
ছবি: সংগৃহীত
সূর্য—আলো, তাপ ও জীবনের অন্যতম প্রধান উৎস। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বহু আগেই জানিয়েছেন, এই নক্ষত্রও একদিন মৃত্যুর মুখে পতিত হবে। তখন বদলে যাবে গোটা সৌরজগতের ভবিষ্যৎ—এবং পৃথিবীরও।
স্পেস ডটকম-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ৫ বিলিয়ন বছর পর সূর্যের কেন্দ্রে থাকা হাইড্রোজেন শেষ হয়ে যাবে। তখন সূর্য ধীরে ধীরে ফুলে উঠবে এবং লাল দানব (Red Giant) রূপে পরিণত হবে। এই অবস্থায় এটি সূর্য থেকে কাছাকাছি থাকা গ্রহগুলোকেও গ্রাস করতে পারে—এর মধ্যে পৃথিবীও রয়েছে।
সূর্য ধ্বংস হলে কী ঘটবে?
সূর্যের লাল দানব রূপে রূপান্তর শুরু হলে অতিরিক্ত তাপে সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলো জীবনধারণের জন্য উপযোগী হয়ে উঠতে পারে। তবে এই পরিস্থিতি স্থায়ী হবে মাত্র কয়েক শ’ মিলিয়ন বছর। অন্যদিকে পৃথিবীর অবস্থা হবে ভয়াবহ।
এ সময়ে:
- পৃথিবীর পৃষ্ঠতলের তাপমাত্রা অতিরিক্ত হারে বেড়ে যাবে
- মহাসাগর ও অন্যান্য জলাশয় বাষ্পীভূত হয়ে যাবে
- বায়ুমণ্ডলের গ্যাসগুলো মহাকাশে বেরিয়ে যাবে
- জীবনধারণ একপ্রকার অসম্ভব হয়ে পড়বে
সূর্য যখন তার জ্বালানির শেষ স্তরে পৌঁছাবে, তখন এটি বাইরের স্তরগুলো বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। ফলে তৈরি হবে একটি গ্রহীয় নীহারিকা (Planetary Nebula) এবং শেষে সূর্য হয়ে যাবে একটি হিমশীতল সাদা বামন (White Dwarf)।
এই পরিবর্তনের ফলে সৌরজগত আর আগের মতো থাকবে না। পৃথিবীর মতো প্রাণবাহী গ্রহের অস্তিত্বও থাকবে না বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
মানবজাতির ভবিষ্যৎ কোথায়?
অনেক বিজ্ঞানীর মতে, এই বিপর্যয় এড়াতে ভবিষ্যতে মানুষকে অন্য নক্ষত্রপুঞ্জে নতুন বসতি গড়ে তুলতে হতে পারে—তবে তা সম্ভব হবে শুধু প্রযুক্তির আশ্চর্য উন্নয়ন ঘটলে।
সিনেমায়ও এসেছে এই ভবিষ্যৎ দৃশ্য
এই বিষয়টি নিয়ে নির্মিত হচ্ছে হলিউডের নতুন সাই-ফাই সিনেমা ‘Project Hail Mary’। অ্যান্ডি ওয়েইয়ারের ২০২১ সালের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি এ চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন রায়ান গসলিং।
গল্পে, মধ্যবয়সী একজন বিজ্ঞান শিক্ষক-আকাশচারী ‘রাইল্যান্ড গ্রেস’ হঠাৎ একটি মহাকাশযানে জেগে ওঠেন এবং আবিষ্কার করেন—সূর্যসহ অন্যান্য নক্ষত্র ধীরে ধীরে ধ্বংস হচ্ছে। মানবজাতিকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করাই তার মিশনের লক্ষ্য। ছবিটি মুক্তি পাবে ২০২৬ সালের মার্চে।
সূত্র: এনডিটিভি।
রাকিব