
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক ও মানবকেন্দ্রিক (Human-to-Human) বাজারে, একজন সিইও’র ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড তার প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ ও বিশ্বাসযোগ্যতার গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি। আপনার ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড শুধুমাত্র মিডিয়া উপস্থিতি নয়; এটি বিনিয়োগ, স্ট্র্যাটেজিক অংশীদারিত্ব, গ্রাহকদের সঙ্গে সম্পর্ক এবং প্রতিভাবান কর্মী আকর্ষণেও বড় ভূমিকা রাখে।
রাউল ডেভিস, যিনি গত ২১ বছর ধরে পাঁচ মহাদেশে শত শত সিইও’র সঙ্গে কাজ করেছেন, সেই অভিজ্ঞতা থেকে তুলে ধরেছেন—একজন সিইও কীভাবে নিজের ব্র্যান্ডকে শক্তিশালী করে প্রতিষ্ঠানকে আরও এগিয়ে নিতে পারেন।
১. কৌশলগত দৃশ্যমানতা (Strategic Visibility)
দৃশ্যমানতা হলো একজন সিইও’র ব্র্যান্ডের ভিত্তি। জেনসেন হুয়াং-এর (Nvidia CEO) মতো নেতৃত্বের উদাহরণ তুলে ধরলে বোঝা যায়, কীভাবে ব্যক্তিগত উপস্থিতি একটি প্রতিষ্ঠানকে সেক্টরে নেতৃত্বের আসনে নিয়ে যেতে পারে।
বিশেষ করে মাঝারি মানের কোম্পানির সিইওদের জন্য, বাজারে নিজেদের নেতৃত্বস্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে নিয়মিত মিডিয়ায় উপস্থিতি, সম্মেলনে বক্তব্য রাখা এবং লিংকডইনসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাবনানির্ভর লেখা প্রকাশের বিকল্প নেই। এগুলো ব্র্যান্ড গড়ার পাশাপাশি, দীর্ঘমেয়াদে প্রভাব বাড়ায়।
২. প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যকে মানবিক রূপ দেওয়া (Humanize the Vision)
একটি প্রতিষ্ঠানের মিশন যত মানবিকভাবে উপস্থাপন করা যায়, তত বেশি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়া সম্ভব। Airbnb-র সিইও ব্রায়ান চেস্কি সেই দৃষ্টান্ত; ব্যক্তিগত গল্পের মধ্য দিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যকে মানুষের কাছে জীবন্ত করে তুলেছেন।
আপনার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে উঠে আসা কোনো ‘ব্যক্তিগত মিশন’ যদি প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যের সঙ্গে মিলে যায়, তাহলে তা শুধু স্মরণীয় নয়, বরং হৃদয়স্পর্শীও হয়। এতে গ্রাহক, বিনিয়োগকারী এবং কর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
৩. মুনাফার বাইরেও নেতৃত্ব দিন (Lead with Purpose Beyond Profit)
শুধু মুনাফায় নয়, বরং বড় কোনো সামাজিক উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে নেতৃত্ব দেওয়া প্রতিষ্ঠানকে আরও স্থিতিশীল ও গ্রহণযোগ্য করে তোলে। Coinbase-এর সিইও ব্রায়ান আর্মস্ট্রং যেমন সবসময় প্রতিষ্ঠানকে ডিজিটাল কারেন্সিকে মূলধারায় আনার একটি মিশনের অংশ হিসেবে তুলে ধরেন।
এই ধরনের উদ্দেশ্যনির্ভর নেতৃত্ব কর্মীদের অনুপ্রাণিত করে, গ্রাহকদের আস্থা বাড়ায় এবং প্রতিষ্ঠানকে দীর্ঘমেয়াদে আরও টেকসই করে তোলে।
একজন সিইও’র ব্যক্তিগত ব্র্যান্ড, সঠিকভাবে উপস্থাপিত হলে, প্রতিষ্ঠানটির দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের অন্যতম চালিকা শক্তি হয়ে ওঠে। নিজের গল্প নিজেই বলুন—আস্থা গড়ে তুলুন, নেতৃত্ব দিন এবং এমন একটি সংস্কৃতি তৈরি করুন যার ভিত্তি হলো বিশ্বাসযোগ্যতা ও উদ্দেশ্য।
ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডিং কোনো গৌণ বিষয় নয়—এটি সিইও হিসেবে আপনার নেতৃত্বের অন্যতম স্তম্ভ।
শিহাব