ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

আপনার অজান্তেই সব দেখছে AI! ধাবিত হচ্ছি কি এক ভয়ঙ্কর ডিজিটাল দাসত্বের দিকে?

প্রকাশিত: ২২:২০, ৯ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২২:২১, ৯ জুলাই ২০২৫

আপনার অজান্তেই সব দেখছে AI! ধাবিত হচ্ছি কি এক ভয়ঙ্কর ডিজিটাল দাসত্বের দিকে?

ছবিঃ সংগৃহীত

বিশ্বাস করুন বা না করুন, আপনি যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেন, প্রিয়জনের সঙ্গে অনুভূতি ভাগাভাগি করেন বা একটি সাধারণ ওয়েবসাইট ব্রাউজ করেন – তখনই আপনার অজান্তে নজরদারি করছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)। এটি এখন আর কোনো সায়েন্স-ফিকশন সিনেমার কল্পনা নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রে বাস্তবেই ঘটছে এমন নজরদারি।

সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভয়াবহ এক সত্য। তারা বলছে, ‘Social Net’ নামক একটি নজরদারি টুল ব্যবহার করে ২০০টিরও বেশি ওয়েবসাইটে নাগরিকদের প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছে ‘ICE (Immigration and Customs Enforcement)’ নামক সরকারি সংস্থা। এই টুলের পেছনে রয়েছে Shadow Dragon নামক একটি প্রাইভেট কোম্পানি।

নজরদারির আওতায় আপনি, আমি, সবাই!

‘Social Net’ কেবল ওপেন সোর্স তথ্য বা পাবলিক পোস্ট বিশ্লেষণ করছে না, বরং তা OnlyFans, BlueSky, Facebook, Instagram সহ জনপ্রিয় সব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য স্ক্যান করছে। কে কী লিখছে, কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন – এমনকি কে কোন পোস্টে লাইক দিচ্ছেন তাও নজরে রাখছে এই টুল।

গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায়, এই AI surveillance আমাদের ব্যক্তিগত মতাদর্শ, রাজনৈতিক চিন্তা, ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি এমনকি সাংস্কৃতিক অভ্যাস পর্যন্ত নিরীক্ষণ করতে সক্ষম।

Shadow Dragon এর ভয়াবহ ভূমিকায় প্রশ্নবিদ্ধ গণতন্ত্র

Shadow Dragon দাবি করছে তারা কোনও কিছু গোপনে করছে না। তারা কাজ করছে খোলাখুলিভাবেই। কিন্তু বাস্তবে, সরকারি চুক্তিতে তারা এমনভাবে জনগণের উপর নজরদারি চালাচ্ছে, যা মানবাধিকারের জন্য এক বড় হুমকি।

Mozilla Foundation ইতোমধ্যেই এই surveillance-এর বিরুদ্ধে ‘No Data For Surveillance Tech’ নামক একটি ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। তাদের দাবি, টেক জায়ান্টদের উচিত এই ধরনের টুলের API access বন্ধ করে দেওয়া, যেন মানুষজনের ব্যক্তিগত তথ্য বাণিজ্যিক কিংবা রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার না হয়।

Surveillance State: ভবিষ্যতের ভয়ঙ্কর বাস্তবতা?

বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে একটি ‘Surveillance State’ তৈরি হচ্ছে, যেখানে নাগরিকদের প্রতিটি পদক্ষেপে নজরদারি চালানো হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পর্যন্ত ছাত্রদের অনলাইন কার্যকলাপ অনুসরণ করছে, যা গণতন্ত্রের মৌলিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।

সময় এসেছে আওয়াজ তোলার

নজরদারির এই রূপান্তর যদি এখনই থামানো না যায়, তাহলে হয়তো ভবিষ্যতে আমরা এমন এক সমাজে বাস করব যেখানে কোনো স্বাধীনতা থাকবে না। একটি সাধারণ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট, একটি লাইক কিংবা একটি কমেন্ট – এগুলোই হয়ে উঠবে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র।

এখনই সময় আমাদের চুপ না থেকে, সচেতন হয়ে আওয়াজ তোলার। নইলে, ডিজিটাল স্বাধীনতার জায়গায় আমরা হয়তো প্রযুক্তির এক ভয়ংকর দাসত্বের শিকার হব।

সূত্রঃ টেকটিউনস

ইমরান

×