
ছবি: সংগৃহীত।
বর্তমান ব্যস্ত ও অনিয়মিত জীবনযাপনের কারণে দেশে-বিদেশে বাড়ছে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (NAFLD) আক্রান্তের সংখ্যা। চিকিৎসকদের মতে, সঠিক জীবনধারা পালনের মাধ্যমে এ রোগ পুরোপুরি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সাম্প্রতিক একাধিক স্বাস্থ্য গবেষণায় উঠে এসেছে—মাত্র পাঁচটি জীবনধারার পরিবর্তনই ফ্যাটি লিভার রোগ প্রতিরোধে বিপ্লব ঘটাতে পারে।
১. মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট গ্রহণ করুন:
ফ্যাটি লিভার প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখে মেডিটেরেনিয়ান ডায়েট। এই ডায়েট পরিকল্পনায় থাকে শাকসবজি, ফলমূল, বাদাম, অলিভ অয়েল, পূর্ণশস্য এবং সী-ফুড। এসব খাবার লিভারের চর্বি কমায়, প্রদাহ হ্রাস করে এবং হজমে সহায়তা করে।
২. নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম:
প্রতিদিন অন্তত ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট মাঝারি মাত্রার ব্যায়াম যেমন brisk walking, সাইকেল চালানো, সাঁতার বা জগিং করলে লিভারে জমে থাকা চর্বি কমে। একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত—নিয়মিত ব্যায়াম ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স হ্রাস করে, যা ফ্যাটি লিভারের একটি মূল কারণ।
৩. ধীরে ধীরে ওজন কমানো:
চিকিৎসকরা বলেন, দ্রুত ওজন কমানোর চেষ্টা বিপজ্জনক হতে পারে। তবে ধীরে ধীরে—সপ্তাহে ০.৫-১ কেজি হারে ওজন কমালে লিভার কার্যক্রম উন্নত হয় এবং ফ্যাটি লিভারের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে।
৪. চিনি ও পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে দিন:
প্যাকেটজাত খাবার, সফট ড্রিংক, ক্যান্ডি, সাদা ভাত ও পরিশোধিত আটা দিয়ে তৈরি খাবার—এসব লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমাতে সাহায্য করে। গবেষণা বলছে, এইসব উপাদান সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করলে ফ্যাটি লিভার রোগের উন্নতি ঘটে।
৫. নিয়মিত কফি পান করুন:
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, প্রতিদিন ১-২ কাপ কফি পান করলে লিভার এনজাইমের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং লিভার কোষের ক্ষয় রোধ হয়। তবে কফির সঙ্গে অতিরিক্ত চিনি ও ক্রীম না মেশানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
চিকিৎসকদের মতে, ফ্যাটি লিভার রোগ প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে জীবনধারার এই পরিবর্তনগুলো অনুসরণ করে চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ হওয়া সম্ভব। তবে যেকোনো উপসর্গ দেখা দিলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।
মিরাজ খান