
গভীর সমুদ্রে খনিজের সন্ধান
স্মার্টফোন, বৈদ্যুতিক যানবাহন, চিকিৎসা যন্ত্রসহ নানা প্রযুক্তিপণ্যে ব্যবহৃত হয় সমুদ্রের তলদেশে লুকিয়ে থাকা মূল্যবান খনিজ। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, খনন কার্যক্রম সমুদ্রের গভীরে থাকা বাস্তুতন্ত্রের জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে।
গভীর সমুদ্রতলের পরিবেশ এমনিতেই চরম- ভয়াবহ চাপ, হিমশীতল তাপমাত্রা ও অন্ধকারে ঢাকা। এই পরিবেশেও টিকে আছে বিচিত্র প্রাণ, যেমন বেগুনি রঙের সমুদ্র শশা, পালকযুক্ত ইয়েতি কাঁকড়া, ডাম্বো-জাতীয় অক্টোপাস, রঙিন ঝিনুক ও রহস্যময় জেলিফিশ।
এমন সময়েই দেশগুলো নজর দিচ্ছে সমুদ্রের নিচে থাকা নিকেল, কোবাল্ট, ম্যাঙ্গানিজ ও লিথিয়ামের মতো খনিজে, যেগুলোর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
গত এপ্রিলেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে গভীর সমুদ্র খননের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দেন। এর ধারাবাহিকতায় দেশটির ব্যুরো অফ ওশান এনার্জি ম্যানেজমেন্ট এই প্রকল্পকে ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ হিসেবে বিবেচনা করছে।
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক সমুদ্রতল কর্তৃপক্ষ (আইএসএ) এখন পর্যন্ত ৩১টি অনুসন্ধান চুক্তি অনুমোদন করলেও কোনো বাণিজ্যিক খননের অনুমতি দেয়নি। ইতোমধ্যে ৩৭টি দেশ সমুদ্রতলে খননের বিরোধিতা করেছে।
বিভিন্ন পদ্ধতিতে এই খনিজ আহরণ করা হয়। একটি পদ্ধতিতে আগ্নেয়গিরিমূলক হাইড্রোথার্মাল ভেন্ট থেকে সালফাইড সংগ্রহ করা হয়। আরেকটি পদ্ধতিতে সি-মাউন্টের ওপরের অংশ কেটে কোবাল্ট সমৃদ্ধ স্তর নেয়া হয়। সবচেয়ে আলোচিত হচ্ছে পলিমেটালিক নডিউল আহরণ- যেখানে ছোট রোবটজাত যন্ত্র দিয়ে গলফ বল আকৃতির খনিজ সংগ্রহ করা হয়।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সমুদ্রের এই জীববৈচিত্র্য অত্যন্ত ধীরগতিতে বিকশিত হয়। অনেক প্রাণী নির্দিষ্ট এলাকাতেই টিকে থাকতে পারে। ফলে একবার খনন শুরু হলে সেসব এলাকা শত শত বছরেও পুনরুদ্ধার করা কঠিন হবে।
লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্টোরি মিউজিয়ামের গবেষক মুরিয়েল র্যাবোন বলেন, ‘আমরা যেসব অঞ্চলে খননের পরিকল্পনা করছি, সেখানকার ৯০ শতাংশ প্রাণীই এখনো অজানা।’
খবর স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন
তাসমিম