
ছবি: সংগৃহীত
সোমবার, দুপুর ১টা বেজে ৩ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ জঙ্গি বিমান। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)-এর তথ্য অনুযায়ী, উড্ডয়নের পরপরই বিমানটি ভেঙে পড়ে রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন কলেজের একটি ভবনের ওপর।
বিধ্বস্ত হওয়া এ যুদ্ধবিমানটির নির্মাতা দেশ চীন। চেংদু এরোস্পেস কর্পোরেশন নির্মিত এই যুদ্ধবিমানটি মূলত জে-৭ মডেলের একটি রপ্তানি সংস্করণ, যা চীনের বাইরে পাকিস্তান ও বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশ এখনো ব্যবহার করছে। বাংলাদেশে এটি এফ-৭ নামেও পরিচিত।
১৯৬৪ সালের মার্চে চীনের সেন ইয়াং এয়ারক্রাফট ফ্যাক্টরিতে শুরু হয় তৃতীয় প্রজন্মের জে-৭ যুদ্ধবিমান তৈরির কাজ। এরপর থেকে জে-৭ সিরিজের বহু মডেল তৈরি হয়েছে এবং তা বহু দেশে রপ্তানি হয়েছে। চেংদু নির্মিত এই জে-৭ যুদ্ধবিমান রাশিয়ার মিগ-২১-এর লাইসেন্সকৃত সংস্করণ। রুশ কারিগরি সহায়তায় চীনে প্রথম এই বিমান তৈরি হয়। তবে ২০১৩ সালে জে-৭ সিরিজের উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলেও, এটি এখনো বিশ্বের অনেক দেশের বিমানবাহিনীতে সক্রিয়ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
জে-৭ সিরিজের এই যুদ্ধবিমানগুলো মূলত ইন্টারসেপ্টর হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এতে স্বল্পপাল্লার ইনফ্রারেড হোমিং এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল সংযুক্ত থাকে এবং তা মূলত আকাশে স্বল্পপাল্লার যুদ্ধের জন্য ডিজাইন করা। এ বিমান আকাশ থেকে ভূমিতেও আক্রমণ চালাতে সক্ষম।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কাছে বর্তমানে ৩০টির বেশি এফ-৭ বিজিআই মডেলের বিমান রয়েছে, যেগুলো চেংদু জে-৭-এর রপ্তানি সংস্করণ। বিশেষভাবে বাংলাদেশের জন্য ডিজাইন করা এ যুদ্ধবিমানগুলোকে সাধারণত ইন্টারসেপ্টর এবং গ্রাউন্ড অ্যাটাক রোলে ব্যবহারের জন্য নিয়োজিত করা হয়। এগুলো সোভিয়েত রাশিয়ার মিগ-২১-এর মতো সিঙ্গেল ইঞ্জিনের হালকা যুদ্ধবিমান।
সামরিক বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী বর্তমানে প্রায় ৫০টি যুদ্ধবিমান ব্যবহার করছে। এর মধ্যে চীনের তৈরি এফ-৭ যুদ্ধবিমান রয়েছে ৩৬টি এবং রাশিয়ার তৈরি মিগ-২৯ রয়েছে ৮টি। এছাড়াও বাহিনীর বহরে রয়েছে চীনের এফটি-৭ প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান, যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড নির্মিত দুটি কৌশলগত পরিবহন বিমান, এবং রাশিয়া, ফ্রান্স, ইতালি ও প্রাক্তন চেকোস্লোভাকিয়া থেকে আনা কিছু প্রশিক্ষণ বিমান ও হেলিকপ্টার।
শেখ ফরিদ