
ছবি: সংগৃহীত
আজকের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অনেক শিশুই গুরুতরভাবে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। পোড়া রোগীদের ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং জীবন রক্ষা করার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—তাদের ইনফেকশন থেকে বাঁচানো।
এই বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সতর্কবার্তা দিয়েছেন জনস্বাস্থ্যবিদ ও চিকিৎসক ডা. তাসনিম জারা। তিনি বলেন, “আমরা সবাই সাহায্য করতে চাই। কিন্তু না জেনে কিছু করলে ইনফেকশনের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। আর পোড়ার পর যে ইনফেকশন হয়, তা সাধারণ ইনফেকশনের মতো না—অনেক বেশি মারাত্মক।”
ডা. জারা ব্যাখ্যা করেছেন, পোড়ার ফলে ত্বকের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যায়, শরীর হয়ে পড়ে ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুর জন্য উন্মুক্ত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার পাশাপাশি রক্তে নানা জটিলতা তৈরি হয়, যা দ্রুত সেপসিসে রূপ নিতে পারে—এবং অনেক সময় মৃত্যুও ঘটতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের রোগীদের পাশে দাঁড়াতে চাওয়া সাধারণ মানুষের উদ্দেশে ডা. জারা সাতটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন:
🛑 যা যা করতে হবে:
১. ভিড় করবেন না: রোগীর আশপাশে অপ্রয়োজনে জমায়েত না হয়ে, হাত ধুয়ে ও মাস্ক পরে প্রবেশ করুন। গ্লাভস ও গাউন ব্যবহার করলে আরও ভালো।
২. স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন: ৭০% অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার সব সময় কাছে রাখুন। রোগীর বিছানায় বা ফার্নিচারে বসা বা হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
৩. ঘরোয়া উপায় নয়: ডিম, টুথপেস্ট বা অন্য কোনো ঘরোয়া উপাদান পোড়া স্থানে লাগাবেন না। এতে ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ে এবং চিকিৎসা জটিল হয়।
৪. সঠিক ড্রেসিং শিখে নিন: যদি ড্রেসিং পরিবর্তন করতে হয়, চিকিৎসক বা নার্সদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারপর করুন। না জেনে কিছু করা বিপজ্জনক।
৫. লক্ষণ খেয়াল করুন: যদি পোড়া স্থানে অতিরিক্ত ফোলাভাব, ব্যথা বা পুঁজ দেখা যায়, দ্রুত চিকিৎসককে জানাতে হবে।
৬. শ্বাসনালী পোড়া রোগীর যত্ন: এ ধরনের রোগীদের শ্বাসকষ্ট বা বুকে ব্যথা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৭. টিটেনাস টিকা: নিশ্চিত হতে হবে রোগীর টিটেনাস টিকা দেওয়া আছে কি না। না থাকলে চিকিৎসককে জানাতে হবে।
ডা. তাসনিম জারা বলেন, “এই কথাগুলো এখন জানলে, আজকে যারা হাসপাতালে আছেন, তাদের অনেকের জীবন বাঁচাতে আপনি ভূমিকা রাখতে পারবেন।”
আসিফ