
ছবি: সংগৃহীত।
বিশ্বজুড়ে ৩ বিলিয়নেরও বেশি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীর জন্য গুগল নিশ্চিত করেছে এক নতুন ও উন্নত সাইবার সুরক্ষা ব্যবস্থা। হ্যাকিংয়ের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির প্রেক্ষাপটে গুগল এই ‘অ্যাডভান্সড প্রোটেকশন’ (Advanced Protection) নামের প্রযুক্তি চালু করেছে, যা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহারকারীদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা প্রোফাইল অনুযায়ী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাস্টমাইজ করার সুযোগ দেবে।
গুগলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “যেখানে তুলনামূলক কম দক্ষ ম্যালওয়্যারও বড় পরিসরে আক্রমণ চালিয়ে লাভবান হতে পারে, সেখানে লক্ষ্যভিত্তিক ব্যবহারকারীদের ওপর জটিল আক্রমণও হ্যাকারদের জন্য খুবই ফলপ্রসূ হতে পারে। তাই উভয় দিক থেকে সুরক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।”
৮ জুলাই গুগল ক্রোম সিকিউরিটি টিমের সদস্য ডেভিড অ্যাড্রিয়ান, জেভিয়ের কাস্ত্রো এবং পিটার কটউইচ এক ব্লগ পোস্টে জানিয়েছেন, নতুন এই প্রযুক্তি গুগলের বিদ্যমান Advanced Protection Program–এর একটি এক্সটেনশন বা সম্প্রসারিত সংস্করণ। এটি ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহারকারীদের জন্য ডিভাইস-লেভেল সিকিউরিটি সেটিংস চালু করতে সাহায্য করবে।
গুগলের ভাষায়, “এটি অ্যান্ড্রয়েডে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহারকারীদের জন্য একটি একক কন্ট্রোল পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে, যা বিভিন্ন অ্যাপে গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা সেটিংস সক্রিয় করবে।”
ক্রোম ব্রাউজারের মাধ্যমে এটি মূলত তিনটি বড় সুরক্ষা সুবিধা দেবে:
সবসময় নিরাপদ সংযোগ ব্যবহার সক্রিয় করা: হ্যাকারদের দ্বারা ম্যালিসিয়াস কনটেন্ট ইনজেকশন বা ডেটা চুরি ঠেকাতে সাহায্য করবে।
ফুল সাইট আইসোলেশন চালু করা (৪ জিবি র্যাম থাকলে): এতে ম্যালওয়্যারযুক্ত ওয়েবসাইটকে প্রকৃত ওয়েবসাইটের সঙ্গে একই প্রসেসে লোড হওয়া থেকে প্রতিরোধ করা যাবে।
জাভাস্ক্রিপ্ট অপটিমাইজেশন নিষ্ক্রিয় করে আক্রমণের ক্ষেত্র সীমিত করা: এর ফলে হ্যাকারদের আক্রমণের সুযোগ আরও সংকুচিত হবে।
গুগল নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা আরও সুপারিশ করেছেন যে, উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবহারকারীরা যেন Advanced Protection Program–এ তাদের গুগল অ্যাকাউন্ট যুক্ত করেন। এতে বাধ্যতামূলকভাবে ফিশিং-প্রতিরোধী মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন ব্যবহার করতে হবে এবং যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসেই উন্নত সুরক্ষা সক্রিয় করা যাবে।
বিশ্লেষকদের মতে, গুগলের এই নতুন পদক্ষেপ স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন, বিশেষ করে যখন মোবাইল এসএমএস হ্যাক, ম্যালওয়্যার ও ডিভাইস লেভেলে আক্রমণের ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে।
নিরাপদ থাকার প্রথম ধাপ হচ্ছে সচেতনতা—আর গুগলের এই উদ্ভাবন সেই সচেতনতা তৈরি করতেই বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
মিরাজ খান