ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

মাত্র ৯০ দিনে মঙ্গলে যাত্রা: মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানীর ব্যতিক্রমী এক তত্ত্ব

প্রকাশিত: ২১:০৫, ১০ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২১:০৬, ১০ জুলাই ২০২৫

মাত্র ৯০ দিনে মঙ্গলে যাত্রা: মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানীর ব্যতিক্রমী এক তত্ত্ব

ছবি: সংগৃহীত

মঙ্গলগ্রহে পৌঁছাতে যেখানে সাধারণত ৬ মাসেরও বেশি সময় লাগে, সেখানে মাত্র ৯০ দিনে পৌঁছে যাওয়ার সাহসী দাবি করেছেন মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী জ্যাক কিংডন। তাঁর নতুন তত্ত্ব ইতোমধ্যেই বৈজ্ঞানিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। যদিও এ ধারণাটি প্রথমে বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর মতো মনে হতে পারে, তবে এর পেছনে রয়েছে জটিল গাণিতিক হিসাব এবং প্রযুক্তির সমন্বয়।

তবে এখন দেখার বিষয় হলো, কিংডনের এই তাত্ত্বিক কাঠামো বাস্তব পরীক্ষার মুখোমুখি হয়ে কতটা কার্যকর প্রমাণিত হয়।

জ্যাক কিংডন এবং মঙ্গল যাত্রার সাহসী চিন্তা

মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী জ্যাক কিংডন দীর্ঘদিন ধরেই মহাকাশ গবেষণায় আগ্রহী। তাঁর দাবি, বর্তমান প্রযুক্তির সমন্বিত ব্যবহারে মাত্র ৯০ দিনে মঙ্গলগ্রহে পৌঁছানো সম্ভব। প্রচলিত সময়ের এক-চতুর্থাংশ সময়ে মঙ্গল অভিযানের এই সম্ভাবনা নতুন এক দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।

এই উচ্চাভিলাষী প্রকল্প মূলত নির্ভর করছে আধুনিক প্রযুক্তি এবং জটিল কক্ষপথ পরিকল্পনার উপর।

স্পেসএক্সের স্টারশিপ রকেট: প্রকল্পের মূল ভরকেন্দ্র

কিংডনের পরিকল্পনায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করবে ইলন মাস্কের স্পেসএক্স নির্মিত স্টারশিপ রকেট। এই পুনঃব্যবহারযোগ্য রকেটটি মূলত ভারী পণ্য বহন ও দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে। কিংডনের মতে, স্টারশিপ-ই এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যা এই দ্রুতগতির মঙ্গলযাত্রাকে বাস্তব করতে পারে।

পথ পরিকল্পনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন

এই প্রকল্পের মূল চাবিকাঠি লুকিয়ে আছে ভিন্নধর্মী কক্ষপথ পরিকল্পনায়। জ্যাক কিংডন প্রচলিত হিসাব-নিকাশ থেকে সরে এসে আরও নির্ভুলভাবে কক্ষপথের সামঞ্জস্য, নির্গমন গতি ও শক্তি ব্যবস্থাপনার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েছেন। এই নতুন ধরনের কক্ষপথ ব্যবহারে জ্বালানি খরচ কমবে এবং সময় বাঁচবে। তবে এতে একটুও ভুল হলে পুরো মিশন ব্যর্থ হতে পারে।

রহস্যময় ও জটিল মহাকাশীয় লজিস্টিকস

এমন সংক্ষিপ্ত যাত্রার জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিকল্পনা ও পূর্ণাঙ্গ লজিস্টিক্স। পরিকল্পনা অনুযায়ী, শুধু একটি রকেট নয়, বরং একাধিক রিফুয়েলিং যান মহাকাশে পাঠাতে হবে, যাতে ক্রুরা মিশনের সময় পর্যাপ্ত জ্বালানি ও রসদ পায়।

তবে এই প্রক্রিয়ায় রয়েছে নানা ঝুঁকি—বিশেষ করে সৌর বিকিরণের মতো বিষয়গুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে।

ফেরার পথ: আরও কঠিন সমীকরণ

তবে চ্যালেঞ্জ এখানেই শেষ নয়। মঙ্গল থেকে পৃথিবীতে ফেরার বিষয়টিও একটি বিশাল জটিলতা। সমাধানের একটি প্রস্তাব হলো—মঙ্গলের স্থানীয় সম্পদ (বিশেষ করে CO) ব্যবহার করে জ্বালানি উৎপাদন করা। স্পেসএক্স ইতিমধ্যেই এই ধারণার কথা বলেছে। তবে এই প্রযুক্তি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে।

তবে চিন্তা করুন, যদি এটা সফল হয়—তবে তা হবে মহাকাশে সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীলতার যুগের সূচনা।

আকাঙ্ক্ষা বনাম বাস্তবতা

যদিও জ্যাক কিংডনের ধারণাটি এখনো কেবল তাত্ত্বিক পর্যায়ে রয়েছে, তবে এটি মঙ্গল অভিযানের ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নাসা কিংবা স্পেসএক্স-এর প্রচেষ্টার সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়—লাল গ্রহে পৌঁছানোর প্রতিযোগিতা দিন দিন আরও তীব্র হচ্ছে।

তবে একথা বলাই যায়, ৯০ দিনে মঙ্গলজয়—এমন চিন্তা ভবিষ্যতের মহাকাশযাত্রাকে অনেক বেশি রোমাঞ্চকর করে তুলবে, যদিও বাস্তবে পৌঁছাতে এখনও বহু পথ বাকি।

 

সূত্র: https://3dvf.com/en/mars-in-90-days-this-physicist-thinks-hes-found-an-almost-credible-shortcut/#goog_rewarded

রাকিব

×