
ছবি: সংগৃহীত
গুগল ম্যাপস ও জিমেইল ব্যবহারকারীদের প্রভাবিত করার পর এবং স্যামসাং সম্প্রতি তাদের ব্যবহারকারীদের অ্যাকাউন্ট ডিলিট করার বিষয়ে সতর্ক করার পর, এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো ফেসবুক। মেটা নিশ্চিত করেছে যে, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসেই ১ কোটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলা হয়েছে—এবং এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
গত বছরের শেষে গুগল যখন নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার ইমেইল পাঠিয়েছিল, তখন ব্যবহারকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। তবে ফেসবুকের ক্ষেত্রে এটি সক্রিয় অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলার ঘটনা, যা ব্যবহারকারীদের মধ্যে কৌতূহল সৃষ্টি করেছে। ১৪ জুলাই ফেসবুক ক্রিয়েটর ব্লগে একটি ঘোষণায় মেটা জানিয়েছে, এই পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো "ক্রিয়েটরদের তাদের স্বকীয়তা ও সৃজনশীলতার জন্য উদযাপন করা উচিত, নকল ও প্রতারকদের দ্বারা ডুবে যাওয়া নয়।"
মেটার বক্তব্য অনুযায়ী, এই অভিযানের প্রধান উদ্দেশ্য হলো:
-
বড় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের নকল (ইমপারসোনেশন) অ্যাকাউন্ট অপসারণ করা।
-
স্প্যামি কন্টেন্ট এবং ফেক এনগেজমেন্ট (যেমন ভুয়া লাইক/কমেন্ট) বন্ধ করা।
-
প্রতারণামূলক আচরণের মাধ্যমে মনিটাইজেশন রোধ করা।
২০২৫ সালের শুরু থেকে ফেসবুক ইতিমধ্যে ১ কোটি নকল প্রোফাইল মুছে ফেলেছে। এর পাশাপাশি, ৫ লাখ অ্যাকাউন্টের স্প্যামি কার্যকলাপ শনাক্ত করে তাদের কমেন্ট দৃশ্যমানতা হ্রাস, রিচ সীমিত এবং মনিটাইজেশন বন্ধ করে দিয়েছে। মেটা স্পষ্ট জানিয়েছে যে, এই শুদ্ধি অভিযান ভবিষ্যতেও চলতে থাকবে। ফেসবুকের লক্ষ্য হলো একটি নিরাপদ ও আসল কন্টেন্ট-বান্ধব প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা, যেখানে ক্রিয়েটররা তাদের শ্রমের সঠিক মূল্য পাবেন।
সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য মেটার পরামর্শ হলো, যদি আপনার অ্যাকাউন্ট সক্রিয় ও নীতিমালা মেনে চলে, তাহলে চিন্তার কোনো কারণ নেই। তবে, নকল বা সন্দেহজনক অ্যাকাউন্ট রিপোর্ট করা, টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখা এবং ফেসবুকের আপডেটেড কমিউনিটি গাইডলাইন মেনে চলা জরুরি।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা মেটার এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, নকল অ্যাকাউন্ট ও স্প্যাম কমাতে এই ধরনের কঠোর পদক্ষেপ জরুরি, যা সাধারণ ব্যবহারকারী ও ক্রিয়েটরদের জন্য একটি সুরক্ষিত ডিজিটাল পরিবেশ নিশ্চিত করবে। ফেসবুকের এই "শুদ্ধি অভিযান" অব্যাহত থাকলে প্ল্যাটফর্মটিতে ভুয়া উপস্থিতি কমবে, যা দীর্ঘমেয়াদে ব্যবহারকারীদের জন্য উপকারী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: ফোর্বস
সাব্বির