকাপ জয় করা দেশটি দ্বিতীয়বার এ স্বাদ পেতে মরিয়া।

সম্পর্কিত বিষয়:

×