
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে তরুণদের মধ্যে দ্রুত বাড়ছে পাকস্থলীর ক্যানসার বা গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারের হার। তবে এই ভয়ংকর রোগের ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত রোধ করা সম্ভব মাত্র একটি সহজ চিকিৎসার মাধ্যমে—গবেষণা বলছে, হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি (H. pylori) নামক একটি সংক্রমণ এর প্রধান কারণ এবং এটি প্রতিরোধযোগ্য।
‘নেচার মেডিসিন’ জার্নালে প্রকাশিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা ২০০৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে জন্ম নিয়েছে, তাদের মধ্যে বর্তমান হারে চললে ১৫.৬ মিলিয়ন মানুষ গ্যাস্ট্রিক ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে ভবিষ্যতে। এর মধ্যে ৭৬ শতাংশ বা তিন-চতুর্থাংশ সংক্রমণের কারণ হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) আওতাধীন ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার (IARC)-এর গবেষকরা বলছেন, অ্যান্টিবায়োটিক ও প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর দিয়ে এই সংক্রমণ সহজেই নিরাময়যোগ্য। গবেষকরা GLOBOCAN 2022 ও জাতিসংঘের মৃত্যুহার প্রক্ষেপণসহ বিভিন্ন উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই ভয়ংকর চিত্র তুলে ধরেন।
বিশেষ করে এশিয়া অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, যেখানে এককভাবে ১০.৬ মিলিয়ন নতুন ক্যানসার রোগীর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরপরই রয়েছে আমেরিকা ও আফ্রিকা মহাদেশ।
গবেষকরা বলছেন, যদি ১০০ শতাংশ কার্যকর স্ক্রিনিং ও চিকিৎসা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা যায়, তবে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত গ্যাস্ট্রিক ক্যানসার প্রতিরোধ সম্ভব। এমনকি ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কার্যকারিতা থাকলেও ৬০-৬৮ শতাংশ রোগীকে বাঁচানো যাবে।
বিশেষজ্ঞরা এই গবেষণার ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী স্ক্রিন-অ্যান্ড-ট্রিট প্রোগ্রামে বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন, বিশেষ করে নিম্নআয়ের দেশগুলোতে যেখানে এ ধরনের হস্তক্ষেপ টিকাদান কর্মসূচির মতোই কার্যকর ও সাশ্রয়ী হতে পারে।
তবে গবেষণাটিতে স্বীকার করা হয়েছে যে, নিম্নআয়ের দেশগুলোতে সংক্রমণের হারের স্থায়ীত্ব ধরে নেওয়ার কারণে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তবুও, গবেষণার মূল বার্তা হলো—প্রস্তুত হোন, এগিয়ে যান—এখনই সময় হেলিকোব্যাক্টার পাইলোরি প্রতিরোধে উদ্যোগ নেওয়ার।
সূত্র: এনডিটিভি।
রাকিব